a কুমিল্লায় বাস-প্রাইভেটকার সংঘর্ষে প্রাণ হারালেন ৩ জন
ঢাকা শুক্রবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫
https://www.msprotidin.com website logo

কুমিল্লায় বাস-প্রাইভেটকার সংঘর্ষে প্রাণ হারালেন ৩ জন


এমএস.প্রতিদিন ডেস্ক:
শুক্রবার, ১৮ জুন, ২০২১, ১২:২২
কুমিল্লায় বাস-প্রাইভেটকার সংঘর্ষে প্রাণ হারালেন ৩ জন

সংগৃহীত ছবি

কুমিল্লা জেলা সদর দক্ষিণে বাস ও প্রাইভেটকারের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার (১৮ জুন) ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সুয়াগাজী জোরকানন ইউটার্নে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।

কুমিল্লার ময়নামতি হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস ঢাকা যাচ্ছিল। শুক্রবার (১৮ জুন) ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সুয়াগাজী জোরকানন ইউটার্নে পৌঁছালে প্রাইভেটকারের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় ঘটনাস্থলে দুইজন নিহত হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর একজনের মৃত্যু হয়। নিহতরা সবাই প্রাইভেটকারের যাত্রী ছিলেন।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

দেশজুড়ে সপ্তাহব্যাপী লকডাউনের ঘোষণার পর বাস-ট্রেন-লঞ্চে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ



রবিবার, ০৪ এপ্রিল, ২০২১, ০৮:২০
বাস-ট্রেন-লঞ্চে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ

লঞ্চে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ

করোনায় চাকরি গিয়েছিল পোশাককর্মী হামিদা খাতুনের। তবু তিনি ঢাকা ছাড়েননি। সেলাইয়ের কাজ করেই সংসার চালিয়েছেন। হামিদার স্বামী নয়ন হোসেনের পোশাক কারখানার চাকরি অবশ্য এখনো আছে। কিন্তু স্বামীর সামান্য আয়ে তো ঢাকায় সংসার চালানো কঠিন। এবারের লকডাউনের ঘোষণায় স্বামীকে রেখেই সন্তান নিয়ে গ্রামে চলে যাচ্ছেন হামিদা।

দেশজুড়ে সপ্তাহব্যাপী লকডাউনের ঘোষণার পর হামিদার মতো অনেকেই ঢাকা ছাড়ছেন। সকাল থেকে রাজধানীর দুটি আন্তজেলা বাস টার্মিনাল ও কমলাপুর রেলস্টেশনে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষের ভিড় দেখা গেছে। টার্মিনাল কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতিবছর ঈদের ছুটিতে যাত্রীদের যেমন চাপ থাকে, আজও তেমনই। সবাইকে টিকিট দেওয়া যাচ্ছে না। অনেকে টার্মিনালে এসে ফিরে যাচ্ছেন।

এদিকে সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ঘরমুখী প্রচুর মানুষ যানবাহনের জন্য করছিলেন। গাটরি-বোঁচকা, ব্যাগ, লাগেজ প্রভৃতি নিয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। সড়কে দূরপাল্লার বাহন, নগরীর গণপরিবহন, মাঝারি ও ছোট আকারের বাহনের চাপ ছিল। এ সময় যানজটে বসে অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীদের।

হামিদার সঙ্গে আজ রোববার দুপুরে কথা হয় গাবতলী বাস টার্মিনালে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘লকডাউন যে কত দিন থাকবে, জানি না। ঢাকায় সংসার চালাতে অনেক খরচ। তাই মাদারীপুরে গ্রামের বাড়ি চলে যাচ্ছি।’

গাবতলী বাস টার্মিনালে সকালে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রীর চাপে টার্মিনালগুলোতে দূরপাল্লার বাসের টিকিটে টান পড়েছে। একাধিক বাসের কাউন্টার ঘুরেও কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যের টিকিট পাচ্ছিলেন না অনেকে। তাৎক্ষণিক মুঠোফোনে টিকিটের সংকটের বিষয়টি জানিয়ে দিচ্ছিলেন ফোনের অন্য প্রান্তে থাকা স্বজন কিংবা সঙ্গীকে। কী করবেন, কীভাবে বাড়ি ফিরবেন, সেই উপায় কিংবা পরামর্শও জানতে চাচ্ছিলেন কেউ কেউ।

