a
ফাইল ছবি
জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব ও কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, যতক্ষণ সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ থাকবে ততক্ষণ সংসদ সদস্যদের স্বাধীন কথা বলার সুযোগ নেই। বাজেটে সংসদ সদস্যদের কোনো অংশগ্রহণ নেই। স্বাধীনভাবে (কথা) বলার সুযোগ নেই।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে আলোচনা হয়। এসময় একটি বিল পাসের ওপর আলোচনাকালে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরাও এসব মন্তব্য করেন।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, সংসদের কি খুব একটা ক্ষমতা আছে? যিনি সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা তার হাতেই সকল ক্ষমতা। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কারো কিছু বলার ক্ষমতা আছে? সদস্য পদ কি থাকবে? এ সময় বিএনপির সাংসদ রুমিন ফারহানাও একই প্রশ্ন তোলেন।
প্রসঙ্গত: সংবিধানের ৭০ অনুূচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো সংসদ সদস্য দলের সিদ্ধান্তের বাইরে ভোট দিতে পারেন না। এতে বলা আছে, কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী রূপে মনোনীত হয়ে কোনো ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে সংসদে ওই দলের বিপক্ষে ভোটদান করলে সংসদে তার আসন শূন্য হবে। সূত্র: বিডি প্রতিদিন
ছবি সংগৃহীত
বিপ্লব একটি জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি যে কোনো সময় ঘটতে পারে, যদি জনগণ তা চায়। ইতিহাস জুড়ে আমরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে নানা সময়ে বিপ্লব প্রত্যক্ষ করেছি। ফরাসি বিপ্লবকে সব বিপ্লবের জননী হিসেবে ধরা হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে আমরা ১৯৭৯ সালের ইরানি বিপ্লবের সাক্ষী হয়েছি, তবে সমাজে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের জন্য ইরানি জনগণের সংগ্রাম আজও শেষ হয়নি। বিপ্লবের সূচনালগ্ন থেকেই ইরানি সমাজ অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত হুমকির বিরুদ্ধে প্রকৃত রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য লড়াই করছে।
বাংলাদেশের জন্মও ছিল ১৯৭১ সালের বিপ্লবের ফল, কিন্তু আমরা এখনও প্রকৃত জাতীয় চেতনার সন্ধান পাইনি এবং জাতি বিভক্ত রয়ে গেছে। গত পাঁচ দশকেও আমরা শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছি, বরং প্রতিবার রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে গিয়েছি।
আমরা কখনোই একটি স্থিতিশীল সরকার পাইনি এবং সর্বদা কোনো না কোনো সংকটের সম্মুখীন হয়েছি। এরশাদের পতনের পর ১৯৯০ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত আমরা গণতান্ত্রিক চর্চার একটি ধারা দেখেছি, কিন্তু এটি মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকারের বিশ্বাসঘাতকতায় শেষ হয়। তারা একটি সাজানো নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনে।
ভারতের প্রত্যক্ষ সহায়তায় শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক বিডিআর হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করেন এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেরুদণ্ড ভেঙে দেন।
পরবর্তী সময়ে শেখ হাসিনা একজন স্বৈরশাসকে পরিণত হন এবং ভারতের সরাসরি সহায়তায় ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলাদেশের জনগণ শেখ হাসিনার হাতে বন্দী হয়ে চরম নির্যাতনের শিকার হয়, যা ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে শেষ হয়। তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতের আশ্রয় নেন।
এই আন্দোলন শুরুতে ছাত্রদের নেতৃত্বে হলেও, পরে তা গণআন্দোলনে পরিণত হয়। শত শত নিরীহ মানুষের জীবন উৎসর্গ এবং কয়েক হাজার মানুষের ত্যাগের বিনিময়ে দেশ ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত হয়। একইসঙ্গে বাংলাদেশে ভারতের প্রভাব ও আধিপত্যের রাজনীতির অবসান ঘটে।
মানুষ মুক্তি পায় এবং বিপ্লবীদের উদ্যোগে নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। তবে বিপ্লবী বা জাতীয় সরকার গঠন না করাটা ছিল বড় ভুল।
