a
ফাইল ছবি
ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড গাজা উপত্যকায় অব্যাহত হামলার বিষয়ে ইসরাইলকে সতর্ক করেছে রাশিয়ার এক সিনিয়র কর্মকর্তা। বুধবার ইসরাইলি রাষ্ট্রদূতকে এমন হুশিয়ারি দেন তিনি। খবর-বিবিসির
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, তিনি বলেন, গাজায় বেসামরিক হতাহতের ঘটনা আরও বাড়ার ব্যাপারে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তা অগ্রহণযোগ্য।
ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলের মধ্যে সংঘর্ষ দশম দিনে পৌঁছেছে। এ পর্যন্ত ইসরাইলি হামলায় ফিলিস্তিনের ২২০ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৬৩ জন শিশু রয়েছে। এ ছাড়া দেড় হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
অপরদিকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে হামাসের হামলায় ১২ ইসরাইলি নিহত হয়েছে। পাশাপাশি আহত হয়েছে প্রায় তিন শতাধিক ইসরাইলি সামরিক-বেসামরিক ব্যক্তি।
ফাইল ছবি
ওয়াহিদুল্লাহ হাশিমি বলেছেন, নতুন আফগানিস্তানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পাবেন না। তালেবান শাসনে মূলত শরিয়া আইনের ওপরেই গড়ে উঠবে শাসন ব্যবস্থা। সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে তিনি এমনটাই জানিয়েছেন।
তবে সেই ব্যবস্থা গত তালেবান শাসনের মতো হবে কি না, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও মন্তব্য করেননি হাশিমি। অদূর ভবিষ্যতে তা স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে কাউন্সিল তৈরির বিষয়ে অনেকটাই নিশ্চিত তিনি।
তার বক্তব্য, তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দযাদা সুপ্রিম লিডার হিসেবে সরকারের প্রধান হিসেবে থাকবেন। কিন্তু সম্ভবত তিনি প্রেসিডেন্ট হবেন না। প্রেসিডেন্ট করা হতে পারে আখুন্দজাদার ডেপুটিদের। এই মুহূর্তে আখুন্দজাদার তিনজন ডেপুটি আছেন।
মোল্লাহ ওমরের ছেলে মৌলভি ইয়াকুব, হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান সিরাজউদ্দিন হাক্কানি এবং দোহায় তালেবানের রাজনৈতিক প্রধান আবদুল গনি বারাদার। মঙ্গলবার বিশ বছর পর তিনি কান্দাহারে পা রেখেছেন।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, তালেবান যে নতুন সরকার গঠন করতে যাচ্ছে, তার মডেল হবে অনেকটা ইরানের মতো। সুপ্রীম লিডারের কাছে সকলে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবেন। তার পরের থাকবেন প্রেসিডেন্ট এবং তারপর কাউন্সিল।
সূত্র: ডয়চে ভেলে।
ফাইল ছবি
শরচ্চন্দ্র পণ্ডিত বাংলা সাহিত্যের পাঠক সমাজে দাদাঠাকুর নামেই পরিচিত। তিনি ছিলেন একজন বাঙালি কথাশিল্পী ও সাংবাদিক৷ যিনি মুখে মুখে ছড়া, হেঁয়ালী ও হাস্য কৌতুক রচনা করতেন। তার রচিত নানান হাসির গল্প বাঙলা সাহিত্যের অমর কীর্তি৷ তার প্রকাশিত বিখ্যাত গ্রন্থ বোতল পুরাণ।
জন্ম ২৭ এপ্রিল ১৮৮১ সিমলাদ্দি, বীরভূম জেলা , বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, বৃটিশ ভারত আর মৃত্যুবরণ করেন ২৭ এপ্রিল ১৯৬৮। অবস্থান করেছেন জঙ্গীপুর, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিমবঙ্গে। পেশা হিসেবে সাংবাদিকতা, বিদ্রূপাত্মক সাহিত্য রচয়িতা, কবি, সামাজিক সমালোচক, গীতিকার। তবে কৌতুক ও কবিতা রচয়িতা, সামাজিক সমালোচক হিসেবে ভালো পরিচিত ছিলেন।
