a কবির গভীর অভিমান
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫
https://www.msprotidin.com website logo

কবির গভীর অভিমান


ফেসবুক ডেস্ক:
মঙ্গলবার, ০১ জুন, ২০২১, ১১:৫৮
কবির গভীর অভিমান

ফাইল ছবি। কাজী নজরুল ইসলাম

 
কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে বিদ্রাহী কবি বিশেষণটি না দিলে মন ভরে না। এই মহান কবিকে আমরা এখনও বিদ্রোহী বলে জানি এবং সেভাবেই জানতে ও ভাবতে আমরা বেশি পছন্দ করি। যৌবনের কবিও বলা হয়। যে কবি যৌবনের তার বিদ্রোহী হতে কোনো বাধা নেই। একালের কবিও তো সে কথাই বলেন। ‘এখন যৌবন যার , যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়' " (হেলাল হাফিজ)। যুদ্ধ আর বিদ্রোহের মধ্যে ব্যবধান আছে। সব যুদ্ধ বিদ্রোহ নয়। পক্ষান্তরে বিদ্রোহ থেকে যুদ্ধ উৎপন্ন না হয়েই পারে না। সে যুদ্ধ  হতে পারে সশস্ত্র , হতে পারে সামাজিক প্রতিরোধ কিংবা সাংস্কৃতিক লড়াই। বাংলাদেশের মানুষ তো বটেই, গোটা উপমহাদেশের জনগণ দু’শ বছর লড়াই করেছেন্। বুকের ভেতর দ্রোহের আগুন জ্বেলে তারা ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। সেই সংগ্রামের বিচিত্রতা ও বহুমাত্রিকতার ইতিহাস কমবেশি আমরা সবাই জানি। দুই শতাব্দির লালিত দ্রোহে ভাষা দিলেন কাজী নজরুল ইসলাম।

সেই সংগ্রাম আবারও আমরা প্রত্যক্ষ করেছি পাকিস্তানের তেইশ বছরের দুঃশাসনের মধ্যে। একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোতে  নজরুলের কবিতা ও গান আমাদের সাহস জুগিয়েছে, প্রাণিত করেছে যুদ্ধের ময়দানে, অবরূদ্ধ জনপদে। তবু, বিদ্রোহ বা যুদ্ধ প্রৌঢ়- প্রাচীনের জন্য সহজ নয়। নজরুল যখন বলেন, আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল, আমি দ’লে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙঙ্খল!’Ñতখন বিচলিতবোধ করেন শান্তিপ্রিয় কোনো কোনো প্রৌঢ়বোদ্ধা।  কিন্তু ক্ষুব্ধ তরুণ বলেন, এই তো  আমার প্রাণের কথা। অতঃপর বিদ্রোহ আর যৌবনকে সমান্তরাল বলে ভেবে নেয়া যায় বৈ কি!
 
নিশ্চয়ই কবি  জানতেন যে, লোকে তাঁকে বিদ্রোহী বলেই বেশি ভালবাসেন। তাসত্তে¡ও মাঝে মাঝে মনেহয়, তিনি নিজেও এই অভিধায় বিব্রতবোধ করতেন। সে জন্যে তিনি কৈফিয়ৎ দিতেও কুণ্ঠিত হননি। চির-বিদ্রোহী কবিতায় তিনি বলছেন,
‘বিদ্রোহী করেছে মোরে আমার গভীর অভিমান।
তোমার ধরার দুঃখ কেন
আমায় নিত্য কাঁদায় হেন?
বিশৃঙ্খল সৃষ্টি তোমার, তাই তো কাঁদে আমার প্রাণ!
বিদ্রোহী করেছে মোরে আমার গভীর অভিমান।’
বোঝাই যায়, অভিমানী কবির এই কৈফিয়ৎ কোনো মানুষের কাছে নয়, এই কৈফিয়ৎ ;নাকি জিজ্ঞাসা তাঁর স্রষ্টার কাছে । অন্তর্যামীর প্রতি কতটা গভীর ভালবাসার দাবি বুকের ভেতর লালন করলে পরে এমন উদ্ধত ভাষাভঙ্গি প্রয়োগ করা যায়, তা সহজেই অনুমেয়।  এ-ও একধরণের সমর্পণ। রবীন্দ্রনাথও সমর্পিত কবি। কিন্তু দু’জনের প্রকাশভঙ্গি আলাদা। একজন রাগী , অভিমান ক্ষুব্ধ, আরেকজন বিনীত, মার্জিত প্রার্থনায় আনত।

নজরুল বিদ্রোহী। তিনি দার্শনিকও বটে। তিনি যখন বলেন, আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে? Ñ তখন চট করে মাথায় প্রশ্ন এসে যায়, সকাল হলে মানুষ জাগে নাকি মানুষ জাগলে সকাল হয়? প্রশ্নটি খুবই জটিল নিঃসন্দেহে। একজন কিশোর পাঠক যখন কবিতাটি পাঠ করে, তখন তার মনে কোনো প্রশ্নের উদ্রেক নাও হতে পারে। তার কাছে এ শুধু একটি ভাললাগার পদ্য। কিন্তু প্রাপ্তমনস্ক মানুষ আপনমনে প্রশ্নবিদ্ধ হতেই পারেন। এই জিজ্ঞাসার জবাব খুঁজতে গেলেই আমরা মুখোমুখি হই কঠিনতর জীবন সত্যের। রাত পোহালে , সূর্য উঠলেই সকাল হয়। ভোরের আলো ফোটে। আলো ফুটলেও সব সময় কিন্তু সে আলোতে জীবনের অন্ধকার ঘুচে যায় না। মানুষ জাগলে, তার দীর্ঘ, দীর্ঘতর সংগ্রামের মধ্য দিয়েই আলোকমন্ডিত হয় জীবন। কাল হতে কালান্তরের, দেশ হতে দেশান্তরের ইতিহাসের পাতায় পাতায় তার প্রমাণ রয়েছে। সেই সত্যেরই প্রতিধ্বনি করেন বিদ্রোহী কবি।  উষার দুয়ারে আঘাত হেনে তিমির রাত টুটাবার আহবান শুনি আমরা তাঁর  কণ্ঠে। তিনি ভীত- সন্ত্রস্ত মানুষকে শোনান অভয়ের বাণী, মাভৈঃ,মাভৈঃ। তাঁর অভয় মন্ত্র;
ওরে    যে যায় যাক সে, তুই শুধু বল ‘আমার হয়নি লয়’।
বল    আমি আছি, আমি পুরুষোত্তম, আমি চির দুর্জয়!
বল    নাহি ভয়, নাহি ভয়,
বল    মাভৈঃ মাভৈঃ, জয় সত্যের জয়।’

এ হলো আত্মশক্তি উদ্বোধনের গান। ব্যক্তি বা  জাতির সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে তার নিজের মনের শক্তি। ইংরেজিতে একে বলা হয়, পাওয়ার অব পজেটিভিটি। মানুষ যতদিন নিজেকে ভয় থেকে মুক্ত করতে না পারে, ততদিন তার মুক্তি নাই। ভয়ের হাত ধরেই আসে পরাজয়। ভয় থেকে পলায়ন করার সুযোগ নেই বরং জয় করতে হয়, জয় করতে হবে। একে জয় না করে স্বাধীনতাও আসে না। আবার সমাজে ভয় কায়েম রেখে স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় না। রুজভেল্টের ফোর ফ্রিডম তত্তে¡ও বলা হয়েছে একই কথা। নজরুল তাই সবসময় প্রাসঙ্গিক এবং সর্বজনীন। তিনি দূত মানবমুক্তির।

 

--------- ফাইজুস সালেহীন, বৃহত্তর ময়মনসিংহ লেখক-সাংবাদিক ফাউন্ডেশন

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

আরও পড়ুন

কলকাতা প্রেসক্লাবে বিচারকের লেখা বইয়ের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত


ইকবাল দরগাই, কলকাতা প্রতিনিধি, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:০৮
কলকাতা প্রেসক্লাবে বিচারকের লেখা বইয়ের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত

ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন

ইকবাল দরগাই, কলকাতা প্রতিনিধি: আজ কলকাতা প্রেসক্লাবে  জেলা জজ বিপ্লব রায়ের লেখা গ্রন্হ "গলি থেকে রাজপথ "- এর প্রকাশনা বা মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শ্রীঅসিম কুমার রায়।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক শ্রীপ্রচেত গুপ্ত,নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর পৌত্রি জয়ন্ত রক্ষিত,ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের উত্তর পুরুষ অভিজাত বন্দোপাধ্যায়, বিশিষ্ট লেখক ঋতি ভট্টাচার্য, ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস সোসাইটির পৃষ্ঠপোষক পিস এম্বাসেডর এটিএম,মমতাজুল করিম ও বইয়ের লেখক বিপ্লব রায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস সোসাইটির সেক্রেটারী ডঃ আদম শফি খান, কোষাধ্যক্ষ মন্জু লস্কর, সাংগঠনিক সম্পাদক সুচন্দন মৃধা, পারুল বই প্রকাশনিরপার্থ সাহা ও পম্পা সাহা সহ অনেক কবি সাহিত্যিক, সাংবাদিকরাও  ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বিপ্লব রায়  একজন বিচারক হিসেবে আইন - আদালতে সততার সঙ্গে কাজ করেও  মানবিক মানুষ হিসেবে তার কর্মজীবনে দেখা নানা ঘটনাকে লেখনির মাধ্যমে যেভাবে উপস্থাপন করেছেন তা সত্যি প্রশংসনীয়।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

আরও পড়ুন

করোনায় (২৫জুন) মৃত্যু ১০৮, শনাক্ত ৫৮৬৯ এবং সুস্থ ২৭৭৬


স্বাস্থ্য ডেস্ক:মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
শুক্রবার, ২৫ জুন, ২০২১, ০৭:৩৪
করোনাভাইরাসের সর্বশেষ তথ্য

করোনাভাইরাস

  
গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ১০৮ জন। এ নিয়ে করোনাভাইরাসে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১৩ হাজার ৯৭৬ জন।
 
এদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে শনাক্ত হয়েছে ৫৮৬৯ জন। এ নিয়ে দেশে মোট করোনাভাইরাসে শনাক্তের সংখ্যা ৮ লাখ ৭৮ হাজার ৮০৪ জন।
 
আজ শুক্রবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে আরও জানানো হয়, গত ১ দিনে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ২৭৭৬ জন করোনারোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৯৭ হাজার ৫৫৯ জন।
 
উল্লেখ্য, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্তের হার ২১.২২ শতাংশ। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৭ হাজার ৬৫৩টি।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম
Share on Facebook

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন এর সর্বশেষ

সর্বশেষ - শিল্প ও সাহিত্য