a
জো বাইডেন ও নরেন্দ্র মোদি
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে মহাবিপর্যয়ে আছে ভারত। অক্সিজেনসহ প্রায় সকল চিকিৎসা সামগ্রীর অভাবে ইতমধ্যে দিশেহারা হয়ে পড়েছে দেশটি।
মৃত্যু ও সংক্রমণ দুটোই দিন দিন বেড়েই চলেছে। ইতোমধ্যে দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণ সাড়ে ৩ লাখ ছাড়িয়েছে।
আমেরিকার মতোই করোনার ধাক্কায় ভারতের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে পড়েছে। এসব পরিস্থতিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ সময় করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আমেরিকা এবং ভারত যৌথভাবে কাজ করতে একমত হয়েছেন।
সোমবার রাতে ফোনে এসব বিষয়ে আলোচনা হয় দুই রাষ্ট্র প্রধানের সাথে। হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ খবর জানানো হয়।
দু’দেশের শীর্ষনেতার মধ্যে আলোচনায় ভারতের কোভিড রোগীরা যে শোচনীয় অবস্থায় রয়েছেন, তা নিয়েও কথাবার্তা হয়েছে বলে জানায় হোয়াইট হাউস।
করোনা টিকার কাঁচামাল সরবরাহ করার ব্যাপারে পূর্বের অবস্থান থেকে সরে এসে ভারতকে রবিবারই টিকার কাঁচামাল সরবরাহের আশ্বাস দিয়েছিল আমেরিকা। তার একদিন পর সোমবার বাইডেন জানিয়েছেন, ভারতের করোনা রোগীদের চিকিৎসায় আপৎকালীন সব ধরণের সহযোগিতা করবে তার প্রশাসন।
ফাইল ছবি
আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার সেনাদের মধ্যে আবারও গোলযোগপূর্ণ নাগোর্নো-কারাবাখে তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে। আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আজ বুধবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে আজারবাইজানের সেনাদের সঙ্গে গুলি বিনিময়ের সময় আর্মেনিয়ার তিন সেনা নিহত এবং দু’জন আহত হয়েছে। আজ সকালেই এই সংঘর্ষ শুরু হয়। খবর পার্সটুডের।
আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সংঘর্ষের জন্য আজারবাইজানকে দায়ী করেছে। আর্মেনীয় মন্ত্রণালয় বলেছে, আজারবাইজানের পক্ষ থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে পরিস্থিতি সংঘাতময় করে তোলা হয়েছে এবং আজারবাইজানের সেনারা অবৈধভাবে আর্মেনিয়ার স্বাধীন ভূখণ্ডে অবস্থান করছে।
জবাবে আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, কালবাজারে আজারবাইজানের সেনা অবস্থানে আর্মেনীয় সেনারা উস্কানিমূলক হামলা চালালে তার জবাব দেয়া হয়েছে। এতে আজারবাইজানের দুই সেনা আহত হয়েছে বলে আজেরি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় উল্লেখ করেছে। উল্লেখ্য, নাগার্নো-কারাবাখ অঞ্চলে গত নভেম্বর মাস থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকার পর আজ এরকম রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আর্মেনীয় সেনা নিহতের খবর পাওয়া গেল।
ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
সাইফুল আলম, ঢাকা: হার্ম রিডাকশন ফাউন্ডেশনের প্রথম উদ্যোগ নীতিনির্ধারণী আলোচনায় আজ অনেক গবেষণা লব্ধ পদক্ষেপের কথা বলা হয়। আজ এপ্রিল ১৫, ২০২৫ইং তারিখে বাংলাদেশ হার্ম রিডাকশন ফাউন্ডেশনের (বিএইচআরএফ) উদ্যোগে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণে আজ (মঙ্গলবার) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) অনুষ্ঠিত হলো একটি নীতিনির্ধারণী সংবাদ সম্মেলন। সম্মেলনে পরিবেশেবান্ধব নয় এমন কীটনাশকের ব্যবহার কমানো, তামাককের ক্ষতিহ্রাস এবং সড়ক নিরাপত্তা- এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করা হয়। এটি ছিল এ বছরের শুরুতে গঠিত হওয়া বাংলাদেশ হার্ম বিভাকশন ফাউন্ডেশনের প্রথম উদ্যোগ।
অনুষ্ঠানে জনস্বাস্থ্য, কৃষি ও সড়ক পরিবহণ খাতের নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিরা তাঁদের সংশ্লিষ্ট খাতের সমস্যা ও সমাধান নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য উপস্থাপন করেন। পাশাপাশি ফাউন্ডেশনটির মূল লক্ষ্যের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে সঙ্গতি রেখে ক্ষতি কমানোর জন্য প্রমাণভিত্তিক কৌশল প্রণয়নের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তারা।
আলোচনা শুরু করেন বাংলাদেশ হার্ম রিডাকশন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ড. মো. শরীফুল ইসলাম। তিনি বলেন, "হার্ম রিডাকশন কোনো বিলাসিতা নয়- এটি বাংলাদেশের জন্য একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। আমাদের লক্ষ্য হলো সমাজ, নীতি নির্ধারক ও বিশেষজ্ঞদের একত্রিত করে কার্যকর সমাধান তৈরি করা, যা আমাদের দেশের জন্য উপযোগী হবে।”
কৃষিখাতে নিরাপদ কীটনাশক ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন বাংলাদেশ গ্রুপ প্রোটেকশন অ্যাসোসিয়েশনের রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার এবং টেকসই কৃষি উন্নয়ন ও নিরাপদ কীটনাশক ব্যবহারের অন্যতম প্রবক্তা দেবাশীষ চ্যাটার্জি। তিনি বলেন, “অসুরক্ষিতভাবে কীটনাশক ব্যবহার এখনো কৃষক ও পরিবেশের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে আছে। আমাদের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দিতে হলে প্রশিক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় বিনিয়োগ বাড়ানো জরুরি।"
রোড সেফটি অ্যাডভোকেট ও পরিবহন বিশেষজ্ঞ সালাহ উদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় আহতের সংখ্যা কমানোর লক্ষ্যে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে জানান, সড়ক দুর্ঘটনা বাংলাদেশে এখনও একটি বড় জনস্বাস্থ্য সংকট হিসেবে রয়ে গেছে। তার ভাষ্যমতে, “আমাদের শুধু যানবাহনের কথা ভাবলেই চলবে না- নিরাপদ সড়ক, দক্ষ চালক এবং কার্যকর ট্রাফিক আইন বাস্তবায়নের বিষয়েও সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। একটি জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা পরিকল্পনা অনেক আগেই নেওয়া উচিত ছিল।
আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও হার্ম রিডাকশন বিষয়ক দীর্ঘ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন চিকিৎসক ডা. ডেলন হিউম্যান তামাকের ক্ষতিহ্রাস প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তিনি তামাকজনিত রোগ কমাতে বিকল্প পন্থার ওপর আলোকপাত করেন, যা শুধুমাত্র নিষেধাজ্ঞার ওপর নির্ভর না করেও কার্যকর হতে পারে।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশকে তামাক নিয়ন্ত্রণের প্রথাগত পদ্ধতির সঙ্গে নিকোটিনের নিরাপদ বিকল্পও বিবেচনায় নিতে হবে। সঠিকভাবে এই পদ্ধতিগুলো যদি জনস্বাস্থ্য নীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, তাহলে অনেক ক্ষতি কমানো সম্ভব।”
সংবাদ সম্মেলনটি শেষ হয় একটি প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে, যেখানে গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা সরাসরি বক্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সুযোগ পান। সরকারী সংস্থা, বেসরকারি সংগঠন (এনজিও) এবং স্বাস্থ্য খাতের প্রতিনিধিরা জনস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা উন্নয়নে বাংলাদেশ হার্ম রিডাকশন ফাউন্ডেশনের (বিএইচআরএফ) এই সময়োপযোগী পদক্ষেপকে স্বাগত জানান।
সবশেষে বাংলাদেশ হার্ম রিডাকশন ফাউন্ডেশন সম্পর্কে বলেন, বাংলাদেশ হার্ম রিডাকশন ফাউন্ডেশন (বিএইচআরএফ) হচ্ছে একটি অলাভজনক সংগঠন। এর লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিক ও পরিবেশগত ঝুঁকির ক্ষতিকর প্রভাব কমিয়ে আনা। দেশজুড়ে এসব ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তি ও কমিউনিটির মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো, প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেয়া এবং ঝুঁকি হ্রাসের জন্য বাস্তবসম্মত কৌশল বাস্তবায়নের তাগিদ দেয় বিএইচআরএফ। অ্যাডভোকেসি, গবেষণা ও প্রান্তিক পর্যায়ে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়ার মাধ্যমে জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগজনক ও পরিবেশগত ঝুঁকির মতো চালেঞ্জগুলো তুলে ধরে ফাউন্ডেশনটি। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পার্টনারদের সাথে নিয়ে বিএইচআরএফ'র উদ্দেশ্য হচ্ছে আরো নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ও গঠনমূলক সমাজ গড়ে তোলা।