গত শুক্রবার মেডিকেলে ভর্তির পরীক্ষা দেন শিক্ষার্থী মাহমুদ হাসান। ভেবেছিলেন ঢাকায় থেকেই অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেবেন। কিন্তু লকডাউনের ঘোষণায় তিনি গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ীর পাংশায় চলে যাচ্ছেন এখন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘লকডাউনের কারণে সময়তো আর পরীক্ষা হবে না। এ জন্য বাড়ি চলে যাচ্ছি। সবকিছু স্বাভাবিক হলে আবার ঢাকায় আসব। কিন্তু এখন তো সময়মতো টিকিট পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়েছে।’

গাবতলী বাস টার্মিনালের ইজারাদার রাফি ট্রেডার্সের প্রতিনিধি আবদুল আহাদ বলেন, শনিবার বিকেল থেকেই যাত্রীর চাপ বাড়তে থাকে। টিকিট না পেয়ে রাতে প্রায় দেড় হাজার যাত্রী টার্মিনালেই রাতযাপন করেন। রোববার সকাল থেকে যাত্রীর চাপ আরও বেড়েছে বলে জানান তিনি।

লকডাউনের ঘোষণায় গাবতলী বাস টার্মিনালে বাড়ি ফেরা মানুষের ভিড়। আজ বিকেলে

ছবি: হাসান রাজা

এদিকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালেও সকাল থেকেই দূরপাল্লার বাসগুলোতে যাত্রীর চাপ ছিল। কাউন্টারে এসে অনেকেই টিকিট না পেয়ে বিভিন্ন পিকআপ ও ট্রাকে করে বাড়ি ফিরেছেন। যাত্রাবাড়ীতে এমনই একটি পিকআপে প্রায় ১৫ জন কুমিল্লার উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। প্রত্যেকের কাছ থেকে ১৫০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছিল। পিকআপের চালক মো. রাসেল প্রথম আলোকে বলেন, ‘মালামাল পৌঁছে দিতে ঢাকায় আসছি। এখন খালি গাড়ি নিয়ে কুমিল্লা ফিরতে হবে। এর জন্য যাত্রী নিয়ে যাচ্ছি।’

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি বলছে, দূরপাল্লার বাসগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা বেশি। তবে ঢাকা মহানগরের অভ্যন্তরের চলাচল করা বাসগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানা যাচ্ছে না। ঢাকার বেশ কয়েকটি স্থানে গতকাল সকালে অফিসগামী যাত্রীরা বাসে উঠতে না পেরে ক্ষোভে কয়েকটি বাস ভাঙচুরও করেন।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, লকডাউনের খবর শুনে সকাল থেকে টার্মিনালগুলোতে যাত্রীর চাপ বেড়েছে। তবে ৫০ শতাংশ আসন ফাঁকা রাখতে গিয়ে সবাইকে টিকিট দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। দৈনিক প্রায় ১০ হাজার বাস রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যায়। স্বাস্থ্যবিধি কতটুকু মানা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দূরপাল্লার বাসগুলোতে আসন ফাঁকা রাখা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার অনেকটাই মানা হচ্ছে। তবে ঢাকা নগরীর ভেতরে বাসগুলোতে এটি মানা যাচ্ছে না। মহানগরীর বাসগুলো একটু পরপরই থামে। তা ছাড়া যাত্রীরাও খুব একটা সচেতন নন।

ট্রেনের চাপ বিকেলে

এদিকে কমলাপুর রেলস্টেশনে সকাল থেকেই ঘরমুখী যাত্রীদের ভিড় ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই ভিড় কিছুটা কমে আসে। রেলওয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, বিকেলের পর ভিড়টা আবার বেড়েছে।

লকডাউনের কারণে অনেকেই ছেড়ে যাচ্ছেন রাজধানী। কমলাপুর রেলস্টেশনে মানুষের বাড়তি ভিড় নিয়ন্ত্রণে নেই দৃশ্যমান পদক্ষেপ। বাড়ছে করোনা ঝুঁকি

আজ দুপুরে কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, টার্মিনালের কাউন্টারে টিকিট কাটার জন্য শ খানেক মানুষের দীর্ঘ লাইন। স্টেশনে মাইকিং করে স্বাস্থ্যবিধি মানতে সচেতন করা হচ্ছে। প্ল্যাটফর্মে ঢোকার আগেই প্রত্যেকের টিকিট চেক করা হচ্ছে। তবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা শরীরের তাপমাত্রা মাপার কোনো ব্যবস্থা নেই। প্ল্যাটফর্মগুলোতে ঢুকে যাত্রীরা অপেক্ষা করছেন। ট্রেন এলেই তাঁরা উঠে পড়ছেন। তবে ট্রেন ছাড়ার আগে জীবাণুনাশক ছিটানোর কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।

দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বেলা তিনটা ২০ মিনিট পর্যন্ত পাঁচটি ট্রেন স্টেশন ছেড়ে যায়। রাজশাহী কমিউটার, বনলতা এক্সপ্রেস, কালিয়াকৈর কমিউটার, কালনী এক্সপ্রেস ও উপকূল এক্সপ্রেস—পাঁচটি ট্রেনের একটিও স্টেশন ছাড়ার আগে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়নি। ট্রেনের বগিগুলোতে আসন ফাঁকা রাখার কথা। তাপানুকূল (এসি) বগিতে সেই চিত্র দেখা গেছে। তবে শোভন চেয়ার ও শোভন বগিগুলোতে আসন ফাঁকা দেখা যায়নি। বনলতা এক্সপ্রেস, কালনী এক্সপ্রেসের অন্তত সাতটি বগির প্রায় প্রতিটি আসনই পূর্ণ ছিল।

চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী বনলতা এক্সপ্রেসের যাত্রী রবিউল ইসলাম। তিনি তাঁর পরিবারের চার সদস্যকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যাচ্ছেন। একটি বেসরকারি আইটি ফার্মের এই কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, স্টেশনে ঢোকার সময় স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। ট্রেনের ভেতরেও সব কামরায় লোকজন স্বাস্থ্যবিধি মেনে আসন ফাঁকা রেখে বসছেন না।

কমলাপুর স্টেশন কর্তৃপক্ষ অবশ্য বলছে, যাত্রা শুরুর আগে প্রতিটি ট্রেনের বগিগুলোকে জীবাণুনাশক দিয়ে স্প্রে করা হয়। এ ছাড়া স্টেশনে তিন ফুট দূরত্বে দাঁড়ানোর জন্য দাগ দেওয়া হয়েছে।

কমলাপুর স্টেশনের ব্যবস্থাপক মো. মাসুদ সারোয়ার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, স্টেশনে বিকেলে এসে চাপটা আরও বেড়েছে। অফিস ছুটি হওয়ার পর মানুষ বাড়িতে যেতে চাচ্ছে। স্টেশনে আজ সারা দিনে ৭২টি ট্রেন ছেড়ে যাবে এবং আসবে। যেসব ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে, তার অধিকাংশই যাত্রীতে ঠাসা।


কয়েকটি ট্রেনে যাত্রী পূর্ণ থাকা ও স্বাস্থ্যবিধি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাসুদ সারোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ২৮ মার্চ সরকারি নির্দেশনা ঘোষণা করার আগেই এসব টিকিট বিক্রি হয়েছে। তাই অনেকে পাশাপাশি আসনে বসে ভ্রমণ করছেন। তবে সরকারি নির্দেশনা আসার পর থেকে পাশাপাশি আসনের টিকিট বন্ধ আছে। তাঁর দাবি, কমলাপুর স্টেশনে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য হ্যান্ড স্যানিটইজার, সাবানপানির ব্যবস্থা রাখা আছে।