শরচ্চন্দ্র মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গীপুর মহকুমার দফরপুর গ্রামে বাস করতেন। তাঁর জন্ম মাতুলালয়ে বীরভূম জেলার নলহাটি থানার অন্তর্গত সিমলাদ্দি গ্রামে। পিতা দরিদ্র ব্রাহ্মণ হরিলাল পণ্ডিত। শৈশবেই তিনি পিতা-মাতাকে হারান। কিন্তু তাঁর পিতৃব্য রসিকলাল তাঁকে কোনদিনই তাঁদের অভাব বুঝতে দেননি। তাঁর স্নেহ-ভালবাসা বেড়ে ওঠা দরিদ্র পরিবারের সন্তান শরচ্চন্দ্র জঙ্গিপুর হাইস্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাশ করে বর্ধমান রাজ কলেজে এফ.এ. ক্লাসে ভর্তি হন কিন্তু আর্থিক কারণে পড়া শেষ করতে পারেননি।
জঙ্গীপুরে তিনি অত্যন্ত সাধারণ জীবন যাপন করতেন কিন্তু অত্যন্ত তেজস্বী মানুষ ছিলেন। চারিত্রিক দৃঢ়তায় ছিলেন আধুনিক কালের বিদ্যাসাগর। মাত্র ২১ বৎসর বয়সে ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে 'পণ্ডিত প্রেস' নামে একটি হস্তচালিত ছাপাখানা রঘুনাথগঞ্জে স্থাপন করেন তিনি। তার একক প্রচেষ্টায় 'জঙ্গীপুর সংবাদ' নামে একটি সাপ্তাহিক সংবাদপত্র প্রকাশ করতে থাকেন। এই পত্রিকা বাংলার বলিষ্ঠ মফস্বল সাংবাদিকতার প্রথম উদাহরণ। পণ্ডিত প্রেসে তিনিই ছিলেন কম্পোজিটর, প্রুফ রিডার, মেশিনম্যান। সমস্ত কিছুই একা হাতে করতেন।
পরবর্তীকালে তিনি তাঁর ছাপাখানার বিবরণ দিতে গিয়ে বলতেন " আমার ছাপাখানার আমিই প্রোপাইটর, আমি কম্পোজিটর, আমি প্রুফ রিডার, আর আমিই ইঙ্ক-ম্যান। কেবল প্রেস-ম্যান আমি নই। সেটি ম্যান নয় - উওম্যান অর্থাৎ আমার অর্ধাঙ্গিনী। ছাপাখানার কাজে ব্রাহ্মণী আমাকে সাহায্য করেন, স্বামী-স্ত্রীতে আমরা ছাপাখানা চালাই।"
এছাড়া তার প্রকাশিত 'বিদুষক'পত্রিকায় বেরতো তার নিজের রচিত নানা হাসির গল্প ও হাস্য কৌতুক। বিদূষক পত্রিকা রসিকজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। দাদাঠাকুর নিজে কলকাতার রাস্তায় রাস্তায় গিয়ে বিক্রি করতেন এই পত্রিকা। প্রাক স্বাধীনতার সময় কলকাতার রাস্তায় গান গেয়ে 'বোতল পুরান' পুস্তিকাটি ফেরি করতে গেলে ব্রিটিশ পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে আসে, তাদের জন্য তৎক্ষণাৎ বানিয়ে ইংরেজিতে গান ধরলেন তিনি।
শ্বেতাঙ্গ পুলিশ খালি গা ও খালি পায়ের এমন এক হকারকে ইংরেজিতে গান গাইতে দেখে হতবাক হয়ে যায় এবং শুধু উৎসাহ জোগাতেই আট কপি বখশিস দেয়। তার কাব্যপ্রতিভা, রসবোধ ও প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব ছিল সহজাত। ইংরেজি ভাষাতে যে প্যালিনড্রোম বা উভমুখী শব্দ আছে সেরকম বাংলায় শব্দ সৃষ্টি করেছেন। হিন্দি ও ইংরেজিতেও কাব্য লিখেছেন তিনি। তার ব্যাঙ্গাত্বক কবিতাগুলি ছিল সমাজের অত্যাচারী কুপ্রথার বিরুদ্ধে জলন্ত প্রতিবাদ স্বরূপ। স্বয়ং নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু তাকে শ্রদ্ধা করতেন।
সাংবাদিক সমাজের জন্য তিনি এক প্রেরনার উৎস। তার কাজের ধারাকে যদি সত্যিকার অর্থে বহন করে নেওয়া যায় তবে সাহিত্য, শিল্পকর্মই নয় জীবনের এক নিদারুণ মর্মার্থও উঠে আসবে সকলের সামনে।