শুরু থেকেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বহুমুখী অভ্যন্তরীণ সমস্যার সম্মুখীন হয়, পাশাপাশি ভারতের হুমকি মোকাবিলা করতে হয়। কিন্তু তারা তেমন সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। সরকারকে ধীর এবং অনিশ্চিত মনে হয়েছে।
এদিকে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী সংস্কার ও নির্বাচনের বিষয়ে একমত হতে ব্যর্থ হয়। বিএনপি দ্রুত নির্বাচন চাইলেও জামায়াত ভিন্ন মত প্রকাশ করে।
রাষ্ট্রপতির অপসারণসহ বিভিন্ন ইস্যুতেও দুই দল পৃথক অবস্থান নেয়। ছাত্রনেতারাও একটি রাজনৈতিক দল গঠনের ইচ্ছা প্রকাশ করে।
গুঞ্জন আছে, জামায়াতে ইসলামী ভবিষ্যতে বিএনপির পরিবর্তে নতুন রাজনৈতিক দলের সাথে জোট গঠন করতে পারে। এটি বিপ্লব পরবর্তী রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে।
এই ক্রান্তিকালে বিএনপি ও জামায়াতের ঐক্য অপরিহার্য হলেও তারা কেবল ক্ষমতার জন্য আলাদা পথে হাঁটছে, জাতির প্রতি দায়িত্ব ভুলে যাচ্ছে। উভয় দল পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বক্তব্য দিচ্ছে এবং জাতিকে ভুল বার্তা দিচ্ছে। এটি কোনোভাবেই ভালো লক্ষণ নয়।
জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী শক্তির বিভক্তি এ সময়ে ভারতকে নতুন রূপে প্রবেশের সুযোগ করে দেবে, যা কেউ ঠেকাতে পারবে না। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংকেত পাওয়া যাচ্ছে যে, অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত শত্রুদের হুমকি বাড়বে।
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষে এককভাবে কিছু করা সম্ভব নয়। প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যই ভবিষ্যতের সংকট সামাল দেওয়ার একমাত্র পথ।
ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা রেখে একটি জাতীয় সরকার গঠন করা এখন একমাত্র বিকল্প। রাষ্ট্রপতিকে এমন একজনের মাধ্যমে পরিবর্তন করা দরকার, যিনি জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য।
সব প্রক্রিয়া বিপ্লবের সকল অংশগ্রহণকারীদের সাথে আলোচনা করে সম্পন্ন করতে হবে। জাতীয় ঐক্য ছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতিকে রক্ষা করা সম্ভব নয়।
ছাত্রনেতাদের উচিত দেশের সিনিয়র নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা। তারা রাজনৈতিক দল গঠন করতে পারে, যা নিঃসন্দেহে ভালো সিদ্ধান্ত, তবে তাদের রাজনীতি শেখার ধৈর্য থাকতে হবে।
রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার বিকল্প নেই এবং এটি চর্চার মাধ্যমে আসে। রাষ্ট্র পরিচালনায় অভিজ্ঞতা ও পরিপক্কতা প্রয়োজন, যা তরুণদের এখনও নেই। নেতৃত্ব রাতারাতি গড়ে ওঠে না; সময় লাগে।
জাতি ও সরকার সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ তরুণদের হাতে ছেড়ে দেওয়া সম্ভব নয়; তাদের সময়ের অপেক্ষা করতে হবে। তারা জাতির জন্য অসাধারণ কাজ করেছে, জাতি সময় মতো তাদের পুরস্কৃত করবে।
এটি আল্লাহর দেওয়া একটি সুযোগ এবং আমাদের উচিত এটিকে উপেক্ষা না করা। বিপ্লব পরবর্তী রাজনীতিতে যে কোনো তাড়াহুড়ো বা ভুল সিদ্ধান্ত জাতীয় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। বিজয়ের সাফল্য নির্ভর করছে জাতীয় ঐক্যের উপর।
লেখক: প্রফেসর ড. এসকে আকরাম আলী
সম্পাদক, সামরিক ইতিহাস জার্নাল এবং আইন ও ইতিহাসের অধ্যাপক
সংগৃহীত ছবি
শেষ সময়ের ডাক...
একটু বুক ভরে শ্বাস নেবো
সে উপায় নাই,
মুক্ত বাতাসেও প্রাণঘাতী অসুখ !
এ কেমন লীলা তোমার প্রাণেশ্বর !?
প্রতিমুহূর্তে যে প্রাণ অকালপ্রয়াণে নিভে যায়!
বেঁচে থাকার তার কি আছে অধিকার !?
জীবনের জন্য জীবন -আজ বড়ো প্রাণহীন হিমশীতল।
তুমি হীন তুমিময় সংসার
মায়ার অলখ ডোরে বাঁধা কেবলি বিপ্রতীপ ইশারার জাল।
এ কেমন পরীক্ষা তোমার !?
জলের পরে তোমার ছায়া
ধরতে নাহি পারি,
ডুবসাঁতারে জনম গেলো মিছে... প্রভূ
না হইলাম তোমার সঙ্গের কান্ডারী !
দিনের শেষে সন্ধ্যা ঘনাইছে আকাশে
মেঘের ঘনঘটা, বিদ্যুৎ চমকে গর্জিছে যমরাজ !
সময়ের ইতি টেনে বুঝিবা জানায় সম্ভাষণ,
যেতে হবে এইবার... এসেছে ডাক ওপারের ।
বুক ভরে শ্বাস নেই ...!
নীল আকাশ, নীল সমুদ্র
কৃষ্ণচূড়ায় রক্তক্ষরণের ছায়া, সবুজে নীলের কায়া ।
বিষে বিষাক্ত চারিধার !
মরণ রে তুহু মম ঘনশ্যাম ।।