ইরানের শীর্ষস্থানীয় সেনা কমান্ডার মেজর জেনারেল আব্দুর রহীম মুসাভি বলেছেন, পাইলটবিহীন বিমান বা ড্রোন তার দেশের সশস্ত্র বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কোন যুদ্ধে প্রয়োজনে তা ব্যবহার করা হবে।
ইরানের জাতীয় সেনাবাহিনী দিবস উপলক্ষে রবিবার এক সামরিক কুচকাওয়াজের অবকাশে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। কুচকাওয়াজে ইরানের সর্বশেষ সামরিক অর্জন বিশেষ করে নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও ড্রোন প্রদর্শন করা হয়।
জেনারেল মুসাভি বলেন, আজকের কুচকাওয়াজে আপনারা যা দেখলেন তা ইরানের সামরিক শক্তির সামান্য নমুনা মাত্র। করোনা মহামারি মাথায় রেখে স্বল্প পরিসরে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আজ আপনারা ইরানের ক্রমবর্ধমান ড্রোন শক্তি দেখেছেন। আমেরিকার কথিত সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের বছরগুলোতে ধারাবাহিকভাবে এই শক্তির উন্নয়ন ঘটানো হয়েছে।
জেনারেল মুসাভি বলেন, আজ ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য ড্রোন একটি বড় ধরনের শক্তিমত্তা ও ‘ট্রাম্পকার্ড’ হিসেবে আবির্ভূত এবং প্রয়োজন হলে যে কোনো যুদ্ধে তা ব্যবহার করা হবে।
গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যুদ্ধ এখনো কোনো পক্ষ জয় পাইনি। প্রতিদিন শোনা যায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও মৃত্যুর খবর।
বৃস্পতিবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞের মতপ্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই দেশের শান্তির গন্তব্য বহুদূরে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ নিয়ে যুদ্ধের বর্ষপূর্তির প্রাক্কালে পুতিন সেই নির্দেশের সমর্থনে কথাও জানান। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনের পক্ষে সমর্থন খুঁজে বেড়াচ্ছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পুতিন যখন জাতীয় ভাষণে জ্বালাময়ী কথা বলছেন, ঠিক তখনই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি খেরসনে রাশিয়ার হামলার শোকে বিলাপ করছেন।
তবে আলজাজিরার বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন মত দিয়েছেন। অনেকেই বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন কারও পর্যাপ্ত অস্ত্র নেই। আগ্রাসী সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র হিসেবে রাশিয়াকে দুর্বল করে দেওয়ার জন্য জয় আসা উচিত বলেও মনে করেন অনেকে। এ ছাড়া রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘ সময় ধরে চলতে পারে।
যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে আশঙ্কার যেন শেষ নেই দাবি করে তিনি বলেন, দুই দেশের কোনো পক্ষেরই জয়ের সরাসরি কোনো পথ পরিষ্কার নয়। ইউক্রেনকে ধ্বংস করে দেওয়ার ক্ষেত্রে রাশিয়ার লক্ষ্যে পরিবর্তন আসেনি বলে মনে করেন ওয়াশিংটনভিত্তিক জেমসটাউন ফাউন্ডেশনের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক পাভেল লুজিন।
জার্মানির ব্রেমেন বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাসবিদ নিকোলায় মিত্রোখিন বলেন, মৌলিক দৃশ্যকল্প রাশিয়া কিংবা ইউক্রেন কোনো দেশই তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না।
রাশিয়ার গোটা দোনবাস দখলের সক্ষমতা নেই বললেই চলে। দেশটি জাতি হিসেবে ইউক্রেনকে ধ্বংস করে দেবে এটি অনেকের ধারণা।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর সাবেক উপপ্রধান ইহর রোমানেঙ্কো বলেন, জানুয়ারির শেষ দিক থেকে রাশিয়ান বাহিনী অগ্রসর হচ্ছে। খারকিভের কিপিয়ানস্ক থেকে দীর্ঘ একটি যুদ্ধক্ষেত্র রয়েছে। পাঁচ দিক— কুপিয়ানস্ক, লেম্যান, বাখমুত, আদভিভকা ও শাখতার থেকে ভুহলেদার পর্যন্ত সব পথ, হাজার কিলোমিটারের বেশি হবে।
লন্ডনের কিংস কলেজের রুশ রাজনীতির অধ্যাপক গুলনাজ শরাফুতদিনোভা বলেন, যুদ্ধের শুরুতে থাকা লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি সামরিক বিপর্যয় সত্ত্বেও এখনো পুতিনের অবস্থান সুদৃঢ়। সূত্র: যুগান্তর
ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসিন ফখরেহ জাদেহকে হত্যার কথা স্বীকার করলো ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাবেক প্রধান ইয়োসি কোহেন। তিনি স্বীকার করেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে একের পর এক হামলা ও ফখরেহ জাদেহকে হত্যায় ইসরায়েলের সম্পৃক্ততা ছিলো। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেল ১২ কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। ইয়োসি কোহেন আরও বলেছেন, ইরানের বিজ্ঞানীরা যদি তাদের পেশা পরিবর্তন করতে চান এবং ইসরায়েলকে আঘাত না করার নিশ্চয়তা প্রদান করেন, তাহলে আমরা তাদের বের হওয়ার পথ দেখানোর প্রস্তাব দিতে পারি।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর তেহরানের কাছে গাড়ি বহরের মধ্যে মোহসেন ফখরেহ জাদেহকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ইরান এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে দোষারোপ করে আসছিল। তবে ঘটনার সময় ইসরায়েল এ ঘটনা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। এবার মোসাদের সাবেক প্রধান এই হত্যার সত্যতা নিশ্চিত করলেন।