a
ফাইল ছবি
সরকারকে অবৈধভাবে উৎখাত করার অভিযোগে রাজধানীর ভাটারা থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে করা মামলায় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ ৯জনের চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা আক্তারের আদালত শুনানি শেষে এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
রিমান্ডে যাওয়া অপর আসামিরা হলেন- জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান ও হামিদুর রহমান আজাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য আবদুর রব, ইজ্জত উল্লাহ, মোবারক হোসাইন, জামায়াতের শুরা সদস্য ইয়াসিন আরাফাত, সেক্রেটারি জেনারেলের গাড়িচালক মনিরুল ইসলাম ও জামায়াতকর্মী আব্দুল কালাম।
এদিন গ্রেপ্তার আসামিদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ভাটারা থানার উপপরিদর্শক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিদের ১০ দিন করে রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামিরা দেশের জননিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করাসহ ব্যক্তিসত্তা ও প্রজাতন্ত্রের সম্পর্কের ক্ষতিসাধনসহ শেখ হাসিনার সরকারকে অবৈধভাবে উৎখাত করার উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
এ সময় আসামিপক্ষে তাদের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে, গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাড়ি থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর গতকাল রাতেই রাজধানীর ভাটারা থানায় গোলাম পরওয়ারসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
মো: সাইফুল আলম সরকার, ঢাকা: তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের আয়োজনে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, একাডেমিক, গবেষক, সমাজের সচেতন নাগরিক এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সমন্বয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরনের দাবিতে একটি নীতিনির্ধারনী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আজ ১৮ মার্চ ২০২৫, রাজধানী ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে, এই সভায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাশের দাবিতে প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়ে আলোচনা হয়।
এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব এ.টি.এম. সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব (জনস্বাস্থ্য অনুবিভাগ), স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, ডাঃ নিজাম উদ্দীন আহম্মেদ, নির্বাহী পরিচালক, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন, চেয়ার, গ্লোবাল এলায়েন্স ফর ভাক্সিন অ্যান্ড ইনিশিয়েটিভ (গ্যাভী), ডাঃ মোঃ শিব্বির আহমেদ ওসমানী, যুগ্মসচিব (পিএইচ উইং), স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনাব মোঃ মহসীন, যুগ্মসচিব, বেসরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা শাখা, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনাব কাজী মোখলেছুর রহমান, যুগ্মসচিব (উন্নয়ন-১ অধিশাখা), যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, অধ্যাপক ডাঃ হালিদা হানুম আক্তার, প্রজনন ও শিশু স্বাস্থ্য বিভাগ (বিইউএইচএস), সদস্য, মহিলা বিষয়ক সংস্কার কমিশন সহ বিভিন্ন পর্যায়ের বিশেষ ব্যক্তিবর্গ।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের পরিচালক ডাঃ নিজাম উদ্দীন আহম্মেদ। মূল প্রবন্ধে তিনি ডব্লিউএইচও ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোবাকো কন্ট্রোল-এফসিটিসির সাথে সামঞ্জস্য রেখে, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের জন্য স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রণীত খসড়ার সংশোধনীগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ৬টি প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি। সেগুলো হলো- অধূমপায়ীদের সুরক্ষার জন্য সকল প্রকার পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা, তামাক পণ্যের প্রচার বন্ধ করার জন্য বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকপণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেট বা ইমার্জিং হিটেড টোব্যাকো প্রডাক্ট উৎপাদন, ব্যবহার ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করা, তামাকপণ্যের সকল প্রকার খুচরা ও খোলা বিক্রয় বন্ধ করা ও সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা।
