a
ফাইল ছবি
ইউক্রেনে হামলা বন্ধ করার অনুরোধ জানাতে শুক্রবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লদামির পুতিনকে ফোন করেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ। রাশিয়ার মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ ইঙ্গিত দিয়েছেন, জার্মান চ্যান্সেলরের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে পুতিনের।
দুই নেতার ফোন কলের ব্যাপারে দিমিত্রি পেসকোভ বলেন, দুই নেতার মধ্যে কঠিন কিন্তু ভালো আলোচনা হয়েছে। তবে তাদের দুইজনের বাক্য বিনিময়কে সৌহার্দ্যপূর্ণ বলা যায় না। এটি ছিল কঠোরতর আলোচনা।
এদিকে গণমাধ্যম সিএনএন জানায়, জার্মান চ্যান্সেলরের কাছে পুতিন অভিযোগ করেছেন. ইউক্রেন শান্তি আলোচনা বিষয়ে সময়ক্ষেপণ করছে। রাশিয়া চাইছে দ্রুত সমাধান হোক কিন্তু ইউক্রেন সমঝোতার আলোচনা দীর্ঘায়িত করতে চাচ্ছে।
এ ব্যাপারে পুতিন চ্যান্সেলর শলৎজকে বলেন, এটা বলতে হয় সমঝোতার সময় বাড়ানোর সব চেষ্টা করছে কিয়েভ প্রশাসন। তারা একটির পর একটি অবাস্তব প্রস্তাব সামনে আনার চেষ্টা করছে। তা স্বত্ত্বেও সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতে রাশিয়া তৎপর।
এদিকে জার্মানির সরকারি দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিতে পুতিনকে অনুরোধ করেন। তাছাড়া মানবিক করিডোর তৈরির জন্যও তিনি পুতিনকে অনুরোধ জানান। সূত্র: সিএনএন
ফাইল ছবি:জেনারেল আজিজ ও পেন্টাগনের মুখপাত্র প্যাট রাইডার
বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিস্কার করলো মার্কিন প্রতিরক্ষা সদরদফতর ‘পেন্টাগন’।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে পেন্টাগনের মুখপাত্র মেজর জেনারেল প্যাট রাইডার বলেন, জেনারেল আজিজের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা গণতন্ত্র এবং আইনের শাসনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
ব্রিফিংয়ে প্যাটের কাছে এক সাংবাদিক জানতে চান, “পেন্টাগন কীভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে তার সামরিক ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব নির্দেশ করছে। কারণ বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজকে তার উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র তার ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার লঙ্ঘনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভুল পথে এগোচ্ছে। পুলিশ এবং র্যাবের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এরইমধ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
এছাড়া বর্তমান সরকার যে কোনও উপায়ে ক্ষমতা ধরে রাখতে নিরাপত্তা বাহিনীকে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে পেন্টাগন কী ভাবছে, আমি কী তা জানতে পারি?”
