a
ছবি সংগৃহীত
নিউজ ডেস্ক: পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সম্মেলনকক্ষে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে এক বিএনপি নেতার তোপের মুখে পড়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে অনুষ্ঠিত বৈঠকটি নিয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান এই দুই নেতা। তাদের বাগ্বিতণ্ডার সময় উপজেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা দাঁড়িয়ে তা দর্শকের ন্যায় তাকিয়ে থাকেন।
সারজিস আলম ও মতিউর রহমান নামের ওই বিএনপি নেতার বাগ্বিতণ্ডার একটি ভিডিও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। মতিউর রহমান আটোয়ারী উপজেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বলে জানা গেছে।
সূত্র মতে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে সারজিস আলম আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে উপজেলার অন্যান্য সরকারি দপ্তরের প্রধানদের ডাকেন। পরে তিনি ইউএনওর সম্মেলনকক্ষে তাদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন। তবে সেখানে ইউএনও উপস্থিত ছিলেন না। বৈঠক শেষে বের হওয়ার পরপরই ওই বিএনপি নেতার সঙ্গে সারজিস আলমের বাগ্বিতণ্ডার ঘটনা ঘটে।
বাগ্বিতণ্ডার বিষয়ে আটোয়ারী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মতিউর রহমান বলেন, তিনি বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার নওশাদ জমিরের ঈদ শুভেচ্ছার কার্ড দিতে উপজেলা পরিষদের কয়েকটি সরকারি দপ্তরে যান। এ সময় কাউকেই না পেয়ে জানতে পারেন তারা ইউএনও অফিসের সম্মেলনকক্ষে সারজিস আলমের সঙ্গে মিটিং করছেন। পরে বিষয়টি তিনি আটোয়ারী উপজেলার দায়িত্বে থাকা বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ফোনে জানালে তিনি সেখানে উপস্থিত না থাকায় কোনো উত্তর দিতে পারেননি। পরে বিষয়টি পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (সার্বিক) জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের বাইরে অবস্থান করছিলেন।
বিএনপি নেতা মতিউর রহমান বলেন, ‘পরে সারজিস আলমের সঙ্গে অন্য কর্মকর্তারা বেরিয়ে এলে আমি তাদের কাছে জানতে চাই যে তারা অফিস সময়ে এ ধরনের মিটিংয়ে আসতে পারেন কি না। এ সময় সারজিস আলম এগিয়ে এসে আমার সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় এটা কোনো বিধানে নেই বলে তাদের জানিয়ে দিই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের আটোয়ারী উপজেলাটা খুবই পিছিয়ে পড়া একটা উপজেলা। এখানে পাঁচটি সরকারি অফিসের প্রধান নেই। আমি মূলত ওই দিক দিয়ে যাওয়ার সময় উপজেলার বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাকে সমস্যার কথা জানতে সেখানে যাই। পরে তাঁদের সঙ্গে ইউএনওর অফিসের একটা কক্ষে বসি। পরে কথা বলে বের হয়ে আসার সময় একজন ব্যক্তি, তাকে আমি চিনিও না। তিনি এভাবে কথা বলতে আসেন। আসলে তারা নিজে কিছু করতে পারবেন না। অন্য কেউ করলে তাদের সহ্য হয় না আরকি। ওই লোকটাও ওই একই ধরনের। এগুলো থাকবেই। এগুলোকে পাত্তা দিলে কাজে মনোযোগ দেওয়া যাবে না।’
ছড়িয়ে পড়া ২ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, সারজিস আলম বলছেন, ‘আমি তাদের কাছে জানতে চাই, আমার সুযোগ আছে আটোয়ারীর মানুষের জন্য কিছু করার, তাদের কোন কোন জায়গায় প্রয়োজন, এটা আমি তাদের কাছে জানতে চেয়ে তারা যদি সমস্যাগুলো বলে, আমি যদি আটোয়ারীর জন্য কোনো কিছু বের করে আনতে পারি, এটা ভালো না খারাপ?’এ সময় মতিউর রহমান বলেন, ‘তো তাহলে এটা ডিসি সাহেবের মাধ্যমে হোক, ইউএনও সাহেবের মাধ্যমে হোক।’
জবাবে সারজিস আলম বলছেন, ‘তাদের আমি আহ্বান জানিয়েছি যে আমার সুযোগ আছে।’ এ সময় মতিউর রহমান বলছেন, ‘আমার জিজ্ঞাসাটা হচ্ছে, এটা কি তারা পারেন এ ধরনের মিটিং করতে, আমি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করতে চাই।’ তখন সারজিস আলম বলছেন, ‘আমি যদি কী কী দরকার এটা তাদের কাছে জেনে নিয়ে আসি, এটা হওয়া উচিত কি না। এটা তো কোনো অফিশিয়াল মিটিং নয়।’