জনাব এ. টি. এম. সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করার জন্য বাংলাদেশের অনেক তামাক কোম্পানি বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করছে। যেমন, তামাক কম্পানিগুলো মিথ্যা প্রচার করছে যে, প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী পাস হলে সরকার বিপুল পরিমাণে রাজস্ব হারাবে। তবে বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। ২০০৫ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন ও ২০১৩ সালে সংশোধনের পর গত ১৮ বছরে সরকারের রাজস্ব আয় বেড়েছে সাড়ে ১২ গুণ। বাংলাদেশ সরকারকে এই দিকে নজর দিতে হবে।
অধ্যাপক ডাঃ হালিদা হানুম আক্তার, প্রজনন ও শিশু স্বাস্থ্য বিভাগ (বিইউএইচএস) বলেন, বাংলাদেশে ৩৫.৩% প্রাপ্তবয়স্ক (১৫ বা তার বেশি বয়সী) তামাক ব্যবহার করে (গ্যাটস ২০১৭), এবং তার মধ্যে ৪৬% পুরুষ, ২৫.২% মহিলা তামাক ব্যবহার করে। কর্মক্ষেত্রসহ পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। ৫৯% অপ্রাপ্তবয়স্ক পাবলিক প্লেসে এবং ৩১% বাড়িতে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয়। বাংলাদেশের মোট মৃত্যুর ১৯% (১ লাখ ৬১ হাজার ২৫২) তামাক ব্যবহার জনিত কারণে হয়। ২০১৭-১৮ অর্থ-বছরে সরকার তামাক থেকে যে পরিমান রাজস্ব পেয়েছিল তার চেয়ে ৩৪% বেশি টাকা খরচ হয়েছিল তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারজনিত রোগের চিকিৎসা বাবদ। তামাকের এসব ক্ষতি থেকে জনস্বাস্থ্যকে রক্ষার জন্য তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে শক্তিশালী করার মুখ্য সময় এখনি।
ডাঃ মোঃ শিব্বির আহমেদ ওসমানী, যুগ্মসচিব। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবাতায়নের উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এ অধুমপায়ীদের থেকে ধূমপায়ীদের মৃত্যু তিনগুণ বেশি ছিল। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত। ৬১ হাজারেরও বেশি শিশু (১৫ বছরের নিচে) পরোক্ষ ধূমপানের কারণে সৃষ্ট রোগে ভুগছে। ঢাকার মিরপুর ও সাভারের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র/ছাত্রীদের লালা পরীক্ষা করে ৯৫% ছাত্র/ছাত্রীর লালায় নিকোটিন পাওয়া গেছে। এরা পরোক্ষ ধূমপানের শিকার বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।
সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, একটি নির্দিষ্ট জেনারেশন, বিশেষত যুবসমাজ তামাকের করাল গ্রাসের শিকার। তরুণদের মধ্যে তামাক ব্যবহার উৎসাহিত করার জন্য তামাক কোম্পানী গুলো বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখায়, যেমন, বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় নির্ধারিত ধূমপান এলাকা (ডেসিগনেটেড স্মোকিং এরিয়া) স্থাপন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন, যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ব্যাটল অব মাইন্ড। এইসব অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ করতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী অতীব জরুরী।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের পলিসি অ্যাডভাইজর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম, ডাঃ বরিষা পাল প্রোজেক্ট কো-অরডিনেটর, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অ্যান্টি টোব্যাকো ক্লাবের সদস্যসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মী এবং দেশি-বিদেশি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ।
ফাইল ছবি
রাশিয়া অবিলম্বে সিরিয়াকে আরব লীগের সদস্যপদ ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আরব দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
মস্কো বলেছে, সিরিয়াকে আরব লীগে ফিরিয়ে নেয়া হলে আরব দেশগুলো দামেস্কের সঙ্গে নিজেদের মতবিরোধ মিটিয়ে ফেলতে পারবে।
ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করতে আলজেরিয়া, মিশর, জর্দান, ইরাক ও সুদানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মস্কো সফরে গেলে তাদের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ। ওই পাঁচ আরব দেশ নিজেদেরকে ‘ইউক্রেন বিষয়ক আরব কন্টাক্ট গ্রুপ’ বলে পরিচয় দিয়েছে।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আরব লীগে সিরিয়ার প্রত্যাবর্তন আশা করছি। অবিলম্বে এই ইস্যুর সমাধান হলে আরব দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য ও সংহতি আরে শক্তিশালী হবে।
২০১১ সালের মার্চ মাসে সিরিয়ায় বিদেশি মদদে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর ওই বছরের নভেম্বর মাসে দেশটির সদস্যপদ বাতিল করে আরব লীগ। সরকার বিরোধী বিক্ষোভ দমনের অজুহাতে ওই পদক্ষেপ নিয়েছিল আরব লীগ। তবে সিরিয়া ওই পদক্ষেপকে ‘অবৈধ এবং আরব লীগের গঠন কাঠামোর পরিপন্থি’ বলে উল্লেখ করেছিল।
১৯৪৫ সালে যে ছয়টি দেশ নিয়ে আরব লীগ গঠন করেছিল, সিরিয়া ছিল সে দেশগুলোর অন্যতম। সাম্প্রতিক সময়ে সিরিয়াকে আরব লীগের সদস্যপদ ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বানকারী দেশের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। সূত্র: সানা