a
ফাইল ছবি
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আওয়ামী লীগের কেউ না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আমাদের দলের কেউ না। তার বক্তব্যের দায়ভার আওয়ামী লীগ নেবে না।’
আজ শনিবার দুপুরে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ১৫ আগস্ট নিয়ে আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির আয়োজনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, ‘চট্টগ্রামে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা আওয়ামী লীগের দলীয় বক্তব্য নয়। আওয়ামী লীগ জনগণের দল, সুতরাং কোনো দেশের সমর্থনে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসা নির্ভর করে না।’
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম শহরের জে এম সেন হলে জন্মাষ্টমী উৎসবের অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারকে টিকিয়ে রাখতে যা যা করা দরকার, সেটি করতে ভারতবর্ষ সরকারকে অনুরোধ করছি।’
তার এসব বক্তব্যে দেশে সমালোচনার ঝড় বইছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে সমালোচনা। এতে আওয়ামী লীগও বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়েছে। সূত্র: বিডি প্রতিদিন
ছবি সংগৃহীত
কর্নেল(অব.) আকরাম: কটি জাতির জন্য পদ্ধতি বা ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং একটি সরকারি ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করার কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু ফরাসি বিপ্লবের পর থেকে আমরা বর্তমান বিশ্বে বিভিন্ন পদ্ধতির মধ্যে সংঘাত দেখতে পাচ্ছি। বিশ্বে অতীতে বিভিন্ন পদ্ধতির অভিজ্ঞতা রয়েছে। পশ্চিমে রাজতন্ত্র ও রাজপ্রথা এবং পূর্বে খিলাফত ব্যবস্থা ছিল, কিন্তু উভয় ব্যবস্থাই এখন বিলুপ্ত।
বর্তমান সময় গণতন্ত্রের যুগ এবং এটি এখন পর্যন্ত সারা বিশ্বে সর্বোত্তম সরকারি ব্যবস্থা হিসেবে বিবেচিত। একটি দেশের সংবিধান সরকারের গঠন ও কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধান নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল, কিন্তু এটি জনগণের ভালো শাসনের উদ্দেশ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এটি বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণেও ব্যর্থ হয়েছে।
জনগণের অধিকার ও আকাঙ্ক্ষার বিষয়ে আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা খুব একটা ইতিবাচক নয়। বর্তমান সংবিধানে নাগরিকদের অধিকার সম্পর্কে অনেক ভালো বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হলেও তা কখনই বাস্তবায়িত হয়নি। উপরন্তু অতীতে দেশের জনগণকে শাসকদের দ্বারা সব সময়ই হয়রানি ও চাপের মুখে রাখা হয়েছে।
যেহেতু দেশের বেশিরভাগ জনগণ মুসলিম, তাই তাদের প্রত্যাশা সংবিধানে প্রতিফলিত হওয়া উচিত। জনগণের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে এবং নাগরিকদের এমন একটি ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের প্রশাসনে সক্রিয় ভূমিকা পালনের সুযোগ দিতে হবে যা তাদের জন্য উপযুক্ত। একটি টেকসই কল্যাণমুখী সমাজ গঠনের জন্য এই ব্যবস্থাকে অর্থবহ ও ব্যবহারিক করে তুলতে গভীর গবেষণা এবং সুচিন্তিত পরিকল্পনা প্রয়োজন।
দেশের জনগণ সংবিধানে আর কোনো মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেখতে প্রস্তুত নয়, বরং তারা একটি সত্যিকারের কল্যাণ রাষ্ট্রের দিকনির্দেশনা চায়। একটি জাতি মূলত তার সংবিধানের মাধ্যমেই গঠিত হয় এবং এটি যথাযথ যত্ন ও বিচক্ষণতার সাথে করা উচিত। রাতারাতি কোনো ভালো ফলাফল অর্জিত হয় না। আমরা অতীতে ভয়াবহ দুর্ভোগের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি এবং কোনো অশুভ ভবিষ্যৎকে আমরা প্রশংসা করব না। ভবিষ্যতে যেকোনো ব্যবস্থা সংক্রান্ত উদ্যোগে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের চেতনা ও আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হওয়া উচিত। আমাদের জনগণ সবচেয়ে বেশি কষ্টভোগ করছে এবং তারা তাদের দুর্ভোগের অবসান চাইছে।
২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লব নিঃসন্দেহে জাতিকে বর্তমান সংবিধানের উপযোগিতা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করার সুযোগ তৈরি করেছে। এদিকে জাতি দুটি শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এক শিবিরে রয়েছে বিএনপি এবং অন্যটিতে রয়েছে সিএনসি, একটি নতুন ছাত্রনেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল। জামাত সম্ভবত এনসিপির পদক্ষেপের পক্ষে থাকবে। সংবিধান ও শাসন ব্যবস্থা নিয়ে দুটি শিবিরের মধ্যে একটি সত্যিকারের সংঘাতের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
উভয় পক্ষই অনমনীয় ও একগুঁয়েমী বলে মনে হচ্ছে এবং সমস্যা সমাধানের জন্য পারস্পরিক সমঝোতার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এদিকে এনসিপির নেতারা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে শাসন ব্যবস্থা নিয়ে বাংলাদেশে নিকট ভবিষ্যতে একটি রাজনৈতিক সংঘাত হতে পারে। সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একজন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন যে দেশটি যুদ্ধের পরিবেশের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
১৯৭২ সাল থেকে আমরা কখনই সত্যিকারের স্বাধীনতা অনুভব করতে পারিনি এবং ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা শাসনামলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে যখন আমরা আমাদের নিজ দেশের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছি। গত পনেরো বছর ধরে ভারত বাংলাদেশের মালিক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। মনে হচ্ছে আমরা আমাদের ইতিহাসের সাম্প্রতিক অতীত ভুলে গেছি এবং তাদের অনুগ্রহ পাওয়ার চেষ্টা করছি।
ঐক্যের মাধ্যমে অর্জিত সাফল্য এখন মারাত্মক হুমকির মুখে এবং এটি মোকাবেলা করার জন্য আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। পরাজিত শত্রুরা এই অস্থির পরিস্থিতিকে তাদের সুবিধা নেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করবে না। আমরা সম্পূর্ণ জেনেশুনেই আমাদের নিজেদের পায়ে কুড়াল মারতে চলেছি। আমরা কি এতই মূর্খ যে সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলোর পরেও আমাদের জাতীয় স্বার্থ বুঝতে পারছি না?
এনসিপির প্রত্যাশা অনুযায়ী দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্রের বিষয়ে একটি জাতীয় সংলাপ হোক। আসুন আমরা আমাদের প্রত্যাশার বিষয়ে বাস্তববাদী ও ব্যবহারিক হই। প্রতিটি শিবিরকে ধৈর্য ধরতে হবে এবং পরিপক্কতা ও বিচক্ষণতার সাথে কাজ করতে হবে। সবকিছু রাতারাতি করা যায় না। আমরা নতুন বাংলাদেশে ভবিষ্যতে একটি সুস্থ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার সংস্কৃতি দেখতে চাই। আমাদের আর জনগণকে ভণ্ডামির রাজনীতির শিকার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
ফাইল ছবি
সিলেটে আবারও বন্যার আশঙ্কা করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। গত মাসেই সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়ে যায় এই বিভাগে। ১১ মে থেকে সিলেটে বন্যা দেখা দিলে তলিয়ে যায় ১২টি উপজেলার অধিকাংশ এলাকা।
এই বন্যার রেশ কাটতে না কাটতে আবারও সিলেটে বন্যার আশঙ্কায় হাওরবাসী চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। আগের বন্যায় কৃষি, সড়ক, বাঁধ, ঘরবাড়ি ও মাছের খামারের ব্যাপক ক্ষতি হয়। সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি রয়েছে। এখন নতুন করে বন্যার পূর্বাভাস পাওয়া পেয়ে নদী ও হাওর তীরের মানুষ ভীষণ উদ্বিগ্ন।
গত বৃহস্পতিবার থেকে অবিরাহম বৃষ্টি হচ্ছে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানান, বৃষ্টি আরও বাড়তে পারে। এতে সুরমা-কুশিয়ারা অববাহিকায় বন্যা দেখা দিতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, সিলেটে সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় কানাইঘাটে ৬৭ মিলিমিটার ও সিলেটে ৯৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। ভারতের বরাক নদীর পানি অমলসিদ পয়েন্টে বেড়ে কুশিয়ারা ও সুরমায় চাপ সৃষ্টি করেছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলছেন, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল তথা সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে চলতি মাসে স্বল্পমেয়াদী বন্যার সৃষ্টি হতে পারে। ভারি বর্ষণের কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর পূর্বাঞ্চল, উত্তর মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের কিছু কিছু জায়গায় স্বল্পমেয়াদী বন্যা দেখা দিতে পারে। সূত্র: ইত্তেফাক