জবাবে পেন্টাগন মুখপাত্র বলেন, “হ্যাঁ- প্রশ্ন করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আজকের ব্রিফিং কক্ষে আপনাকে স্বাগতম। আপনি যেমন জানেন বা আপনি যে বিষয়টি উল্লেখ করলেন যে, স্টেট ডিপার্টমেন্ট জেনারেল আজিজ আহমেদের ওপর দুর্নীতির অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এটি গত মে মাসে করা হয়েছিল। মূলত বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এবং আইনের শাসনকে মজবুত করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র তার প্রতিশ্রুতিকে নিশ্চিত করেছে এবং পেন্টগন বাংলাদেশে দুর্নীতিবিরোধী যেকোনও কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি এ কথা বলে শেষ করতে চাই- বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের একই স্বার্থ ও মূল্যবোধের ভিত্তিতে অংশীদারিত্ব বজায় রয়েছে। বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল, সমুদ্রসীমা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলোতে আমরা একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় রাখি।” সূত্র: ইউএস ডিফেন্স
সংগৃহীত ছবি
জীবনে সফলতা পেতে কে না চায়। সফলতার জন্য মানুষ কত কী-ই না করে, তার শেষ নেই। তবে প্রকৃত সফলতা কী, তা আমরা অনেকে জানি না। মহান আল্লাহ যাদের সফল হিসেবে ঘোষণা করেছেন, তারাই প্রকৃত সফলকাম। তিনি পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে সফলকাম মানুষদের বর্ণনা দিয়েছেন। নির্দেশনা দিয়েছেন সেসব বিষয়ে, যেগুলো একজন মানুষকে প্রকৃতপক্ষে সফল করতে পারে।
°
পবিত্র কোরআনে তাকওয়া, ঈমান বিল গায়েব, পবিত্র কোরআন ও আগের কিতাবের ওপর বিশ্বাস, কিয়ামত ও আখিরাতে বিশ্বাস, সৎকাজে আদেশ অসৎ কাজে নিষেধ, নামাজ কায়েম, জাকাত প্রদান, আল্লাহর রাস্তায় সম্পদ ব্যয়, রাসুল (সা.)-এর ওপর ঈমান আনা ও তাঁর সহযোগিতা করা, তাঁর সুন্নতের অনুসরণ করা, শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিজের জীবন-সম্পদ ব্যয় করে আল্লাহর রাস্তায় লড়াই করা, আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর জন্য কাউকে ভালোবাসা বা ঘৃণা করা, সংকীর্ণ মনোভাব ত্যাগ করাকে সফলতা অর্জনের মাধ্যম বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। নিম্নে সেসব আয়াত তুলে ধরা হলো, যেখানে মহান আল্লাহ এই গুণে গুণান্বিতদের সফলকাম বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
°
ঈমান আনাঃ-
‘যারা অদৃশ্যের প্রতি ঈমান আনে, নামাজ কায়েম করে এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে। আর যারা ঈমান আনে তাতে, যা তোমার প্রতি নাজিল করা হয়েছে এবং যা তোমার আগে নাজিল করা হয়েছে। আর আখিরাতের প্রতি তারা পূর্ণ বিশ্বাস রাখে। তারা তাদের রবের পক্ষ থেকে হিদায়েতের ওপর রয়েছে এবং তারাই সফলকাম।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ৩-৫)
°
রাসুল (সা.)-এর অনুসরণঃ-
‘যারা অনুসরণ করে রাসুলের, যে উম্মি নবী; যার গুণাবলি তারা নিজদের কাছে তাওরাত ও ইঞ্জিলে লিখিত পায়, যে তাদের সৎকাজের আদেশ দেয় ও বারণ করে অসৎ কাজ থেকে এবং তাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল করে, আর অপবিত্র বস্তু হারাম করে। আর তাদের থেকে তাদের ওপর থাকা বোঝা ও শৃঙ্খল অপসারণ করে। সুতরাং যারা তাঁর প্রতি ঈমান আনে, তাঁকে সম্মান করে, তাঁকে সাহায্য করে এবং তাঁর সঙ্গে যে নূর নাজিল করা হয়েছে তা অনুসরণ করে, তারাই সফলকাম।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৫৭)
°
নামাজ কায়েম ও আখিরাতে দৃঢ় বিশ্বাসঃ-
‘এগুলো প্রজ্ঞাপূর্ণ কিতাবের আয়াত, সৎকর্মশীলদের জন্য হিদায়েত ও রহমতস্বরূপ, যারা নামাজ কায়েম করে এবং জাকাত দেয়, আর তারাই আখিরাতে দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করে; তারাই তাদের রবের পক্ষ থেকে হিদায়েতের ওপর এবং তারাই সফলকাম।’ (সুরা : লুকমান, আয়াত : ২-৫)
°
আল্লাহর রাস্তায় আহ্বানকারীঃ-
‘আর যেন তোমাদের মধ্য থেকে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহ্বান করবে, ভালো কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফলকাম।’ (সুরা : আলে-ইমরান, আয়াত : ১০৪)
°
যারা সেই আহ্বানে সাড়া দেয় তারাও সফলকাম। ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনদের যখন আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর প্রতি এ মর্মে আহ্বান করা হয় যে তিনি তাদের মধ্যে বিচার মীমাংসা করবেন, তাদের কথা তো এই হয় যে তখন তারা বলে, ‘আমরা শুনলাম ও আনুগত্য করলাম।’ আর তারাই সফলকাম।’ (সুরা : নূর, আয়াত : ৫১)
°
অধিক নেক আমলের অধিকারীঃ-
কিয়ামতের দিন যাদের আমলের পাল্লা ভারী হবে, তারাও সফলকাম। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর সেদিন পরিমাপ হবে যথাযথ। সুতরাং যাদের পাল্লা ভারী হবে, তারাই হবে সফলকাম।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৮)
°
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর যাদের পাল্লা ভারী হবে তারাই হবে সফলকাম।’ (সুরা : মুমিনুন, আয়াত : ১০২)
°
শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াইকারীঃ-
বিশ্বব্যাপী আল্লাহর দ্বিন ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জাহিলিয়াতের ঘোর অন্ধকার থেকে উম্মাহকে মুক্ত করার জন্য জান-মাল দিয়ে লড়াই করেছেন সাহাবায়ে কেরাম। যারা তাদের মতো বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আল্লাহর রাস্তায় লড়াই করবে, আল্লাহ তাদের সফলকাম বলে ঘোষণা করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘কিন্তু রাসুল ও তাঁর সঙ্গে মুমিনরা তাদের মাল ও জান দিয়ে লড়াই করে, আর সেসব লোকের জন্যই রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ এবং তারাই সফলকাম।’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ৮৮)
°
যারা মানুষের হক আদায় করেঃ-
প্রত্যেক মানুষের ওপরই তার আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও মিসকিন-মুসাফিরদের হক রয়েছে। যারা তা যথাযথভাবে পালন করবে আল্লাহ তাদের সফল করবেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘অতএব আত্মীয়-স্বজনকে তাদের হক দিয়ে দাও এবং মিসকিন ও মুসাফিরকেও। এটি উত্তম তাদের জন্য, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি চায় এবং তারাই সফলকাম।’ (সুরা : রুম, আয়াত : ৩৮)
°
যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের ভালোবাসা প্রাধান্য দেয়
‘তুমি পাবে না আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাসী এমন কোনো সম্প্রদায়, যারা ভালোবাসে আল্লাহ ও (পাশাপাশি) তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধাচরণকে (ভালোবাসে)—হোক না এই বিরুদ্ধাচরণকারী তাদের পিতা, অথবা পুত্র, অথবা ভাই, অথবা জ্ঞাতি-গোষ্ঠী হয়। এদের অন্তরে আল্লাহ সুদৃঢ় করেছেন ঈমান এবং তাদের শক্তিশালী করেছেন তাঁর পক্ষ থেকে রুহ দ্বারা। তিনি তাদের জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত; সেথায় তারা স্থায়ী হবে; আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। এরাই আল্লাহর দল। জেনে রেখো, আল্লাহর দলই সফলকাম।’ (সুরা : মুজাদালা, আয়াত : ২২)
°
যারা অন্য মুমিনকে নিজের ওপর প্রাধান্য দেয়
‘আর মুহাজিরদের আগমনের আগে যারা মদিনায় নিবাস হিসেবে গ্রহণ করেছিল এবং ঈমান এনেছিল (তাদের জন্যও এ সম্পদে অংশ রয়েছে), আর যারা তাদের কাছে হিজরত করে এসেছে তাদের ভালোবাসে। আর মুহাজিরদের যা প্রদান করা হয়েছে তার জন্য এরা তাদের অন্তরে কোনো ঈর্ষা অনুভব করে না। এবং নিজেদের অভাব থাকা সত্ত্বেও নিজেদের ওপর তাদের অগ্রাধিকার দেয়। যাদের মনের কার্পণ্য থেকে রক্ষা করা হয়েছে, তারাই সফলকাম।’ (সুরা : হাশর, আয়াত : ৯)
°
মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন