a
ফাইল ছবি
করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে ২১ জানুয়ারি থেকে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে মন্ত্রি পরিষদ।
এছাড়া কোভিড সংক্রমণরোধকল্পে ৫টি জরুরি নির্দেশনা জারী করেছে এই বিভাগ।
নির্দেশনাগুলো হচ্ছে -
১) ২১ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে।
২) বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজ নিজ ক্ষেত্রে অনুরূপ ব্যবস্থাগ্রহণ করবে।
৩) রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় সমাবেশ, অনুষ্ঠানসমূহে ১০০ জনের বেশি সমাবেশ করা যাবে না।
এসব ক্ষেত্রে যারা যোগদান করবেন তাদের অবশ্যই ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট/২৪ ঘণ্টার মধ্যে পিসিআর সার্টিফিকেট আনতে হবে।
৪) সরকারি-বেসরকারি অফিস শিল্প কারখানাসমূহের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবশ্যই ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে দায়িত্ববহন করবেন।
৫) বাজার, মসজিদ, বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট ও রেলস্টেশনসহ সব ধরনের জনসমাবেশে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি মনিটর করবেন। সূত্র: যুগান্তর
বেগম খালেদা জিয়া
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শরীরে করোনার সংক্রমণ খুবই সামান্য বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন। বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হসপিটালে খালেদা জিয়ার সিটি স্ক্যান শেষে বাসায় পৌঁছার পর তিনি সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানান।
ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, সিটি স্ক্যান রিপোর্ট অনুযায়ী বেগম খালেদা জিয়ার শরীরে করোনার সংক্রমণ খুবই সামান্য। যে কারণে তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন। এর আগে করোনায় আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে তার সিটিস্ক্যান করানো হয়।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৪০ মিনিটে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার সিটিস্ক্যান শেষে ১০টা ২৪ মিনিটে আবারও বাসায় নেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার বিকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবন ফিরোজায় খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে এক ব্রিফিংয়ে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের প্রধান মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়ার সিটিস্ক্যান করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খুব দ্রুত খালেদা জিয়ার সিটিস্ক্যান করানো হবে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার সকালে জ্বর আসলেও এখন তার শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। তার ব্লাড রিপোর্ট ভালো। আমরা তার সিটিস্ক্যান করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যে কোনো সময় এ সিটিস্ক্যান করানো হবে। ইতোমধ্যেই আমরা সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার অংশ হিসেবে গত ১০ এপ্রিল তিনি নমুনা দেন। ওই রাতেই ফল পজিটিভ আসে।
পরদিন রোববার বিকেলে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের করোনা আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। খালেদা জিয়া ছাড়াও তার গৃহকর্মী ফাতেমাসহ বাসার মোট ৯ জন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
ছবি সংগৃহীত
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়ায় কম্বোডিয়ায় ভিসা নিষেধাজ্ঞার আরোপের সঙ্গে বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি স্থগিত করলো যুক্তরাষ্ট্র। রোববারের (২৩ জুলাই) সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি) নিরঙ্কুশ বিজয় ঘোষণা করেছে। এরপরেই যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা কম্বোডিয়ায় কিছু বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি স্থগিত করছে এবং গণতন্ত্রকে দুর্বল করেছে এমন ব্যক্তিদের ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে বলেছেন, কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের দল সিপিপি কার্যকর কোনো বিরোধী দলের মুখোমুখি না হওয়ায় ওয়াশিংটন উদ্বিগ্ন।
মিলার বলেন, নির্বাচনের আগে কম্বোডিয়ার কর্তৃপক্ষ রাজনৈতিক বিরোধী দল, গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের বিরুদ্ধে হুমকি ও হয়রানির ধারায় লিপ্ত হয়েছে। এটি দেশটির সংবিধানের চেতনা এবং কম্বোডিয়ার আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতাকে ক্ষুণ্ণ করেছে।
তিনি আরও বলেন, এর প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রকে দুর্বল করে এমন ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নিয়েছে এবং কিছু বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি স্থগিত করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র কম্বোডিয়ার কর্তৃপক্ষকে সত্যিকারের বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিচার বন্ধ এবং সরকারের সমালোচকদের দোষী সাব্যস্ত করা বন্ধ করতে এবং দেশের আন্তর্জাতিক অবস্থান উন্নত করার জন্য স্বাধীন গণমাধ্যমকে হস্তক্ষেপ ছাড়া কাজ করতে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
কম্বোডিয়ার নির্বাচনে কোনো শক্তিশালী বিরোধী দল ছিল না। ৩৮ বছর ধরে কম্বোডিয়া শাসন করা স্বঘোষিত 'শক্তিশালী নেতা' হুন সেন নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে পশ্চিমাদের উদ্বেগকে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। জেল জুলুম ও মামলা দিয়ে বিরোধী দলগুলোকে বাইরে রাখা হয়েছিল। সবাই নিশ্চিত ‘নামমাত্র’ এ ভোটে আবারও জয়ী হয়েছেন হুন সেনের কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি)।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশটি টানা ৩৮ বছর শাসন করছেন কম্বোডিয়ার ‘গণতান্ত্রিক মডেলের স্বৈরশাসক’ প্রধানমন্ত্রী হুন সেন। এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি এই নামমাত্র ‘গণতান্ত্রিক’ শাসক ১৯৮৫ সাল থেকে তার ক্ষমতা ধরে রেখেছেন। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর একের পর এক কঠোর ব্যবস্থা প্রয়োগ করেছেন। এমনকি দেশের আদালতকেও ব্যবহার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে। সামরিক বাহিনী, পুলিশসহ গোয়েন্দা গোষ্ঠীকে রেখেছেন হাতের মুঠোয়। সংসদ সদস্যদের পদমর্যাদা থেকে সরিয়ে দেওয়াসহ নেতাদের বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে গ্রেপ্তার এবং নির্বাসনে পাঠিয়েছেন।
বাংলাদেশে নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিপরীতমুখী অবস্থানের কারণে দেশে রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে। বিগত দুটি নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ায় বিএনপি এবারে সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফা দাবিতে অনড় রয়েছে। তারা রাজপথেই চূড়ান্ত ফয়সালা করে নির্বাচনে হাটার চেষ্টা করছে।
অপরপক্ষে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নির্বাচন প্রশ্নে সংবিধানের
দোহাই দিয়ে আবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন করাটাই দলটির চূড়ান্ত লক্ষ্য।
দুই পক্ষই যখন তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন আলোচনা বা সমঝোতার কোনো সম্ভাবনা কার্যত আর থাকছে না; বরং অনিশ্চয়তা বাড়ছে।
আগামী ডিসেম্বরের শেষে অথবা জানুয়ারির শুরুতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার কথা ভাবছে নির্বাচন কমিশন। ওই সময়ে ভোট হলে নভেম্বরেই তফসিল ঘোষণা করতে হবে।
আর সরকার যদি গত ২০১৪ সাল ও ২০১৮ সালের ন্যায় এক তরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যায়, তাতে দেশে অনন্য বিশৃংখলার সৃষ্টি হবে, যা বিগত যে কোন সময়ের তুলনা বেশি বৈ কম হবেনা। বিশেজ্ঞদের ধারণা, যদি একতরফা নির্বাচনে দেশে কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, তবে সুযোগ বুঝে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্যান্য মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বাংলাদেশকে কম্বোডিয়ার মতো অবরোধ ও ভিসা নিষাধাজ্ঞাও দিতে পারে, যার জুজুর ভয় তারা আগে থেকেই দিয়ে আসছে!
লেখক: মোহা. খোরশেদ আলম, সম্পাদক, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
তথ্যসূত্র: রয়টার্স, বিবিসি ও নিউ ইয়র্ক টাইমস