a
ফাইল ছবি
জামালপুর সরিষাবাড়ীতে ষষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় প্রতিপক্ষের হামলায় ভোলা শেখ নামে একজন নিহত এবং রুবেল নামে এক যুবক নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা যায়। শনিবার দুপুরে উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের চর নলসন্ধ্যা গ্রামে এ ধরণের সহিংস ঘটনা ঘটে।
নিহত ভোলা শেখ (৬০) পার্শ্ববর্তী সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার নিশ্চিতপুর ইউনিয়নের কাজল গ্রামের মৃত হারুনর রশিদের ছেলে।
পুলিশের তথ্যমতে, আগামী ৩১ জানুয়ারি ষষ্ঠ ধাপে সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পিংনা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বর প্রার্থী নুরুল ইসলাম (ফুটবল) ও প্রতিদ্বন্দ্বী সুজাত আলী সুরুর (মোরগ) সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। শনিবার সকালে নলসন্ধ্যা গ্রামে নুরুল ইসলামের সমর্থকরা ভোট চাইতে গেলে সুজাত আলী সুরুর লোকজন রুবেল ও হালিম নামে দুই ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে যায়।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নুরুল ইসলামের লোকজন তাদের উদ্ধার করতে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এতে প্রতিপক্ষের হামলায় মেম্বার প্রার্থী নুরুল ইসলামের সমর্থক ভোলা শেখ ঘটনাস্থলেই মারা যান। এসময় আহত হয় হালিম, টুটুল, আব্দুল হাই, শুক্কুরসহ কমপক্ষে ১০ জন।
অপরদিকে, রুবেল (২৬) নামে একজন এখনো নিখোঁজ রয়েছে বলে দাবি করছে তার পরিবার। নিখোঁজ রুবেল পিংনা ইউনিয়নের নলসন্ধ্যা গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে।
এ ব্যাপারে তারাকান্দি তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (পরিদর্শক) আব্দুল লতিফ জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হচ্ছে। এসব ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ইতিমধ্যে ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ফাইল ফটো: করোনাভাইরাস
গত ১ দিনে করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ২৬ জন। এ নিয়ে করোনাভাইরাসে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৮ হাজার ৫৭১ জন।
এদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে শনাক্ত হয়েছে ১৭৭৩ জন। এ নিয়ে দেশে মোট করোনাভাইরাসে শনাক্তের সংখ্যা ৫ লাখ ৫৯ হাজার ১৬৮ জন।
আজ সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে আরও জানানো হয়, গত ১ দিনে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১৪৩২ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ৫ লাখ ১৩ হাজার ১২৭ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
উল্লেখ্য, আজ গত আড়াই মাসের মধ্যে এই শনাক্তের রেকর্ড সর্বাধিক।
ছবি সংগৃহীত: প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস
অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা তাঁর সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’
তিনি বলেন, ‘আমি আমাদের জনগণকে আশ্বস্ত করেছি যে, প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন হলে আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব অনুযায়ী আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করব।’
শুক্রবার থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলোর আঞ্চলিক সহযোগিতা জোটের (বিমসটেক) শীর্ষ সম্মেলনে ভাষণদানকালে প্রধান উপদেষ্টা একথা বলেন।
বাংলাদেশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, ‘১৯৭১ সালে লাখ লাখ সাধারণ নারী-পুরুষ, শিশু ও যুবক একটি নৃশংস সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নয় মাসব্যাপী গণহত্যায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছিল।’
বাংলাদেশের সরকার প্রধান বলেন, ‘আমাদের জনগণ একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়সঙ্গত ও স্বাধীন সমাজের স্বপ্ন দেখেছিল যেখানে প্রতিটি সাধারণ মানুষ তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারে।’
ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে, গত পনেরো বছরে আমাদের জনগণ বিশেষ করে যুবসমাজ, ক্রমাগত তাদের অধিকার ও স্বাধীনতা সংকুচিত হতে দেখেছে। তারা রাষ্ট্রের প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের অবক্ষয় ও নাগরিক অধিকারের অবমাননা প্রত্যক্ষ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘সাধারণ জনগণ একটি নৃশংস স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটিয়েছে। কিন্তু স্বৈরাচারী শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে প্রায় ২ হাজার নিরীহ মানুষ, যাদের বেশিরভাগই তরুণ এবং ১১৮ জন শিশু প্রাণ হারিয়েছে।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ তাঁর ইতিহাসে এক নবজাগরণ প্রত্যক্ষ করেছে। যেসব ছাত্রনেতা এই গণজাগরণে নেতৃত্ব দিয়ে শেখ হাসিনার দুর্নীতিগ্রস্ত ও স্বৈরাচারী শাসন থেকে দেশকে মুক্ত করেছে, তারা তাকে অনুরোধ করেছিল এই সংকটময় মুহূর্তে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিতে।’
তিনি বলেন, ‘আমি আমাদের জনগণের স্বার্থে এই দায়িত্ব গ্রহণে সম্মত হয়েছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে তাঁরা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও টেকসই প্রবৃদ্ধি পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য বলিষ্ঠ ও সুদূরপ্রসারী সংস্কার গ্রহণ করবে।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা সুশাসন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই এবং অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা আনার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই বিষয়গুলোই আমাদের পরিকল্পিত সংস্কারের মূল লক্ষ্য।’
তিনি বলেন, ‘সরকার ইতিমধ্যে বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও সংবিধান সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠন করেছে, যাতে জনগণের মালিকানা, জবাবদিহিতা ও কল্যাণ নিশ্চিত করা যায়।’
প্রধান উপদেষ্টা জানান, ‘এই কমিশনগুলো ইতিমধ্যে তাদের সুপারিশ জমা দিয়েছে, যা বর্তমানে সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’ গঠন করেছি। আমি নিজেই যার নেতৃত্ব দিচ্ছি এবং এতে ছয়টি কমিশনের প্রধানরা রয়েছেন। এই কমিশনগুলো যে সুপারিশগুলো জমা দিয়েছে, তা পর্যালোচনা এবং গ্রহণ করার জন্য এ কমিশন গঠন করা হয়েছে।’
সরকার প্রধান আরও জানান, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্প্রতি আরো চারটি কমিশন গঠন করেছে, গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য, শ্রম এবং নারী অধিকার সংক্রান্ত নীতিগত সুপারিশ দেওয়ার লক্ষ্যে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যখন বাংলাদেশকে পুনর্গঠন করছি, তখন আমরা দেশের প্রতিটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতে অবিচলভাবে কাজ চালিয়ে যাব, তারা নারী হোক কিংবা জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু হোক।’
অনুষ্ঠানে থাই প্রধানমন্ত্রী এবং সম্মেলনের চেয়ারপার্সন পেতংতার্ন শিনাওয়াত্রা, বিমসটেক মহাসচিব রাষ্ট্রদূত ইন্দ্র মনি পান্ডে এবং বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। -বাসস