আজ রোববার বেলা দুইটার পর থেকে ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনালে লঞ্চযাত্রীদের চাপ বেড়েছে। দুপুরে ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, প্রবেশপথে গাদাগাদি করে যাত্রীরা টার্মিনালে প্রবেশ করছেন। লঞ্চের ডেকে যাত্রীরা গাদাগাদি-ঠাসাঠাসি করে বসে আছেন। লঞ্চের বেশির ভাগ যাত্রী মাস্ক পরা অবস্থায় ছিলেন না। ঢাকায় ফেরা লঞ্চগুলো থেকে যাত্রীরা স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই নামছিলেন।

ঢাকা নদীবন্দরের নৌযান পরিদর্শক দিনেশ কুমার সাহা বলেন, রোববার বেলা দুইটা পর্যন্ত সদরঘাট টার্মিনাল থেকে ২৯টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে; আর সদরঘাটে লঞ্চ এসেছে ৬৭টি। ঈদ ছাড়া এ সময়ে টার্মিনালে যাত্রীদের এত ভিড় দেখা যায় না।

কাউখালীগামী বন্ধন-৫ লঞ্চের যাত্রী জুবায়ের হাসান বলেন, ‘গাদাগাদি করে যেভাবে লঞ্চের যাত্রীরা যাতায়াত করছেন, এতে করোনায় সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়। আমরা যাত্রীরা সচেতন হলেই করোনার সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব। কিন্তু লঞ্চের বেশির ভাগ যাত্রী ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না।’

অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাপ) সংস্থার ঢাকা নদীবন্দরের আহ্বায়ক মামুন আল রশীদ বলেন, যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় লঞ্চে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই লঞ্চে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, লঞ্চের ভেতর গাদাগাদি করে না বসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসার জন্য যাত্রীদের সতর্ক করা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ রোধে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চমালিকদের যাত্রী পরিবহনের জন্য সতর্ক করা হয়েছে। লঞ্চঘাটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচলের ব্যাপারে আমরা সার্বক্ষণিক চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

বিশাল প্রতারণার ফাঁদে "মা এগ্রো ফার্ম”র উদ্যোক্তা গোলাম মাওলা কায়েস


সাইফুল আলম, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫, ১০:৩৫
বিশাল প্রতারণার ফাঁদে মা এগ্রো ফার্ম এর উদ্যোক্তা গোলাম মাওলা কায়েস

ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন

 

সাইফুল আলম, ঢাকা:   প্রতারক চক্রের ফাঁদে পরে ক্ষতিগ্রস্থ মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার “মা এগ্রো ফার্ম” এর উদ্যোক্তা এবং কোলাপাড়া ইউনিয়ন বিএনপি'র সাধারন সম্পাদক জনাব মোঃ গোলাম মাওলা কায়েস।

আজ ১১ নভেম্বর ২০২৫ সকালে রাজধানী ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে গোলাম মাওলা কায়েস বলেন, আমি “মা এগ্রো ফার্ম” এর উদ্যোক্তা মোঃ গোলাম মাওলা কায়েস। পিতাঃ মৃত আঃ খালেক বেপারী, মাতাঃ মজনু বেগম । স্থায়ী ঠিকানাঃ গ্রাম- দক্ষিন কোলাপাড়া, ডাকঘর- কোলাপাড়া, থানা- শ্রীনগর, জেলা- মুন্সীগঞ্জ ৷ জাতীয় পরিচয়পত্র নং- ৪৬০ ৬৩১ ১১০৫৪।

আমি বিগত ১৬-০৮-২০২৫ইং তারিখে সম্পাদিত একটি ব্যবসায়ী চুক্তিপত্র সহি সম্পাদন করি । যাহার প্রথম পক্ষ মোঃ গোলাম মাওলা কায়েস আমি নিজেই । দ্বিতীয় পক্ষ ১) মোঃ সাবিত ইসলাম সামি পিতাঃ মোঃ নুরুল ইসলাম, মাতাঃ ফেরদৌসী বেগম, স্থায়ী ঠিকানাঃ গ্রীন কর্নার, গ্রীন রোড, ডাকঘরঃ নিউমার্কেট-১২০৫, থানা ধানমন্ডি, জেলা ঢাকা । জাতীয় পরিচয় পত্র নংঃ ৮৬৭৩৫১১৭২৭। ২) মোঃ আক্তার হোসেন, পিতাঃ সুরুজ মিয়া, মাতাঃ ফজিলতুন নেসা, স্থায়ী ঠিকানাঃ ইব্রাহীমপুর, ডাকঘরঃ ক্যান্টনমেন্ট, থানাঃ কাফরুল, জেলাঃ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন । জাতীয় পরিচয়পত্র নংঃ ৬৪০৪৮৫৭৮৩৮।

উপরোক্ত দুইজন দ্বিতীয় পক্ষ হলেও উক্ত চুক্তিপত্রের সমস্ত কার্যক্রম সম্পাদনের সম্পূর্ন দ্বায়ভার গ্রহন করেন প্রতারক চক্রের প্রধান ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কর্মরত আছেন পরিচয় দানকারী এস.এম সামসুল আলম (শওকত) ওরফে শেখ শওকত আলী, বৈজ্ঞানিক সহকারী-১, খাদ্য ও বিকিরন জীব বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট এ.ই.আর.ই সাভার, বাংলাদেশ পরমানু শক্তি কমিশন (আইডি কার্ড অনুযায়ী) ভুয়া আইডি কাড নং ৬১০৩১০২৩১৩৪১১৩০০২৪৪। মোবাইল নংঃ ০১৭৫১-৩৭৭৩৫০, ০১৭১১-৭৫৩৬৩০, ০১৭১১-৫৭৩২১৬, ০১৭১১-২৭৬৯৩৫ প্রতারক শওকত উপরে উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন বলে আমাকে মিথ্যা বয়ান দিলেও খোজ নিয়ে জানতে পারি, এই নামে অত্র প্রতিষ্ঠানে উক্ত এস.এম সামসুল আলম (শওকত) চাকুরী করেন না বা কখনো করেন নি। পরিচয় পত্রটি সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট (ভুয়া আইডি কার্ড এর ফটোকপি আমার নিকট রয়েছে) ।

উক্ত প্রতারক এস.এম সামসুল আলম (শওকত) উল্লেখিত চুক্তিপত্রের ৩নং দফায় আমাকে ২৫ (পঁচিশ) কোটি টাকা ব্যাংক লোন করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১০০ (একশো) টাকার তিনটি স্ট্যাম্প এ চুক্তিবদ্ধ হন। বিনিময়ে উক্ত প্রতারক আমার নিকট হইতে ১০% হারে উক্ত ২৫ (পঁচিশ) কোটি টাকার লোন হইতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ২,৫০,০০,০০০/- (দুই কোটি পঞ্চাশ লক্ষ) টাকা গ্রহন করার প্রতিশ্রুতি গ্রহন করেন।

গ্যারান্টি হিসেবে উক্ত প্রতারক আমার নিকট থেকে উত্তরা ব্যাংক এর ২,৫০,০০,০০০/- (দুই কোটি পঞ্চাশ লক্ষ) টাকার একটি চেক গ্রহন করেন। যাহার চেক নম্বর- ৪৩৪৪০৪৯। পরবর্তীতে প্রতারক শওকত আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে উক্ত লোন পাশ করানোর জন্য নগদ টাকার প্রয়োজন দেখিয়ে আমার নিকট হইতে নগদ ৪০,০০,০০০/- (চল্লিশ লক্ষ) টাকা গ্রহন । কিন্তু ৪০,০০,০০০/- (চল্লিশ লক্ষ) টাকা গ্রহন করার পর প্রতারক শওকত আমাকে লোন করিয়ে দিবে বলে তালবাহানা করতে থাকেন এবং বার বার সময় দিয়ে ঘুরাতে থাকে। পরবর্তীতে আমার সাথে ২য় পক্ষগন ও শওকত এর মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়।

