a
ছবি সংগৃহীত
আজ ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ৫৪তম বার্ষিকী। ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্ব মানচিত্রে আত্মপ্রকাশ ঘটে নতুন রাষ্ট্র স্বাধীন বাংলাদেশ। একাত্তরের অগ্নিঝরা মার্চে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী নিরস্ত্র জনগণের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ অবস্থায় ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। শুরু হয় স্বাধীনতার যুদ্ধ, মহান মুক্তিযুদ্ধ।
পাকিস্তানের পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বাংলাদেশের) জনগণের স্বাধিকারের দাবি কখনো মেনে নিতে পারেনি। ব্রিটিশ শাসনের অবসানে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিতর দিয়ে ১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠা হয় পাকিস্তান রাষ্ট্র। শুরু থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ওপর শোষণ ও দমনপীড়ন চালাতে থাকে। তাদের নীলনকশার প্রথম আঘাত আসে বাঙালির মাতৃভাষা বাংলার ওপর। ১৯৫২ সালে বুকের রক্ত দিয়ে জাতির বীরসন্তানরা মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁদের এ আত্মদানের ভিতর দিয়ে জাতি উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠে স্বাধিকারের চেতনায়। ক্রমে ক্রমে তা রূপ নেয় স্বাধীনতাসংগ্রামে।
মুক্তিকামী বাঙালিকে চিরতরে দমনের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে পশ্চিম পাকিস্তানের কিছু রাজনীতিবিদ ও সেনাবাহিনী। ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়লাভ করা সত্ত্বেও বাঙালির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে ছলচাতুরী করে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা। এর প্রতিবাদে ১৯৭১ সালের মার্চে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলন শুরু করে বাংলাদেশের মানুষ। ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে গণহত্যা শুরু করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। লাখো শহীদের আত্মদানের পথ ধরে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে আমরা অর্জন করি কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা।
আজ জাতি সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করছে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহীদদের, যাঁদের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি কাঙ্খিত স্বাধীনতা। এবার এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে উদযাপন করা হচ্ছে মহান স্বাধীনতার ৫৪তম বার্ষিকী। গত বছর জুলাই গণ অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার বীরত্বে জাতি স্বৈরাচারের অত্যাচার-নিপীড়নের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে। জাতি একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই গণ অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে এগিয়ে যাওয়ার সংকল্পে উদ্যাপন করছে স্বাধীনতা দিবস।
মহান স্বাধীনতা দিবসে জাতি মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের অমর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। প্রত্যুষে সূর্যোদয়ের লগ্নে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি জাতির পক্ষে শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শ্রদ্ধা জানাবেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা, বিদেশি কূটনীতি রাজনীতিবিদসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
এর পরই জাতির গৌরব আর অহংকারের এ দিনটিতে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে ঢল নামবে লাখো মানুষের। তাদের শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় ফুলে ফুলে ভরে উঠবে জাতীয় স্মৃতিসৌধ।
সংগৃহীত ছবি
আজ (শুক্রবার) নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস। অন্যান্য বছর বাংলাদেশে দিবসটি নানা আয়োজনে উদযাপিত হয়ে থাকে। এবার করোনার কারণে দিবসটি সীমিত আকারে পালন করা হবে। ১৯৯৭ সাল থেকে দিবসটি দেশে পালিত হয়ে আসছে। নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে।
