a
সংগৃহীত ছবি
পরিবর্তনের জন্য বিপ্লব যেমন সরকার পরিবর্তন করে, তেমনি সমাজ পরিবর্তনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আমরা একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করি। কিন্তু ১৯৭১-পরবর্তী সময়ে আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে সেই বিপ্লব জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, তারা দেশের মানুষের প্রতি তাদের অঙ্গীকার ভুলে গিয়েছিল।
বাংলাদেশে অতীতে কয়েকটি বিপ্লব ঘটেছে, তবে আজ পর্যন্ত জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি। ১৯৭৫ সালের আগস্ট বিপ্লব শেখ মুজিবের একনায়কতন্ত্রের পতন ঘটালেও, তার লক্ষ্য সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত করতে ব্যর্থ হয় এবং ইতিহাসে এটি অসমাপ্ত বিপ্লব হিসেবে পরিচিত হয়ে যায়। কিন্তু ৭ নভেম্বর ১৯৭৫-এ সংঘটিত সৈনিক-জনতা বিপ্লব জাতিকে রক্ষা করেছিল এবং জিয়াউর রহমানকে ক্ষমতায় এনেছিল।
সৈনিক-জনতা বিপ্লবের ফসল জিয়াউর রহমান সময়ের উপযুক্ত নেতা হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন। সেই সংকটময় মুহূর্তে তিনি জাতিকে রক্ষা করেন এবং দেশকে সঠিক পথে ফেরান। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে থেকেও তিনি দেশকে স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যান এবং আধুনিক বাংলাদেশের ভিত্তি গড়ে তোলেন। জিয়াউর রহমানের নেতৃত্ব বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা তাকে হারাই।
অনেকে মনে করেন, বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদী রাজনীতির শিকার হয়েছিলেন তিনি। জিয়াউর রহমানের উত্থানের ফলে ভারত বাংলাদেশে তাদের নিয়ন্ত্রণ হারায় এবং তাকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য একটি মিশনে নামে। ১৯৮১ সালের মে মাসে, তাদের স্থানীয় সামরিক এজেন্টদের মাধ্যমে ভারত এই মিশনে সফল হয়।
এরপর জাতি নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়ে, এবং কয়েক মাসের মধ্যে এক রক্তপাতহীন সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় আসেন। তিনি ভারতপন্থী নেতা হিসেবে পরিচিত হলেও, তার শাসনামলে বিশাল অবকাঠামো উন্নয়ন সাধিত হয়। তবে, তিনি গণতান্ত্রিক চর্চাকে ধ্বংস করেন এবং তার শাসনামলে সমাজে ব্যাপক দুর্নীতির বিস্তার ঘটে। ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরের গণঅভ্যুত্থলের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করা হয়।
২০০৬ সালের শেষ পর্যন্ত দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা চলমান ছিল, কিন্তু পরে মঈনউদ্দীন-ফখরুদ্দীন সরকার ভারত-আমেরিকা জোটের সমর্থনে ক্ষমতায় আসে। এই সরকার শাসন পরিচালনায় ব্যর্থ হয় এবং ২০০৮ সালে ভারতের নির্দেশে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়।
এরপর ভারত বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুরোপুরি আধিপত্য বিস্তার করে এবং ঐতিহাসিক বিডিআর হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেশের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়। এই ঘটনাটি জাতির জন্য এক গভীর সংকট তৈরি করে।
শেখ হাসিনা ভারতের প্রকাশ্য সমর্থনে তার পিতার মতোই ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেন এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের নির্মূল করতে সম্ভাব্য সবকিছু করেন। বিএনপি ও জামাতের নেতাকর্মীরা তার শাসনামলে চরম নির্যাতন ও দুঃখ-কষ্টের শিকার হয়। কিন্তু তারা পরিবর্তনের আশা ছাড়েনি এবং ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যায়।
বিএনপি ও জামাত জনগণের সহানুভূতি অর্জন করলেও, তারা শেখ হাসিনার পতনের জন্য কার্যকর কোনো পথ বের করতে পারেনি। তবে, তারা পরিবর্তনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে সফল হয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লব বিএনপি ও জামাতের দীর্ঘদিনের প্রস্তুতির ফলে সম্ভব হয়েছিল। বাংলাদেশের জনগণ বহুদিন ধরে পরিবর্তনের অপেক্ষায় ছিল এবং ছাত্রদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আন্দোলন তাদের সেই স্বপ্ন পূরণের সুযোগ করে দেয়।
জাতি সাম্প্রতিক জুলাই বিপ্লবের প্রতিটি অংশগ্রহণকারীর ভূমিকা সম্পর্কে সচেতন। বিশেষত, ছাত্রনেতারা, যাদের অনেকেই শিবিরের সদস্য ছিলেন, বিপ্লবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বিপ্লবের মোড় ঘুরে যায় যখন শিবির কর্মী আবু সাইয়েদ স্বেচ্ছায় দেশের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেন। এই আত্মত্যাগ আন্দোলনে নতুন গতি সঞ্চার করে। শানতা, ওয়াসিম, সাকিব তামিম, মুগ্ধ, রুদ্র, শাকিল, নায়িমা ও সুমাইয়া সহ আরও অনেকে আবু সাইয়েদের পথ অনুসরণ করেন এবং জীবন উৎসর্গ করেন, যার ফলে বিপ্লব সফল হয়।