একপর্যায়ে মতিউর রহমান বলছেন, ‘বাবা, এটা কিন্তু তোমরা রাজনৈতিক দল এনসিপি হওয়ার আগে ঠিক ছিল। তখন কিন্তু আমরা মেলায় (আলোয়াখোয়া রাশ মেলা) সহযোগিতাও করেছিলাম। যেহেতু রাজনৈতিক দল এখন।’ এ সময় সারজিস আলম বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের মহাসচিব হিসেবে যদি পারেন, একটা দলের পদধারী হয়ে, তিনি এখন এমপিও না, মন্ত্রীও না, উনি পারে কি না? উনি যদি পারেন, আমিও একটা দলের হয়ে পারি।’ এ সময় মতিউর রহমান বলেন, ‘কিন্তু উনি কোনো কনফারেন্স রুমে মিটিং করেন না।’ এ সময় সারজিস আলম বলেন, ‘এটা কোনো অফিশিয়াল মিটিং না।’
মতিউর রহমানকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি উনাদের জিজ্ঞাসা করতে চাই তারা কোন বিধানে এসেছেন। একটা রাজনৈতিক দলে মুখ্য সংগঠকের সঙ্গে তারা সরকারি কর্মকর্তারা কোনো মিটিং করতে পারেন কি না। তাঁরা এটা পারেন না। এটা কোন আইনে এসেছেন একজন নাগরিক হিসেবে এটা জানতে চাই।’ তখন সারজিস আলম বলেন, ‘কে বলছে পারে না।’ এ সময় সারজিস আলম মতিউর রহমানকে একাধিকবার বলতে থাকেন, ‘টোন লো করে (গলার স্বর নামিয়ে) কথা বলেন।’ এরপর সারজিস বলেন, ‘আপনি যে আইনে এটা জিজ্ঞাসা করতে পারেন, আমিও একজন নাগরিক হিসেবে আটোয়ারীতে কী কী সমস্যা আমি তাঁদের কাছে জানতে চাইতে পারি।’ সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক
ফাইল ছবি
অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোই বিএনপির রাজনীতি উল্লেখ করে বন্যার্তদের কষ্ট লাঘব না হওয়া পর্যন্ত নেতাকর্মীদের তাদের পাশে থাকতে বলেছেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
রবিবার (১০ জুলাই) রাতে গুলশানের বাসায় চেয়ারপারসনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের একথা জানান।
তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া সিলেট, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনায় যেখানে মানুষ বন্যা প্লাবিত হয়েছে, সেসব দুর্গত মানুষের খবর আমাদের কাছ থেকে নিয়েছেন। তিনি আমাদের বলেছেন, তোমরা বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে থাকবে তাদের কষ্ট লাঘব না হওয়া পর্যন্ত। তিনি মনে করেন বন্যার্তদের সেবা করা মানে হচ্ছে মানুষের সেবা করা এবং এটাই রাজনীতির প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তিনি এখন যে অবস্থায় আছেন সেই অবস্থা তার ইমিডিয়েট কোনো বিপদ না থাকলেও তিনি কিন্তু এখনো অসুস্থ আছেন। আমরা বার বার বলে আসছি যে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার বাইরে চিকিৎসা প্রয়োজন। এখনকার ডাক্তাররা যারা তার চিকিৎসা করছেন তারা সবাই বার বার করে বলেছেন যে, উন্নত চিকিৎসা তার (খালেদা জিয়া) দরকার, সেই উন্নত চিকিৎসা ও কেন্দ্র এখানে নেই। যে কারণে তারা (চিকিৎসকরা) মনে করেন যে, ম্যাডামকে সত্যিকার অর্থে সম্পূর্ণ রোগমুক্ত করার জন্য চিকিৎসা করা দরকার সেটা অবশ্যই দেশের বাইরে। আমরা সেই কথা আবারো আপনাদের কাছে তুলে ধরছি।
সাক্ষাতে দেশের রাজনীতি নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, উনি আমাদের দলের প্রধান, দলের চেয়ারপারসন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, তিনি তিনবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এখনো তিনি দেশের চলমান যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন তার খোঁজ-খবর রাখছেন। তিনি মনে করেন যে, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ নিশ্চয়ই গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করবে। খালেদা জিয়া দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলেও এসময় জানান বিএনপি মহাসচিব।
