a
ফাইল ছবি
ইহুদিবাদী ইসরায়েলের একজন সামরিক কমান্ডার বলেছেন, যদি যুদ্ধ শুরু হয় তাহলে লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ প্রতিদিন অধিকৃত ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ২,৫০০ রকেট ছুঁড়তে পারবে। এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
সামরিক কমান্ডার বলেন, এই কারণে হিজবুল্লাহর সাথে যুদ্ধে আমরা আরও বেশি রকেট হামলার আশঙ্কা করছি। এ সংখ্যা আগের তুলনায় পাঁচগুণ বা ২,০০০টি ছাড়িয়ে যেতে পারে। মূলত আমরা ইসরায়েলের দিকে প্রতিদিন ১,৫০০ থেকে ২,৫০০ রকেট হামলার আশঙ্কা করছি।
খবরে বলা হচ্ছে, চলতি বছরের মে মাসে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে ১১ দিনের যুদ্ধ করেছিল। এ যুদ্ধে হামাস ইসরায়েলের দিকে প্রায় ৪৪০০ রকেট নিক্ষেপ করে।
ইসরায়েল বলছে, ওই রকেট হামলার ৯০ শতাংশই ঠেকিয়ে দিয়েছে তারা। মাত্র ৩০০টি রকেট দেশটির বিভিন্ন জেলায় আঘাত হানতে সক্ষম হয়।
২০০৬ সালে হিজবুল্লাহ-ইসরায়েল যুদ্ধে দেখা যায়, ব্যাপক সংখ্যক রকেট ছোঁড়ে হিজবুল্লাহ। ইসরায়েল সেনাবাহিনীর হোম ফ্রন্ট কমান্ডের প্রধান উরি গর্ডিন বলেন, মে মাসে তেল আবিব ও আশদোদের মতো শহরগুলোতে সর্বোচ্চ সংখ্যক রকেট হামলা হয়েছে। যা ইসরায়েলের ইতিহাসে এমনটা আর হয়নি।
খবরে বলা হচ্ছে, চলতি বছরের মে মাসে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে ১১ দিনের যুদ্ধ করেছিল। এ যুদ্ধে হামাস ইসরায়েলের দিকে প্রায় ৪৪০০ রকেট নিক্ষেপ করে। ইসরায়েল বলছে, ওই রকেট হামলার ৯০ শতাংশই ঠেকিয়ে দিয়েছে তারা। মাত্র ৩০০টি রকেট দেশটির বিভিন্ন জেলায় আঘাত হানতে সক্ষম হয়।
ইসরায়েলের একটি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, দেশটির সেনাবাহিনী লেবাননে স্থিতিশীলতা দেখতে চায়। তারা মনে করে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ লেবাননে অস্থিতিশীলতার উৎস। এই গ্রুপটি ইরানের স্বার্থের জন্য রাষ্ট্রের সম্পদ ব্যবহার করে। হিজবুল্লার বিরুদ্ধে সামরিক সক্ষমতাসহ সবরকম পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে আসছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
ফাইল ছবি
সামরিক শক্তিতে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে চীন। নতুন আরও ১১০টি ক্ষেপণাস্ত্র সাইলো নির্মাণ করেছে দেশটি। যা পারমাণবিক অস্ত্রের জন্য ব্যবহৃত হবে। এমন খবরে উদ্বেগ জানিয়েছেন পেন্টাগন কর্মকর্তা এবং রিপাবলিকান দলের কংগ্রেস সদস্যরা।
আমেরিকান ফেডারেশন অব সায়েন্টিস্টসের (এএফএস) একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন তাদের সিনজিয়াং অঞ্চলের পূর্বে হামির কাছে সাইলোর একটি নতুন ক্ষেত্র নির্মাণ করছে। স্যাটেলাইটে এমন ছবিই ধরা পড়েছে।
জানা যায়, চীনের দক্ষিণপূর্বে ৩৮০ কিলোমিটার দূরে ইউমেনে একটি মরু এলাকায় প্রায় ১২০টি সাইলো নির্মাণের কাজ করছে বেইজিং।
রয়টার্স জানায়, সাইলো হল একটি ভূগর্ভস্থ স্থাপনা, যেখানে বোমা বহনকারী নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র নির্দিষ্ট লক্ষ্যে ছোড়ার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়।
চীনের এই পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ বাড়ানোর পদক্ষেপকে জুলাইয়ের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর উদ্বেগজনক আখ্যা দিয়ে বলে, পারমাণবিক অস্ত্রের নূন্যতম মজুদ বজায় রাখার দীর্ঘদিনের নীতি থেকে দূরে সরে আসছে বেইজিং।
রিপাবলিকান দলের কংগ্রেস সদস্য মাইক টার্নার বলেন, চীনের পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ উদ্বেগজনক। তারা এটাও স্পষ্ট করেছে, সেগুলো মোতায়েন করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাষ্ট্র মিত্র দেশগুলোকে হুমকি দেওয়ার জন্য। সূত্র: রয়টার্স।
ছবি সংগৃহীত
নিউজ ডেস্ক: প্রতিদিন আমাদের যে সংকটগুলোর মুখোমুখি হতে হয়, সেগুলো দক্ষতা এবং পেশাদারিত্বের সঙ্গে সামাল দেওয়ার জন্য ভালো ও যোগ্য নেতৃত্ব অপরিহার্য। অন্যথায়, এক সংকট আরেক সংকটের জন্ম দেবে এবং শেষ পর্যন্ত তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। যদি নেতৃত্ব সংকট মোকাবেলায় যথেষ্ট দক্ষ না হয়, তাহলে সংকটের পরিণতি সমাজের জন্য মারাত্মক হয়ে দাঁড়াবে এবং সমাজ যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে।
আমরা জাতি হিসেবে শুরু থেকেই বহু সংকটের মধ্য দিয়ে গিয়েছি এবং এর মূল্যও চোকাতে হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে দুই প্রেসিডেন্টের হত্যাকাণ্ড। উভয় ক্ষেত্রেই গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ব্যর্থতা উপেক্ষা করা যায় না। ২০০৫ সালের আগস্টের ঘটনা এবং ২০০৯ সালের বিডিআর হত্যাকাণ্ড আমাদের সমাজকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। অনেকেই মনে করেন, এই দুটি ঘটনায় ভারত সরাসরি জড়িত ছিল।
সংকট ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত কঠিন একটি কাজ এবং এটি পরিচালনার জন্য পেশাদার ও অভিজ্ঞ লোকজনের প্রয়োজন। কিন্তু প্রতিবারই আমরা সংকটের মূল কারণ চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছি। এটি একটি জাতীয় ব্যর্থতা এবং এখনো পর্যন্ত আমরা একটি কার্যকর সংকট ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারিনি।
সম্প্রতি, আমরা ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে সরকার গঠনের প্যাটার্ন নির্ধারণ নিয়ে নতুন সংকট প্রত্যক্ষ করেছি। আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল নিজেই স্বীকার করেছেন যে, বিপ্লব পরবর্তী সময়ের জন্য উপযুক্ত সরকার গঠনের বিষয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি একটি গুরুতর ভুল এবং সংকট মোকাবেলায় ইতিহাসের জ্ঞান অপরিহার্য।
এই সময়ে একটি জাতীয় বা বিপ্লবী সরকার গঠিত হওয়া উচিত ছিল, যেখানে ড. ইউনুস রাষ্ট্রপতি বা প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে এবং কর্নেল (অব.) অলি আহমদ রাষ্ট্রপতি বা প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। উপদেষ্টাদের বেশিরভাগ বিএনপি থেকে এবং কিছু উপদেষ্টা অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সমন্বয়কদের মধ্যে থেকে নির্বাচিত হওয়া উচিত ছিল।
সময় এখনো শেষ হয়ে যায়নি। দ্রুত এই উদ্যোগ নেওয়া গেলে নির্বাচন এবং সংস্কার সংক্রান্ত অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক ও সংকট বন্ধ করা সম্ভব হবে।
জাতিকে একত্রিত হয়ে জাতীয় সংকট মোকাবিলা করতে হবে এবং এটিই উচ্চ পর্যায়ের সংকট ব্যবস্থাপনার আদর্শ রূপ।
সম্প্রতি আমরা একের পর এক সংকটের সম্মুখীন হচ্ছি, কিন্তু কার্যকর সমাধান দেখা যাচ্ছে না। এটি স্পষ্টভাবে আমাদের নেতৃত্বের অযোগ্যতার প্রতীক।
সচিবালয়ে আনসার বাহিনীর সাম্প্রতিক সংকট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য সরাসরি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র সমন্বয়কদের হত্যা আরও একটি অশনি সংকেত। বিভিন্ন ক্যাডারের কর্মকর্তারা প্রশাসনকে অস্থিতিশীল করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সংকটের মুখে ফেলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা যেকোনো সময় ধর্মঘটের ডাক দিয়ে সরকারকে পঙ্গু করতে পারেন।
সচিবালয়ের ভবনে সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বর্তমান সরকারকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে, সরকারের ভেতরেই বিরোধী শক্তি রয়েছে এবং তারা সরাসরি সরকারের মূল অংশে আঘাত হানতে সক্ষম।
এই সংকটগুলো আমাদের কাছে পরিষ্কার সংকেত দেয় যে, সরকারি যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে কাজ করছে না। এগুলো সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করা সক্রিয় শক্তির চিহ্ন, যারা বহুমাত্রিক সংকট সৃষ্টি করতে পিছপা হবে না। ভারতের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় তারা আমাদের জন্য বিশাল সমস্যা তৈরি করবে এবং সরকারকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করবে।
ভবিষ্যতের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক সংকট মোকাবিলার জন্য আমাদের কী প্রস্তুতি রয়েছে, সেটি এখন সবার উদ্বেগের বিষয়। সংকট মোকাবেলায় পরিপক্বতা ও প্রজ্ঞার সঙ্গে আমাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
পলাশীর যুদ্ধের পর লর্ড ক্লাইভ যদি মাত্র কয়েকজন ইংরেজ অফিসার নিয়ে প্রশাসন চালাতে পারেন, তাহলে আমরা কেন পারব না? জিয়াউর রহমান আমাদের সামনে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি সীমিত সংখ্যক পেশাদার সামরিক ও বেসামরিক অফিসারের সহায়তায় প্রশাসন দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করেছিলেন। বহুমুখী সমস্যা মোকাবিলা করেও তিনি অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে তা দূর করেছিলেন এবং আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল নেতা হিসেবে স্বীকৃত।
আমাদের এখনো এমন কিছু উজ্জ্বল বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তা রয়েছেন, যারা জিয়াউর রহমান ও এরশাদের সঙ্গে কাজ করেছেন। তাদের খুঁজে বের করে জাতির জন্য কাজে লাগানো উচিত।
সরকারের কার্যকারিতা, গতিশীলতা এবং পেশাদারিত্ব বাড়ানোর জন্য মন্ত্রিসভায় দ্রুত পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিতে হবে এবং অভিজ্ঞ ও দক্ষ ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আল্লাহ আমাদের সঙ্গে আছেন এবং বিজয় আমাদেরই হবে, ইনশাআল্লাহ।
লেখক: সম্পাদক, সামরিক ইতিহাস জার্নাল এবং আইন ও ইতিহাসের অধ্যাপক