কয়েকশো মানুষের জীবন ও কয়েক হাজার মানুষের সীমাহীন কষ্টের বিনিময়ে জুলাই বিপ্লব সফল হয়। ছাত্রনেতারা বিপ্লবের প্রধান কারিগর হলেও, বিএনপি, জামাত, ইসলামপন্থী শক্তি এবং সাধারণ জনগণও এই বিপ্লবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। যদি কোনো গোষ্ঠী এককভাবে এই বিজয়ের দাবি করে, তাহলে তা বিভেদ সৃষ্টি করবে এবং দেশকে বিপদের দিকে ঠেলে দেবে।
একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পরিবর্তে জাতীয় বিপ্লবী সরকার গঠন করা উচিত ছিল, কিন্তু এই সিদ্ধান্ত ভুলভাবে নেওয়া হয়েছে। তবে এখনো সময় শেষ হয়ে যায়নি। অধ্যাপক ড. ইউনূসের নেতৃত্বে একটি জাতীয় বিপ্লবী সরকার গঠন করা যেতে পারে, যেখানে সব পক্ষের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হবে।
এটি সুস্পষ্ট যে বিএনপি ও জামাতের মধ্যে দ্বন্দ্ব তীব্র আকার ধারণ করতে যাচ্ছে এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (KUET) সাম্প্রতিক ঘটনা এর অন্যতম উদাহরণ। যখন তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিপ্লবকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে পারত, তখন তাদের মধ্যে এই বিভেদ অত্যন্ত অনভিপ্রেত।
বিএনপি ও জামাত উভয়েরই মনে রাখতে হবে যে, এই দ্বন্দ্ব কারও জন্যই সুফল বয়ে আনবে না, বরং উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশের জনগণ সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এখন বিএনপির নেতৃত্বে চলতে হবে এবং জামাতকে তাদের সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে, একইভাবে ছাত্র সংগঠনগুলোকেও সংযত থাকতে হবে। বিএনপিকে বাদ দেওয়ার জন্য কোনো গোপন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হলে তা জাতীয় বিপর্যয় ডেকে আনবে।
বিএনপি বাংলাদেশের সবচেয়ে বিশ্বস্ত জাতীয়তাবাদী শক্তি, যার অতীতের রেকর্ড রয়েছে, যদিও ভুলত্রুটি তারা করেছে। জামাতও বাংলাদেশের একটি নির্ভরযোগ্য ইসলামী শক্তি, তবে তাদের জন্য এখনো উপযুক্ত সময় আসেনি, এবং তারা যদি অতিসত্বর ক্ষমতা প্রত্যাশা করে, তাহলে তা দিবাস্বপ্ন ছাড়া কিছুই হবে না।
বিপ্লব থেকে এখনই সরাসরি রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করলে তারা পূর্বের মতই ‘অ্যান্টি-লিবারেশন’ অপবাদে আক্রান্ত হতে পারে।
দোষারোপের রাজনীতি এখনই বন্ধ করতে হবে। বিভাজন মানে শত্রুর জন্য দ্বার উন্মুক্ত করে দেওয়া, যাতে তারা দুই পক্ষের একটিকে ব্যবহার করে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে হস্তক্ষেপ করতে পারে। বিএনপি ও জামাতের উভয় পক্ষের মধ্যেই কিছু ব্যক্তি আওয়ামী লীগের মদদপুষ্ট হয়ে এই দ্বন্দ্বকে বাড়িয়ে তোলার চেষ্টা করছে।
সকল পক্ষকে এখন বুদ্ধিমত্তা ও ধৈর্যের সাথে কাজ করতে হবে। জুলাই বিপ্লব এখনো অসমাপ্ত রয়ে গেছে।
লেখক: কর্নেল(অব.) আকরাম
অধ্যাপক ও কলাম লেখক, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
ফাইল ছবি
বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় গুমের শিকার হওয়া ৭৬ জন মানুষের যে তালিকা সরকারকে দিয়েছিল জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ, সেই তালিকার ৩৫ জনকে সরকার এমনিতেই বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে খুঁজছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
শনিবার জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এক সেমিনারে মন্ত্রী একথা জানান।
বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদ আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় ধর্মীয় সংখ্যালঘু নারীদের আর্থসামাজিক অবস্থান ও নিরাপত্তা: ভিশন ২০৪১’ শীর্ষক সেমিনারে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। তাতে মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) সূত্র দিয়ে বলা হয়, গত ৫ বছরে দেশে ২ হাজার ৮০৩টি হিন্দু বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় আয়োজকদের উদ্দেশ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা সম্পত্তি বিনষ্ট করেছে বিস্তারিত তালিকা দেবেন।
হিন্দু বাড়িঘর ও সম্পত্তিতে হামলার সংখ্যা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মন্ত্রী গুমের প্রসঙ্গ টানেন। বলেন, গুমের কথা বলে যে, হাজার হাজার গুম হয়ে গেছে। তালিকা চাইলাম, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ৭৬ জনের তালিকা দিল। এর মধ্যে ১০ জন বিএনপির কর্মী। তারা বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করছেন। আর ৩৫ জনকে আমরা নিজেরাই খুঁজছি। বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক কাজ, মানুষ হত্যা, সম্পদ পুড়িয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে তাদের খুঁজছি। একজন আবার জেলে অবস্থান করছে।
গত বছর জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ বিভিন্ন সময় গুমের শিকার হওয়া ৭৬ জনের একটি তালিকা বাংলাদেশ সরকারকে দেয়। এ বিষয়ে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় মানবাধিকার পরিষদের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপে আলোচনা হয়। গত ১৪ আগস্ট জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট ঢাকা সফরে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এই তালিকা নিয়ে কথা বলেন। সূত্র: যুগান্তর
ফাইল ফটো:
গণফোরাম মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে দেশের গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, সম্পাদক, বার্তা সম্পাদক ও সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।সভায় সভাপতিত্ব করেন গণফোরামের জাতীয় নির্বাহী কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ।
লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন গণফোরামের মুখপাত্র ও সদস্য সচিব এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। লিখিত বক্তব্যে এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করতে যাচ্ছি। লাখো শহীদের রক্তদান ও বাঙালি জাতির সীমাহীন আত্মত্যাগের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ছিল জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র। লক্ষ্য ছিল রাষ্ট্রের উপর জনগণের নিরঙ্কুশ মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা। জনগণই হবে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতার উৎস। দেশের মানুষ অন্ন, বস্ত্র, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা পাবে। অঙ্গিকার ছিল গণতান্ত্রিক, শোষণমুক্ত অসাম্প্রদায়িক একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করা।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, স্বাধীনতার পঁঞ্চাশ বছরেও মুক্তিযুদ্ধের কাঙ্খিত লক্ষ্য পূরণ হয়নি। রাষ্ট্রের প্রতি জনগণের মালিকানা কেড়ে নিয়ে তাদের গোলাম করে রাখা হয়েছে। ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। আর্থিক খাতে বেপরোয়া লুটপাট চলছে। জনগণের কষ্টার্জিত টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। জনগণের নিকট জবাবদিহিতার পরিবর্তে কর্তৃত্ববাদী শাসন ও শোষণ ব্যবস্থা কায়েম রাখা হয়েছে। দেশের আইনের শাসন ও আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগ নেই।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ বলেন, আজকে দেশে যারা নিজেদেরকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বলে দাবী করছে, তারা তাদের কাজ-কর্মের মাধ্যমে তার প্রমাণ দিচ্ছে না। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে না। অর্থ লুটপাট, গণতন্ত্র ধ্বংস, নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস এবং মানুষের মত ও বাক-স্বাধীনতা হরণ করে দেশে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করে রেখেছে। এরা এখন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি না। এই প্রেক্ষাপটে গণফোরাম মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে।
তিনি বলেন, দেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করে গড়ে তোলা হয়নি। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু সারা জীবন লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। অথচ তাঁর দল আজ বিচার বিভাগ ধ্বংস করে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে ধ্বংস করে দিয়েছে। রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। এই ধ্বংস স্তুপের উপর দাঁড়িয়েই আমরা আমাদের রক্তে গড়া বাংলাদেশকে সমুন্নত রাখবো। ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ঝুঁকিতে পড়া বাংলদেশকে আমরা রক্ষা করবো।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে গণফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুকে আওয়ামী লীগের দলীয় নেতা হিসেবে দেখতে চাই না। বঙ্গবন্ধু আমাদের সবার নেতা। আমরা জিয়াউর রহমানকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দেখতে চাই। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কোনো দল বা সরকারের সাথে গণফোরাম ঐক্য করবে না।
মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, দেশ এখন লুটপাটের স্বর্গরাজ্য। আইনের শাসন বলে কিছু নেই। নির্বাচন ব্যবস্থাকে তামাশায় পরিণত করা হয়েছে। দেশের মালিক জনগণের কোনো অধিকার নেই। সব মিলিয়ে আমরা গভীর জাতীয় সংকটের মধ্যে আছি। এই সংকট থেকে উত্তরণে জাতীয় ঐক্যমতের সরকারের বিকল্প নেই। তাই গণফোরাম জাতীয় ঐক্যমতের সরকার চাই। সে লক্ষ্যেই গণফোরাম কাজ করছে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক এমপি ও গণফোরাম নেতা জামাল উদ্দিন আহমেদ, এডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, এডভোকেট মোহসীন রশীদ, এডভোকেট মোঃ মহিউদ্দিন আব্দুল কাদের, মেজর আসাদুজ্জামান বীর প্রতীক, এডভোকেট হেলাল উদ্দিন, লতিফুল বারী হামিম, খান সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।