a
ফাইল ছবি: শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ
নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। আজ রবিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন তিনি।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘বর্তমান যে শিক্ষাক্রম সেটা খুব বাস্তবায়নযোগ্য নয়। বিশেষ করে মূল্যায়ন পদ্ধতির দিক থেকে। যতদূর পারি আগের শিক্ষাক্রমে ফিরে যাব। তবে এমনভাবে এটি করা হবে, যাতে যেসব শিক্ষার্থী নতুন শিক্ষাক্রমে আছে, তাদের কোনো অস্বস্তি না হয়। এ জন্য পরিমার্জন করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এমনভাবে ফিরে যাব না যে বর্তমানটার সঙ্গে মিল থাকবে না। আগেরটায় ফিরে গেলে তারা যা পড়ে ফেলেছে তার সঙ্গে মিল রাখতে হবে, সেজন্য অতিদ্রুত কিছু কাজ করতে হবে।’
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে এসময় ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘এখানেই এতদিন ধরে আমাদের বড় ধরনের অবমূল্যায়ন হয়েছে। অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে পদগুলো শূন্য। এটা পূরণ করা খুবই চ্যালেঞ্জিং। তবে আমরা চাইব বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অতিদ্রুত পূরণ করতে।’
‘ছাত্র ও শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ থাকবে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেন ভালো পরিবেশ থাকে। বিশৃঙ্খলা না করে শৃঙ্খলা থাকে। নিয়ম মাফিক যেন হয়, দখলদারিত্ব যেন না হয়। সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরিতে সবার সহযোগিতা দরকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কমিটিগুলোতে দখলদারিত্ব না হয়। এক দল সরিয়ে অন্য দল আসবে, সেটা চাই না। কী করা যায়, সেটা চিন্তা করব।'
তিনি বলেন, ‘শুধু অবকাঠামো উন্নয়ন দিয়ে নয়, অর্থনীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে যদি মানবসম্পদের উন্নয়ন না হয়, তাহলে কোনো দেশ উন্নত হয় না। সেক্ষেত্রে অর্থনীতি ও শিক্ষার মধ্যে যোগসূত্র আনার চেষ্টা করব।’ সূত্র: বিডি প্রতিদিন
ফাইল ছবি
২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোর প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তির ফল প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত ফলাফলে ভর্তিচ্ছুদের মাঝে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, অনেকে কম জিপিএ নিয়ে পছন্দের কলেজ-সাবজেক্ট পাচ্ছেন আবার কেউ কেউ এসএসসি-এইচএসসিতে জিপিএ-৫ নিয়েও পাচ্ছেন না।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিচ্ছুকরা বলছেন, মূলত বিজ্ঞান বিভাগে চলতি শিক্ষাবর্ষে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা অতিরিক্ত হওয়ায় এ জটিলতা দেখা দিয়েছে। এ বিভাগটিতে একদিকে যেমন প্রতিযোগির সংখ্যা বেশি অন্যদিকে জিপিএ-৫ এর সংখ্যাও বেশি হওয়ায় তুলনামূলক কম জিপিএ পাওয়া ভর্তিচ্ছুরা প্রথম তালিকা থেকে বাদ পড়ে যাচ্ছেন।
এছাড়া মানবিক এবং ব্যবসা শাখার শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী কলেজ-সাবজেক্ট পাচ্ছেন। গতকাল বুধবার বিকেল ৪টায় এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের (http://app8.nu.edu.bd/nu-web/applicantLogin.action) পাশাপাশি উত্তীর্ণদের মোবাইল ফোনে ম্যাসেজের মাধ্যমে ফলাফল জানানো হচ্ছে।
এদিকে, এবারও এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ভর্তির ফল প্রকাশ করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ভর্তিচ্ছুদের আবেদনের ভিত্তিতে এটি ছিল প্রথম মেধা তালিকা। পরবর্তীতে দ্বিতীয়, তৃতীয় মেধা তালিকাও দেবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে। প্রকাশিত ফলে দেখা গেছে, ডাবল জিপিএ-৫ নিয়ে পছন্দের কলেজ-সাবজেক্ট না পেলেও অনেকে আরও কম জিপিএ নিয়েও পেয়েছেন।
চলতি বছরে পরীক্ষা ছাড়াই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার মূল্যায়নে পাস করেছেন সবাই। নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন মোট জিপিএ-৫ পাওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ১ লাখ ২৩ হাজার ৬২০ জনই বিজ্ঞান ও গার্হস্থ্য বিভাগের (গ্রুপ) পরীক্ষার্থী। বাকিদের মধ্যে ১৯ হাজার ৬৬৪ জন মানবিক, ইসলাম শিক্ষা ও সংগীত বিভাগের এবং ১০ হাজার ৩৩০ জন ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থী আবেদনের পর যারা সাবজেক্ট পেয়েছেন এসব শিক্ষার্থীদের মাঝেও রয়েছে অসন্তোষ।
ঢাকা জেলায় যে পরিমাণ টাকা আছে, সারা দেশ মিলিয়েও তা নেই। আবার ঋণ ও আমানতের পরিমাণের দিক দিয়ে সবচেয়ে পিছিয়ে বরিশাল। রংপুরের মানুষেরা ব্যাংকে যতটুকু আমানত রেখেছে, তার চেয়ে তাদের ঋণ বেশি। এ হিসাব বাংলাদেশ ব্যাংকের।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে ব্যাংকগুলোর ঋণ ও আমানতের অঞ্চলভিত্তিক একটি চিত্র তুলে ধরে। দেখা যায়, দারিদ্র্যপ্রবণ বিভাগ রংপুরে মানুষের মাথাপিছু আমানত সবচেয়ে কম। মাথাপিছু আমানত বেশি ঢাকায়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে গত বছরের সেপ্টেম্বরে দেশের ব্যাংকগুলোতে আমানত ছিল প্রায় ১০ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। পাঁচ বছর আগে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে আমানতের পরিমাণ ছিল ৫ লাখ ৮১ হাজার কোটি টাকা। বাজারে ব্যাংকের দেওয়া ঋণের পরিমাণ ৮ লাখ ৫৯ হাজার কোটি টাকা, যা পাঁচ বছর আগের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি।
কোন বিভাগে কত
বিভাগ হিসেবে আমানত ও ঋণ ঢাকায় বেশি। ঢাকা বিভাগের ব্যাংকের শাখাগুলোতে মোট আমানত এসেছে ৬ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের মোট আমানতের প্রায় ৬১ শতাংশ।
এর পরে রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ। সেখানে আমানতের পরিমাণ ২ লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকা, যা মোট আমানতের প্রায় ২২ শতাংশ। আমানতের দিক দিয়ে এর পরের অবস্থানে রয়েছে খুলনা। ওই বিভাগে আমানতের পরিমাণ ৪৩ হাজার কোটি টাকা।
এ ছাড়া সিলেটে ৪২ হাজার কোটি, রাজশাহীতে ৪০ হাজার কোটি, রংপুরে ২০ হাজার কোটি, বরিশালে সাড়ে ১৯ হাজার কোটি ও ময়মনসিংহে ১৫ হাজার কোটি টাকার আমানত রয়েছে।
আরো পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক করে হাসপাতালে ভর্তি সৌরভ গাঙ্গুলি
ঋণ বিতরণের দিক দিয়েও ঢাকা স্বাভাবিকভাবেই এগিয়ে। এই বিভাগে দেশের ব্যাংক-ব্যবস্থার মোট ঋণের ৬৭ শতাংশ বিতরণ করা হয়েছে। পরিমাণের দিক থেকে তা ৫ লাখ ৭৯ হাজার কোটি টাকা।
চট্টগ্রামে ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা, যা মোট ঋণের প্রায় ১৯ শতাংশ। ঋণ বিতরণে এর পরে রয়েছে খুলনা, পরিমাণ প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা।
এ ছাড়া রাজশাহীতে প্রায় ৩৩ হাজার কোটি, রংপুরে ২০ হাজার কোটি, ময়মনসিংহে ১২ হাজার কোটি, সিলেটে ১০ হাজার কোটি ও বরিশালে ৯ হাজার কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।
মাথাপিছু আমানতে পিছিয়ে রংপুর
বিভাগের আকার ও জনসংখ্যার কারণে পরিমাণগত দিক বিবেচনায় সঠিক চিত্র না-ও পাওয়া যেতে পারে। মাথাপিছু হিসাবই আসল চিত্র দেয়। সেদিক দিয়েও এগিয়ে ঢাকা। এই বিভাগে মানুষের মাথাপিছু আমানতের পরিমাণ দেড় লাখ টাকার মতো।
চট্টগ্রামে এর পরিমাণ ৭০ হাজার টাকা। এ ছাড়া সিলেটে মাথাপিছু আমানত ৩৭ হাজার, খুলনায় ২৪ হাজার, বরিশালে ২১ হাজার, রাজশাহীতে ১৯ হাজার, ময়মনসিংহে ১১ হাজার ও রংপুরে ১১ হাজার টাকার কিছু কম।
মাথাপিছু ঋণও ঢাকায় বেশি। এই বিভাগে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৩৯ হাজার টাকার মতো। চট্টগ্রামে মাথাপিছু ঋণ ৪৯ হাজার টাকা। এ ছাড়া খুলনায় ১৯ হাজার, রাজশাহীতে ১৫ হাজার, রংপুরে ১১ হাজার, ময়মনসিংহে ১০ হাজার, বরিশালে ৯ হাজার ৭০০ ও সিলেটে ৯ হাজার টাকার মাথাপিছু ঋণ রয়েছে।
ব্যবসা-বাণিজ্য ঢাকাকেন্দ্রিক
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জেলায় কলকারখানা ও ব্যবসা করলেও ঋণ নিয়েছেন রাজধানীর ব্যাংকের শাখাগুলো থেকেই। বেশির ভাগ চাকরিজীবী ঢাকায় অবস্থান করায় আমানতও এখানেই বেশি জমা পড়ছে।
এ জন্যই ঢাকায় বড় বড় করপোরেট শাখা খুলেছে ব্যাংকগুলো। আর এলাকার চেয়ে ঢাকার শাখাগুলোতে মিলছে অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা।
এদিকে চট্টগ্রাম বিভাগে বড় বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থাকলেও আমানত ও ঋণ সেভাবে নেই। গত পাঁচ বছরে ঋণও সেভাবে বাড়েনি। চট্টগ্রাম বিভাগের ২ লাখ ২৭ হাজার ৫৩৫ কোটি টাকা আমানতের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলার আমানতই ১ লাখ ৫১ হাজার ৬১০ কোটি টাকা।
আর বিভাগের ১ লাখ ৬০ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে ১ লাখ ৩৭ হাজার ২২০ কোটি টাকা ঋণই চট্টগ্রাম জেলায়। ২০১৩ সালে শুধু চট্টগ্রাম জেলায় আমানত ও ঋণ ছিল যথাক্রমে ৭৭ হাজার ৯৫৩ কোটি ও ৭৪ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা।
চট্টগ্রামে কর্মরত ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, বড় ব্যবসায়ীদের বড় অংশই ঢাকার প্রধান শাখা বা করপোরেট শাখার সঙ্গে লেনদেন করে। তাই ঋণও ওই শাখায়।
আর চট্টগ্রামের সব শাখার ঋণ দেওয়ার সীমাও বেশি নয়। চট্টগ্রামে যা ঋণ রয়েছে, তার বড় অংশই আবার খাতুনগঞ্জ, আগ্রাবাদ শাখায়।