গর্ভকালীন, প্রসবকালীন ও প্রসব পরবর্তী সময়ে সকল নারীর জন্য নিরাপদ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণই হলো নিরাপদ মাতৃত্ব। দিবসটি উপলক্ষে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে উপস্থিত থাকবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বাংলাদেশ ম্যাটারনাল মর্টালিটি অ্যান্ড হেলথ কেয়ার সার্ভে (বিএমএমএস), স্যাম্পল ভাইটাল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম (এসভিআরএস) এবং ইউএন (ইউনাইটেড নেশন) ইস্টিমেট সূত্রে জানা গেছে, দেশে গর্ভবতী মায়ের মৃত্যু সংখ্যা আগের তুলনায় কমেছে। ৯০-এর দশকে প্রতি এক লাখ জীবিত শিশু জন্ম দিতে গিয়ে ৫৭৪ জন সন্তানসম্ভবা নারীর মৃত্যু হতো। ২০১৯ সালে যা কমে প্রতি লাখে ১৬৫ জনে দাঁড়ায়। সে হিসাবে ৯০-এর দশকের তুলনায় মাতৃমৃত্যু ৭০ শতাংশের বেশি হ্রাস পেয়েছে।
আগের তুলনায় মাতৃমৃত্যু কমলেও এখনও সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে প্রতি বছর চার হাজার ৭২০ জন গর্ভবতী মায়ের মৃত্যু হয়। সে হিসেবে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৩ জন অর্থাৎ প্রতি দুই ঘণ্টায় একজন গর্ভবতী মায়ের মৃত্যু হয়। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অনুযায়ী, দেশে মাতৃমৃত্যু হার লাখে ৭০ জনে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সরকার। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে গর্ভবতী মায়ের সেবা কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
মায়ের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে প্রথম সন্তান প্রসবের পর তিন বছর বিরতি নেয়ার পরামর্শ স্বাস্থ্য অধিদফতরের। একইসাথে গর্ভবতী মায়েদের ভারী জিনিস বহন না করা, নিয়মিত টিকা নেয়ার পাশাপাশি অ্যান্টিনেটাল কেয়ার বা পোস্ট নেটাল কেয়ার নেয়া এবং বাড়িতে প্রসবকালীন জটিলতা দেখা দিলে দ্রুত ক্লিনিক ও হাসপাতালে নেয়ার জন্য স্বজনদের প্রতি আহ্বান অধিদফতরের।
ফাইল ছবি: ড. ইউনুস ও কেনেডির মেয়ে
শান্তিতে নোবেলজয়ী বাংলাদেশি অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ওপর অত্যাচার বন্ধের দাবি জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশিষ্ট আইনজীবী, লেখক ও মানবাধিকারকর্মী কেরি কেনেডি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে এক পোস্টে তিনি এ দাবি জানান।
কেরি কেনেডি বিশ্বখ্যাত মানবাধিকারবিষয়ক সংগঠন রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটসের প্রেসিডেন্ট। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সিনেটর রবার্ট এফ কেনেডির মেয়ে এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ভাতিজি।
ড. ইউনূসকে নিজের প্রিয় বন্ধু সম্বোধন করে কেরি কেনেডি লেখেন- ‘আমার প্রিয় বন্ধু এবং নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের ওপর অত্যাচার বন্ধ করতে হবে! আমিসহ ১৬০ জনের বেশি বিশ্বনেতা (তার প্রতি) ন্যায়বিচারের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের আচরণের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে চলতি বছরের মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলাচিঠি লিখেছিলেন রাজনীতি, কূটনীতি, ব্যবসা, শিল্পকলা ও শিক্ষাক্ষেত্রের ৪০ জন বিশ্বনেতা। তাদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ও সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোর, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন, আয়ারল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট মেরি রবিনসন, প্রয়াত মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড এম কেনেডির ছেলে টেড কেনেডি জুনিয়রের মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্বরা।
ওই খোলা চিঠির ধারাবাহিকতায় এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর ১০০ জনেরও বেশি নোবেল বিজয়ীসহ ১৬০ জনেরও বেশি বিশ্বনেতা একটি নতুন চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, পূর্বতিমুরের প্রেসিডেন্ট হোসে রামোস-হোর্তা, আয়ারল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট মেরি রবিনসন, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুনের মতো ব্যক্তিত্ব। ওই চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের একজন, রেজাল্টস অ্যান্ড সিভিক কারেজের প্রতিষ্ঠাতা স্যাম ডেলি-হ্যারিস এক বিজ্ঞপ্তিতে চিঠিটি প্রকাশ করেছেন। সূত্র: যুগান্তর