রাত ৮টায় মহাসচিবের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটি সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সেলিমা রহমান গুলশানের ‘ফিরোজা’য় প্রবেশ করেন। প্রায় দুই ঘণ্টা সাক্ষাত শেষে রাত ১০টায় তারা সেখান থেকে বের হয়ে আসেন। সূত্র: বিডি প্রতিদিন
ছবিঃ মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
সাইফুল আলম, ঢাকা: আগামীকাল ১৩ নভেম্বর “জাতীয় ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন দিবস”। এ উপলক্ষে আজ ১২ নভেম্বর ২০২৫ রাজধানী ঢাকার প্রেস ক্লাব এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, আমরা আজ এখানে একত্রিত হয়েছি দেশের ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন সেবার গুরুত্ব, বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা তুলে ধরতে। ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন (PM&R) হলো এমন একটি চিকিৎসা শাখা যা বিভিন্ন ধরনের শারীরিক প্রতিবন্ধকতা, ব্যথা, পেশী ও স্নায়ুর সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে। এটি শুধুমাত্র চিকিৎসা নয়— বরং “জীবনকে পুনরুদ্ধারের চিকিৎসা”। বাংলাদেশে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ মানুষ স্ট্রোক, আঘাতজনিত অক্ষমতা, দুর্ঘটনা, পেশী-সন্ধি ব্যথা, শিশুদের সেরিব্রাল পালসি, বয়স্কদের চলাচলজনিত সীমাবদ্ধতা ইত্যাদি প্রতিবন্ধিতা সমস্যায় ভোগেন। ফিজিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, আধুনিক ফিজিওথেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি, স্পিচ থেরাপি, ও রিহ্যাবিলিটেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে এদের অনেকেই আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সক্ষম হন।
আমরা চাই—
১। দেশের প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন ইউনিটকে আরও শক্তিশালী করা হোক।
২। পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রিহ্যাবিলিটেশন জনবল নিয়োগ দেওয়া হোক, এবং জনসচেতনতা বাড়ানো হোক যাতে মানুষ সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারে।
৩। বিদ্যমান আইনকে কার্যকর, নতুন আইন প্রণয়ন ও নীতিমালা বাস্তবায়নে তৎপরতা বাড়ানো।
৪। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, জেলা/উপজেলা প্রশাসন, এসএনজিও ও সিভিল সোসাইটি একসঙ্গে কাজ করা।
৫। স্কুল, কলেজ, কর্মক্ষেত্র, সড়ক-পরিবহন ইত্যাদি সর্বত্র প্রতিবন্ধি বান্ধব ইউনিভার্সাল ডিজাইনের মান মেনে তৈরি করা।
এই দিবসের প্রতিপাদ্য— “সবার জন্য রিহ্যাবিলিটেশন সেবা: সুস্থ জীবনের অধিকার”।
আমরা বিশ্বাস করি, একটি সুস্থ, কর্মক্ষম ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গঠনে ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন সেবা অপরিহার্য। তাই সরকার, চিকিৎসক সমাজ, গণমাধ্যম এবং সাধারণ জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই সেবাকে আরও এগিয়ে নিতে হবে।
একটি দেশ তখনই প্রকৃত অর্থে উন্নত দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়,যখন সেখানে প্রতিবন্ধী মানুষের সংখ্যা কম, প্রতিবন্ধিতা প্রতিরোধের সকল ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকে,এবং যেসব ব্যক্তি প্রতিবন্ধী তাদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও জীবনযাপনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পূর্ণ সহায়তা ও সুযোগ নিশ্চিত করা হয়। আপনাদের কলম ও ক্যামেরার মাধ্যমে দেশের কোটি মানুষের কাছে সঠিক বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমরা আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি। রিহ্যাবিলিটেশন সেবার গুরুত্ব ও সম্ভাবনা সম্পর্কে গণসচেতনতা তৈরিতে আপনাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সবশেষে, আগামীকাল ১৩ নভেম্বর জাতীয় ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন দিবস সফলভাবে পালনের জন্য সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানাই।