a
ফাইল ছবি
রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীর দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে এবং পুলিশও আত্মরক্ষার্থে টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে।
আজ মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
দায়িত্বরত এক পুলিশ কর্মকর্তা উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য শেষ হওয়ার পরই বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল শুরু করেন। মহাসচিব বলেছেন কোনো মিছিল হবে না। তবু তারা মিছিল শুরু করে ও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে লাঠিচার্জ করেছে। তাদের হামলায় পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন।
সকালে রাজধানীর নয়া পল্টন থেকে প্রেসক্লাব পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। সকালে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা মিছিল করছি না, সম্প্রীতি রক্ষার স্বার্থে আমরা মিছিল করছি না।’
সরকারের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার ব্যর্থতার প্রতিবাদে মিছিলের জন্য জড়ো হয়েছিলেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। এ মিছিলে অংশ নিতে সকাল থেকে রাজধানীর আশপাশের এলাকা থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ছোট ছোট মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আসে।
নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে পিকআপ ভ্যানে অস্থায়ী মঞ্চে বক্তব্য দেওয়ার সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সকাল থেকে পুলিশ বিএনপি কার্যালয় ঘিরে রেখেছে। সকাল থেকে পুলিশ আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেফতারও করেছে। অনেকের ওপর হামলা করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, মিছিল শেষ হওয়ার আগেই আটককৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। সূত্র: ইত্তেফাক
ফাইল ছবি
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নেতারা চিরাচরিত মিথ্যাচার করে আসছে। তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার করছ। বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়াকে নারী মুক্তিযোদ্ধা আখ্যায়িত করে যে বক্তব্য দিয়েছেন- তা বাংলা সাহিত্যের ‘আষাঢ়ে গল্প’র মতো।’
শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এই মন্তব্য করেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়াকে মুক্তিযোদ্ধা আখ্যা দিয়ে প্রকৃতপক্ষে একাত্তরের রণাঙ্গনে অংশ নেওয়া বীর নারীদের গৌরবগাথা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের প্রতি কটাক্ষ করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। কারণ মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তিই বিএনপির শক্তির একমাত্র উৎস।
তিনি বলেন, আমরা আশা করি- বিএনপি নেতারা এ ধরনের বানোয়াট গল্প থেকে বিরত থাকবেন। তাদের বোধোদয় হওয়া উচিত, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির মতো ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও জাতিদ্রোহী কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার কারণেই বিএনপির মতো একটি বড় দল হয়েও জনগণ দ্বারা বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা বিদেশে অর্থ পাচারের কথা বলেছেন। দেশবাসী জানে, এ অর্থ পাচারের মূল হোতা কারা? কারা হাওয়া ভবন সৃষ্টি করে হাজারও কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। দুর্নীতিতে বারবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ও অর্থ পাচারকারীদের দল বিএনপি নেতাদের মুখে অর্থ পাচারের কথা ভূতের মুখে রাম নাম ছাড়া কিছু নয়!
তিনি বলেন, বিএনপির শাসনামলে জার্মানির প্রযুক্তি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিমেন্স গ্রুপের কাছ থেকে তারেক রহমানের ঘুস গ্রহণের কথা আদালতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইর সাক্ষ্যে প্রমাণিত হয়েছে। একইসঙ্গে চীনের হার্বিন কোম্পানির কাছ থেকে তারেক রহমানের ঘুস কেলেঙ্কারির কথা সবাই জানে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও জিয়া পরিবারের দুর্নীতির চিত্র বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে। সিঙ্গাপুর থেকে খালেদা জিয়ার ছেলে কোকোর পাচার করা অর্থ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই দেশে ফেরত আনা হয়েছে। বিএনপি নেতারা মুখে একদিকে অর্থ পাচারের কথা বলে অন্যদিকে লন্ডনে অবস্থানরত তাদের নেতা সাজাপ্রাপ্ত পালতক খুনি আসামি তারেক রহমানের বিলাসী জীবনযাপনের রসদ প্রেরণ করে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক সব সূচকেই বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে। জনগণের জীবনমানের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। দেশের টাকা দেশে আছে বলেই উত্তরোত্তর বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা ও সুশাসন আছে বলেই মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
সাইফুল আলম, ঢাকা: কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-অষ্টগ্রাম-মিঠামইন) নির্বাচনী এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর হামলা, নির্যাতন, প্রাণ নাশের হুমকির প্রতিবাদে এবং বাংলাদেশে একমাত্র বিতর্কিত ব্যক্তি এ্যড. ফজলুর রহমানের প্রাথমিক মনোনয়ন বাতিলের জন্য সংবাদ সম্মেলন করেন বীরমুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহিম মোল্লা, সাবেক জেলা প্রশাসকসহ কিশোরগঞ্জ-৪ নির্বাচনী এলাকার নেতাকর্মীরা।
আজ ১১ নভেম্বর ২০২৫ সকালে রাজধানী ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে উপস্থিত নেতাকর্মীদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি বলেন, আমি বিএনপির একজন কর্মী এবং মনোনয়ন প্রত্যাশী। ছাত্রজীবন থেকেই ছাত্রদলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম। পড়াশুনো শেষ করে একটি কলেজে প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। কিছুদিন পর ১৯৮৫ ব্যাচে বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে প্রশাসন ক্যাডারে যোগদানের কারণে সরাসরি রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলাম না। চাকরীকালীন সময়ে একপর্যায়ে আমি ঠাকুরগাঁও জেলার জেলা প্রশাসক হিসেবে এবং কুড়িগ্রাম জেলার জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। কিন্তু একসময়ে দলের প্রতি আনুগত্য থাকার বিষয়ে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের নজরে আসার পর দীর্ঘদিন ওএসডি কর্মকর্তা হিসেবে চাকরীজীবন অতিবাহিত করি এবং ২০১৬ সালে অবসরে যাই। অবসরে যাওয়ার পর সরাসরি রাজনীতিতে পুনরায় সক্রিয় হই। ৫ই আগষ্টের পূর্ববর্তী সময়ে দলের নির্দেশে ঢাকার কেন্দ্রীয় প্রোগ্রাম, জেলার প্রোগ্রাম সহ ময়মনসিংহ টু কিশোরগঞ্জ রোডমার্চ, ভোট বর্জন সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করি এবং সময়ে সময়ে দলীয় নির্দেশনা পালন করে যাচ্ছি।
অপরদিকে এ্যাড. ফজলুর রহমানের পরিচিতি সম্পর্কে আপনারা অনেকে ওয়াকিবহাল থাকলেও তাঁর সম্পর্কিত সুনির্দিষ্ট ভাবে কতিপয় বিষয় আপনাদের নিকট পেশ করছি। তিনি একসময় আওয়ামীলীগের আশ্রয়ে থেকে বাকশালের আশ্রয়ে ছিলেন। পরে আবার বাকশাল থেকে আওয়ামী রাজনীতিতে ফিরে আসেন। পরবর্তী ধাপে তিনি কিশোরগঞ্জ-৪ এলাকায় ১৯৯৬ সালে টেলিভিশন মার্কায় স্বতন্ত্র নির্বাচন করেন। অন্য একটি সময়ে কিশোরগঞ্জ নির্বাচনী-২ এলাকা থেকে পিঁড়ি মার্কায় স্বতন্ত্র নির্বাচন করেন এবং ২০০১ সালে কৃষক শ্রমীক জনতা লীগ থেকে গামছা মার্কায় কিশোরগঞ্জ নির্বাচনী এলাকা ৪ থেকে নির্বাচন করেন এবং ২০০৬ সালে বিএনপিতে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ওয়ান ইলেভেনের সময় ড. ফেরদৌস আহমেদ কোরাইশী এর সাথে কিংস পার্টি তৈরীতে সম্পৃক্ত হন এবং মাইনাস টু ফর্মুলার পরিকল্পনায় যুক্ত হন।
২০০৮ সালে বিএনপিতে যোগদান করার পর একপর্যায়ে জেলা কমিটির সভাপতি হলে টেলিভিশন, গামছা ও লীগের ঐসব সহকর্মীরাই (দুয়েকজন ব্যতীত) বিএনপির উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটিতে প্রধান হয়ে উঠেন । ফলে বিএনপিতে বিগত ৩টি নির্বাচনে যেসব বিএনপির সংসদ সদস্য প্রার্থী হয়েছিলেন যেমন বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রিন্সিপাল হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া, সাবেক সচিব জহির উদ্দিন ভূঁইয়া এবং ইঞ্জি. ইমদাদুল হক সাহেবের সাথে কাজ করেছিলেন ফজলুর রহমানের কমিটিতে এদের কারোর স্থান হয় নাই। ফলে ফজলুর রহমানের দেওয়া কমিটিগুলোর পকেট কমিটি হিসেবে সারা এলাকায় পরিচিতি লাভ করে বলে জেলা নেতৃবৃন্দের বক্তব্যে জানা যায়। ফলশ্রুতিতে বিএনপি নেতাকর্মীরা আমার উপর আস্থা রেখে এখনও টিকে আছে। একারনেই আজকে ফজলুর রহমানের নাম প্রাথমিক তালিকায় আসার পর ইটনা-অষ্টগ্রাম-মিঠামইন এ অত্যাচারের মাত্রা আতঙ্কে রূপ নিয়েছে।
উল্লেখ করার মত যে, ফজলুর রহমান বিগত ১৬ বছরে এলাকায় বিএনপির কোন রাজনৈতিক প্রোগ্রামে যাননি এবং দলীয় নির্দেশনাও পালন করেননি। এমনকি ১৬ বছরে কেন্দ্রীয় অফিসে কতবার যোগাযোগ রেখেছেন তাও সংশ্লিষ্ট প্রত্যক্ষদর্শীরা জানেননা। আপনারা জানেন এ্যাড. ফজলুর রহমানের অন্তরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা স্থান পায়নি। আওয়ামীলীগ তার প্রাণ, বঙ্গবন্ধু তার ধ্যান, ৩২ নম্বর তার জ্ঞান, জয়বাংলা তার শ্লোগান। এ বিষয়ে তার টকশো, বক্তৃতা, বিবৃতি, ইউটিউব এবং এতদ্বসংক্রান্ত কার্যকলাপ শুধু ইটনা-অষ্টগ্রাম-মিঠামইন নয় সারা বাংলাদেশের মানুষ দেখেছে ও দেখছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে যখন ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে ফ্যাসিস্ট সরকার কর্তৃক বের করে দেওয়া হয়, অথবা যখন শহীদ প্রেসিডেন্ট মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম উপাধী কেড়ে নেওয়া হয় তখন ফজলুর রহমান বোধ হয় ঘুমিয়ে থাকেন।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে, এ্যাড. ফজলুর রহমানের নয়ন কুকীর্তি তুলে ধরেন আবদুর রহিম মোল্লা। তিনি আরো বলেন, এলাকার বিভিন্ন খাস জমি দখল, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির পায়তারা, বিশাল আকারের ফিসারি কার্যক্রম, মামলা বানিজ্য ও নগ্ন চাঁদাবাজি, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বড় ব্যবসায়ীগণ এর সাথে দ্বন্দ্ব, নিজের নামে বাড়ি গাড়ি, কোটি টাকার গাড়ীতে চলাচলসহ আরো অনেক কর্মকান্ডের কথা বলেন।
যেহেতু ফজলুর রহমান নিজে আওয়ামীলীগের ভক্ত, আওয়ামীলীগ তার প্রাণ, বঙ্গবন্ধু তার ধ্যান, ৩২ নম্বর তার জ্ঞান, জয়বাংলা তার শ্লোগান এবং জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক নন শেখ মুজীবের ঈশারায় দেশ স্বাধীন হয়েছে বলে বিশ্বাস করেন এবং বিএনপির নীতি আদর্শে বিশ্বাসী নয় সেহেতু এলাকাবাসী ধরে নিয়েছে যে এলাকায় সন্ত্রাস, দুর্নীতি, হত্যা, নির্যাতনের শিকার হবে বিএনপির নেতাকর্মীবৃন্দ। তাই এলাকাবাসীর প্রশ্ন ফজলুর রহমানের মত ব্যক্তিকে কিশোরগঞ্জ-৪ এর জন্য মনোনয়ন দিলে বিএনপি কর্মী ও গরীব হাওড়বাসী কি শান্তিতে থাকবে? না এলাকা ছেড়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসী হবে? কাজেই তারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নিকট এর প্রতিকার দাবী করেছে। এমতাবস্থায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের কাছে নিরাপদ কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা- অষ্টগ্রাম-মিঠামইন) হাওড় এলাকায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ বাস্তবায়নের স্বার্থে এ্যাড. ফজলুর রহমানের প্রাথমিক মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা পূর্বক স্থগিতের জন্য হাওড়বাসীর পক্ষে সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি।