a
ফাইল ছবি
পাঞ্জশির উপত্যকায় বিদ্রোহীদের সঙ্গে তালেবান যোদ্ধাদের কোথাও কোথাও তুমুল সংঘর্ষ চলছে। এ উপত্যকাটিতে আফগানিস্তানের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহর ভবন রয়েছে। সেই ভবনে হামলা চালিয়েছে তালেবান যোদ্ধারা।
এছাড়া পাঞ্জশির থেকে পালিয়ে কাবুল যাওয়ার সময় আমরুল্লাহ সালেহর বড় ভাই রুহুল্লাহ সালেহকে আটক করা হয় ও পরে নির্যাতন করে হত্যা করে তালেবান। বিভিন্ন প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
খবরে বলা হয়েছে, আমরুল্লাহ সালেহ যেখান থেকে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন, সেই জায়গায় বর্তমানে অবস্থান করছে তালেবান। তারা সেখানে ছবি ও ভিডিও ধারণ করেছে। সেই গ্রন্থাগারেরও নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তালেবান যোদ্ধারা।
তালেবান পাঞ্জশিরে জয় লাভ করেছে জানিয়ে কয়েকটি জায়গায় আনন্দ উদযাপন করেছে। তবে পাঞ্জশিরে কয়েকটি জায়গায় এখনো তালেবানের সঙ্গে নর্থান রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের সঙ্গে সংঘর্ষ চলছে।
ছবি সংগৃহীত: অমিত শাহ
কানাডার মাটিতে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হত্যা বা হত্যাচেষ্টা চালানোর পেছনে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হাত আছে বলে অভিযোগ করেছে কানাডীয় সরকার। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ হিন্দুত্ববাদী নেতা অমিত শাহের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে।
কানাডার আগের অভিযোগগুলোকেও ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করে ভারত সরকার তা বাতিল করে দিয়েছিল। খালিস্তানপন্থী আন্দোলনের শিখ নেতাকে হত্যা বা তাদের হত্যাচেষ্টায় কোনো ধরনের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছে তারা।
কানাডার কর্মকর্তারা যে খালিস্তানপন্থী আন্দোলনকারীদের হত্যাচেষ্টায় অমিত শাহের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছেন, সে খবরটি প্রথম প্রকাশিত হয় প্রভাবশালী মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টে। এতে বলা হয়, কানাডায় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের ওপর সহিংসতা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের পেছনে অমিত শাহের হাত রয়েছে।
কানাডার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড মরিসন গতকাল (২৯.১০.২০২৪) মঙ্গলবার এক সংসদীয় প্যানেলকে জানান, তিনি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওই সংবাদমাধ্যমটিকে অমিত শাহের জড়িত থাকার বিষয়ে বলেছেন।
কমিটিকে মরিসন বলেন, ‘সাংবাদিক আমাকে ফোন দিয়ে জানতে চেয়েছিলেন, এ ব্যক্তি সেই ব্যক্তি কিনা। আমি নিশ্চিত করেছি, এই সেই ব্যক্তি।’ তবে মরিসন এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি। এ–সংক্রান্ত কোনো প্রমাণও উপস্থাপন করেননি তিনি।
অটোয়ায় অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও এখন পর্যন্ত কোনো বক্তব্য দেয়নি।
খালিস্তানপন্থীদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে বিবেচনা করে থাকে ভারত সরকার। দেশটি তার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে খালিস্তানপন্থীদের ‘হুমকি’ বলে মনে করে। শিখ আন্দোলনকারীরা ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে খালিস্তান নামে স্বাধীন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। ১৯৮০ এবং ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ভারতে বিদ্রোহ চলাকালে শিখ সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৯৮৪ সালে শিখবিরোধী দাঙ্গার ঘটনাও ঘটে।
ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তাঁর শিখ দেহরক্ষীর হাতে খুন হওয়ার পর সেই দাঙ্গা হয়েছিল। খালিস্তানপন্থী শিখ আন্দোলনকারীদের উৎখাত করতে পবিত্র শিখ মন্দিরে অভিযান চালানোর জন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়ার পরই ইন্দিরা গান্ধী হত্যার শিকার হন।
গত অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে কানাডা ভারতীয় কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে। ২০২৩ সালে কানাডার মাটিতে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরকে হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনে তাঁদের বিরুদ্ধে এসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
ভারতের বিরুদ্ধে বিদেশের মাটিতে খালিস্তানপন্থী শিখ নেতাদের হত্যার লক্ষ্য বানানোর অভিযোগ ওঠার এই ঘটনাটি একমাত্র নজির নয়। অর্থাৎ এরকম আরও ঘটনা আছে।
নিউইয়র্কে খালিস্তানপন্থী শিখ নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত থাকার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে সাবেক এক ভারতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ওই কর্মকর্তার নাম বিকাশ যাদব। গুরপতবন্ত সিং পান্নুন যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার দ্বৈত নাগরিক এবং ভারতীয় সমালোচক। ওই ঘটনায় ইতিমধ্যে নিখিল গুপ্ত নামে এক ভারতীয়কে চেকপ্রজাতন্ত্র থেকে গ্রেপ্তার করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের কোনো বাসিন্দার ওপর এ ধরনের হত্যাচেষ্টা নিয়ে সতর্ক করেছিল মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই। ২০২৩ সালের নভেম্বরে ভারত ঘোষণা দিয়েছিল, তারা আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগের তদন্ত করবে। তবে এ ঘোষণার পর এ নিয়ে ভারত এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে খুব কম কথাই বলেছে।
এই দুই ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অনেকটা খারাপ। সূত্র: প্রথম আলো
ফাইল ছবি
সবাইকে কাঁদিয়ে পরপারে পাড়ি জমালেন বাংলা সিনেমার মিষ্টি মেয়ে কবরী। করোনা আক্রান্ত হয়ে ১৩ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটে মারা যান এই অভিনেত্রী ও রাজনীতিক।
১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে জন্মগ্রহণ করেন কবরী। তার আসল নাম মিনা পাল। বাবা শ্রীকৃষ্ণদাস পাল এবং মা লাবণ্য প্রভা পাল। ১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে উঠেছিলেন তিনি। তারপর টেলিভিশন ও পরে সিনেমায়।
১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ ছবির মাধ্যমে সারাহ বেগম কবরীর অভিনয় জীবন শুরু। চট্টগ্রামের মেয়ে মিনা পাল চলচ্চিত্রের লাল-নীল জগতে পা দিয়েই নতুন নাম পান ‘কবরী’। পরিচালক সুভাষ দত্তই তাকে এই নাম দিয়েছিলেন বলে জানা যায়।
দক্ষ অভিনয় শৈলী দিয়ে ‘মিষ্টি মেয়ে’ হয়ে ওঠেন এই অভিনেত্রী। তারপর জনপ্রিয় নায়িকা হিসেবে চলচ্চিত্র দুনিয়ায় কবরীর শুধুই দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলা।
এরপর অভিনয় করেছেন হীরামন, ময়নামতি, চোরাবালি, পারুলের সংসার, বিনিময়সহ অসংখ্য সিনেমায়। আগন্তুকসহ জহির রায়হান নির্মিত উর্দু ছবি ‘বাহানা’ এবং ভারতের চলচ্চিত্র নির্মাতা ঋত্বিক ঘটকের ছবি ‘তিতাস একটি নদীর নাম’।
কবরী বিয়ে প্রথম করেন চিত্ত চৌধুরীকে। সম্পর্ক বিচ্ছেদের পর ১৯৭৮ সালে তিনি বিয়ে করেন সফিউদ্দীন সরোয়ারকে। ২০০৮ সালে তাদেরও বিচ্ছেদ হয়ে যায়। কবরী পাঁচ সন্তানের মা।
২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। যুক্ত ছিলেন অসংখ্য নারী অধিকার ও সমাজসেবামূলক সংগঠনের সঙ্গে। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭-তে প্রকাশিত হয়েছে তার আত্মজীবনীমূলক বই ‘স্মৃতিটুকু থাক’।
হঠাৎ খুসখুসে কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হলে করোনার নমুনা পরীক্ষা করান কবরী। ৫ এপ্রিল ফলাফল পজিটিভ আসে। ওই রাতেই তাকে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ৮ এপ্রিল দুপুরে তাকে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে আইসিইউতে নেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১৫ এপ্রিল বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অবশেষে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চিরবিদায় নিলেন নায়িকা।