a
ফাইল ছবি
আজও কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে ঢাকাসহ আশেপাশের এলাকায়। সেই সাথে কোথাও কোথাও হতে পারে শিলাবৃষ্টিও। ঢাকায় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার।
আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘গতকালের মতো আজও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে। দুপুরের পর থেকে যে কোনও সময় ঢাকার বাইরে আর ঢাকার মধ্যে সন্ধ্যার পর যে কোনও সময় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আকাশ আপাতত মেঘলা আছে। একেবারে নিশ্চিত করে ঠিক কখন ঝড় হবে তা আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা সম্ভব নয়। তবে আজ ঝড় হবে এটা নিশ্চিত।’
এদিকে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক জানান, এমনিতে ঢাকায় বাতাসের গতি ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার হলেও ঝড়ের সময় বাতাসের গতি বেড়ে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার পযন্ত যেতে পারে।
গতকাল ঢাকায় দুই দফা বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা অনেকখানি কমে এসেছে। তার আগের দুই দিন আকাশ মেঘলা থাকলেও বৃষ্টি হয়নি।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং এর আশেপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমে স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, ময়মনসিংহ, সিলেট, চট্টগ্রাম,বরিশাল ও ঢাকা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এতে দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে।
প্রবল শীতে কাঁপছে দেশের জনপদ। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে জেলার আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, ভোর ৬টায় পাঁচ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
সপ্তাহজুড়ে জেলাটিতে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশায় ৬ ডিগ্রি থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। উত্তর দিক থেকে ধেয়ে আসা হিমেল বাতাসে তাপমাত্রা কমেছে। কনকনে ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। এতে জেলার দরিদ্র, অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষগুলো ভোগান্তিতে পড়েছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) আবহাওয়া অধিদপ্তর সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার (৩ দিন) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও কোথাও তা দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আগামী ৫ দিনের আবহাওয়ার তথ্য জানানো হয়েছে, এ সময়ের শেষের দিকে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রতিকী ছবি
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ মিসরের সুয়েজ খালের বদলে একটি বিকল্প রুট ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে ইরান। দেশটির চবাহার বন্দরভিত্তিক রুটটির নাম ইন্টারন্যাশনাল নর্থ-সাউথ করিডোর বা আইএনএসটিসি।
তেহরান বলেছে, এশিয়া থেকে ইউরোপে পণ্য পরিবহণের জন্য সুয়েজ খালের তুলনায় এই রুটটির ব্যবহারে ঝুঁকি অনেক কম এবং অনেক বেশি লাভজনক।
সুয়েজ খালে বিশাল একটি জাহাজ আটকে পড়ায় গত কয়েক দিন ধরে এর উভয় প্রবেশমুখে জাহাজজট লেগেছে। এর ফলে প্রতিদিন ক্ষতি হচ্ছে শত শত কোটি ডলার। এমন পরিস্থিতিতে সুয়েজ খালের বদলে ইরানের পক্ষ থেকে বিকল্প রুট ব্যবহারের প্রস্তাব এলো।
এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সংক্ষিপ্ততম জলপথ সুয়েজ খাল। মিসরের মালিকানাধীন ১৯৩ কিলোমিটার দীর্ঘ জলপথটিতে তিনটি প্রাকৃতিক হ্রদ রয়েছে। গত সপ্তাহে (মঙ্গলবার) খালের মাঝখানে আড়াআড়িভাবে আটকে যায় জাপানি মালিকানার বিশাল মালবাহী জাহাজ এভারগিভেন। বহু চেষ্টা করেও এখন পর্যন্ত সরানো সম্ভব হয়নি জাহাজটি। দুই প্রান্তে তিনশ জাহাজের জট তৈরি হয়েছে।
আফ্রিকা ঘুরে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে বাধ্য হচ্ছে অনেক জাহাজ। এর ফলে খালটির ওপর নির্ভরশীল বিশ্ব বাণিজ্য অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় প্রতিদিন প্রায় এক কোটি ৪০ লাখ ডলারের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মিসর।
এই সংকট মোকাবেলার সহজ সমাধান হিসাবে বিশ্বের সামনে বিকল্প রুটের প্রস্তাব আনল তেহরান। ইরানি কূটনীতিক কাজেম জালালি বলেছেন, সুয়েজ খালের বিকল্প হিসাবে ভারত, রাশিয়া ও ইরানের মধ্যকার সাত হাজার ২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি নৌরুট সুয়েজ খালের বিকল্প হয়ে উঠতে পারে।
রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুটনিক জানিয়েছে, এ ধরনের বিকল্প নৌরুটের প্রতি আগ্রহ রয়েছে তুরস্কের। দেশটির সঙ্গে ইতোমধ্যে বিকল্প কৌশলগত বাণিজ্যিক জোট গঠনে অনেকদূর এগিয়ে গেছে চীন, রাশিয়া, ইরান। এ পরিস্থিতিতে ইরান স্বাভাবিকভাবেই বিকল্প উৎস হিসাবে চবাহার বন্দরের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছে।
শনিবার ইরানের প্রেস টিভিকে এক সাক্ষাৎকারে কাজেম জালালি বলেন, আইএনএসটিসি ব্যবহার করা বরং কম ঝুঁকিপূর্ণ। সুয়েজ খালের চেয়ে বিকল্প লাভজনক হয়ে উঠতে পারে এ নতুন রুট।
এদিন এক টুইটার বার্তায় মস্কোয় নিযুক্ত এই ইরানি কূটনীতিক আরও বলেন, এনএসটিসির মধ্যদিয়ে ভারত থেকে ইউরোপে পণ্য পরিবহণে সময় লাগবে মাত্র ২০ দিন এবং খরচ কমবে শতকরা অন্তত ৩০ ভাগ। বর্তমানে সুয়েজ খাল দিয়ে পণ্য পরিবহণে ৪০ দিন সময় লাগে।
ফলে খরচও বেশি। ইরানের পাশাপাশি ভারত ও রাশিয়ার পক্ষ থেকে নর্থ-সাউথ ট্রান্সপোর্ট করিডোর বা এনএসটিসি রুটের পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে। ২০০০ সালে দীর্ঘ বহুমুখী এই রুটের প্রস্তাব করা হয়।
পরবর্তীতে মধ্য এশিয়ার ১০টি দেশ এই পরিকল্পনায় যুক্ত হয়। ইরান সড়ক ও রেলপথ নির্মাণের মাধ্যমে ভারত ও রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে ওঠার পরিকল্পনা বিবেচনা করছে এবং তা সম্ভব হলে ভারত থেকে ইউরোপে মালামাল পরিবহণে খরচ কমবে।
তুরস্ক রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে চীনের সহায়তায় যৌথ বাণিজ্যি করিডোরে আগ্রহী। তাহলে ইউরোপের দশগুলোর তুরস্কের ওপর নির্ভরশীলতা আরও বাড়বে।
যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্বের একচেটিয়া বাণিজ্যিক শক্তি খর্ব করার ক্ষেত্রে বিকল্প চবাহার বন্দর ব্যবহারকে এসব দেশ বড় এক উৎস হিসাবে বিবেচনা করছে। পাকিস্তানও চবাহার বন্দর যাতে ব্যবহার করে সেজন্য ইরানের তরফ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।
ইরান চলতি সপ্তাহেই চীনের সঙ্গে ২৫ বছরের একটি কৌশলগত সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। বছর পাঁচেক ধরে আলোচনার পর শনিবার তেহরানে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। চীন ও ইরানের মধ্যে এ ধরনের চুক্তিতে প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, বাণিজ্য, আর্থসামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন দিক অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এ চুক্তির অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে বর্তমানে দুদেশের বাণিজ্য আগামী এক দশকে বৃদ্ধি করে বছরে তা ৬ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত করা। তেল, গ্যাস, পেট্রকেমিক্যাল, রিনিউবল ও নিউক্লিয়ার জ্বালানি ছাড়াও অবকাঠামো খাতে ইরানে ব্যাপক বিনিয়োগ করবে চীন। এ চুক্তির ফলে দুটি দেশ বেইজিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনফ্রাকচার স্কিমে আরও ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত হবে।
ট্রিলিয়ন ডলারের এ স্কিমের লক্ষ্য হচ্ছে চীনের সঙ্গে ইউরোপ ও আফিকার সড়ক ও জলপথে যোগযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। এর ফলে ডজনেরও বেশি দেশ বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হবে। সূত্র:যুগান্তর