পরবর্তীতে ২য় পক্ষগন ও শওকত আমাকে ঢাকা রিজেন্সী হোটেলে যেতে বলে সমস্যা সমাধানের করার জন্য রাত ৯:৩০ মিনিটে। আমি আমার ১জন কর্মচারী নাম (আবুল কালাম) ও পরিচিত ছোট ভাই (নাসিম) সহ রিজেন্সী হোটেলের সামনে গেলেই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী র‍্যাব-০১ এর সদস্যদের দ্বারা আমাদের ৩ (তিন) জনকে সেখান থেকে ধরে নিয়ে যায় (ঘটনার তারিখ ০৭-০৯-২০২৫)। তৃতীয় দিন আনুমানিক দুপুর ১২:০০ (বারো) টার দিকে আমাদেরকে খিলক্ষেত থানায় হস্তান্তর করে এবং অস্ত্র মামলায় গ্রেফতার দেখায়। খিলক্ষেত থানার মামলা নং-০৯ (৯) ২০২৫। বিষয়টি সম্পূর্ন পূর্ব পরিকল্পিত ও র‍্যাব-০১ এর যোগসাজসে ২য় পক্ষ ও শওকত এর সাজানো নাটক। পরবর্তীতে আমি খোজ নিয়ে জানতে পারি, প্রতারক শওকত চুক্তিপত্রে যে বাসা'র ঠিকানা ব্যবহার করেছে তা সম্পূর্ন ভুয়া, মিথ্যা ও বানোয়াট ।

পরবর্তীতে আমি জামিনে কারামুক্তির পর নির্বাচন কমিশন থেকে প্রতারক শওকতের প্রকৃত নাম ও ঠিকানা সংগ্রহ করি । উক্ত প্রতারকের আসল নাম এস.এম সামসুল আলম, জাতীয় পরিচয়পত্র নং- ৫৫১২৩৩০৭৮৭, পিতাঃ সোরাব আলী মোল্লা, মাতাঃ হামিদা বেগম, স্ত্রীর নামঃ মমতাজ, ঠিকানাঃ গ্রাম শিবান্দপুর, পোঃ কালুভানি, ইউনিয়নঃ হাবাসপুর, উপজেলাঃ পাংশা, জেলাঃ রাজবাড়ী।

আমাদের সাংবাদিক সম্মেলন করার একমাত্র কারন র‍্যাব-১ এবং প্রকৃত অপরাধীদের মুখোশ উম্মোচন করা। যাহাতে বাংলাদেশের অন্যকোন নিরীহ নাগরিক হয়রানীর শিকার না হয়। দেশবাসী র‍্যাব-১ এর অসংখ্য অপকর্মের কথা ইতিপূর্বে পত্রিকায় পরেছেন ও টিভিতে দেখেছেন। দেশবাসীর ধারনা হয়তো র‍্যাব- ১ তার চরিত্র বদল করেছেন এবং জনগনের সেবামূলক কাজে নিয়োজিত আছে। কিন্তু দেশ যখন গনতন্ত্রের সঠিক পথে অগ্রসর হচ্ছে সেই সময়ে টাকার বিনিময়ে আমাদের মতো সাধারন বাংলাদেশের নিরস্ত্র নাগরিকদের নিজেরা অস্ত্র দিয়ে মিথ্যা অস্ত্র মামলায় গ্রেফতার দেখানো প্রমান করে র‍্যাব-১ তার চরিত্র বদলায়নি। র‍্যাব তার পূর্বের ফ্যাসিস্ট চরিত্রেই আছে।

আমাদের সমাজে যে পরিমাণ মানসম্মান খুন্ন করা হয়েছে, আর্থিক ক্ষতি করা হয়েছে ও সমাজে আমাদেরকে সন্ত্রাসী হিসেবে প্রমান করার অপচেষ্টা করা হয়েছে, তার বিচার দেশবাসী, আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা ও বিচার বিভাগের নিকট চাই। আর কত নিরীহ সাধারন মানুষ র‍্যাব-১ এর দ্বারা সর্বোপরি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা মিথ্যা মামলার শিকার হবে জানতে চাই এবং এর ন্যায়বিচার চাই।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হলেই যে কোন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিককে ঘুষ গ্রহনের মাধ্যমে জীবন অতিষ্ট করে তোলা যায় এবং তারা মনে করে তাদের সকল অপকর্ম বৈধ, এর প্রতিকার চাই। এ ব্যাপারে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করার উদ্যোগ গ্রহন করেছি।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম
Share on Facebook

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন এর সর্বশেষ

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন এর জনপ্রিয়

সর্বশেষ - সারাদেশ