a
ফাইল ছবি
বায়তুল মোকাররম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যারয়ের জিমনেসিয়াম মাঠে শান্তি সমাবেশের অনুমতি না পেয়ে আগারগাঁওয়ের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার পুরনো মাঠে সমাবেশের সিদ্ধান্ত নিল আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম তিন সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ। তবে মাঠ প্রস্তুত না থাকায় বৃহস্পতিবারের বদলে শুক্রবার সমাবেশ করবে জানায় তারা।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া জানান, আগারগাঁওয়ের বাণিজ্য মেলা মাঠটি সমাবেশের জন্য উপযোগী না হওয়ায় সমাবেশ একদিন পিছিয়ে শুক্রবার করা হবে।
প্রথমে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে শান্তি সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছিল আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম তিন সংগঠন। শুরুতে তাদের সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হলেও পরে মানা করা হয়।
ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়াম মাঠে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়। প্রক্টরিয়াল বডি এ নিয়ে বৈঠকেও বসে কিন্তু পরে শান্তি সমাবেশ আগাঁরগাওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে আয়োজনের কথা জানানো হয়।
একই দিনে রাজধানীতে আওয়ামী লীগের এই তিন সংগঠনের শান্তি সমাবেশ ছাড়াও বিএনপির মহাসমাবেশ রয়েছে। ফলে শুক্রবার ঢাকার রাজপথে বড় দুই দলের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্র: ইত্তেফাক
ফাইল ছবি
বিএনপি নেত্রী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা (এমপি) আজ শনিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সমাবেশে যোগ দিতে আসার পথে ২ বার বাধার মুখে পড়েন। পরে বেলা ৩.১০ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই এলাকার বটতলীতে সমাবেশস্থলে যোগদান করেন।
বাধা দেওয়ার বিষয়ে আইনিভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির এই নেত্রী। তিনি সমাবেশস্থলের কয়েক শ গজ দূরে নেমে মঞ্চে যান। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে সরকার পতনের ডাক দিয়ে এ সময় তিনি বলেন, ‘একটা একটা রক্তবিন্দুর হিসাব আমরা নেব। এর বিচার নেব। আমি দেখতে পাচ্ছি আপনারা সবাই জেগে উঠেছেন। যত দূর দেখি তত দূরই বিএনপি নেতাকর্মী। তারা পুলিশকে ভয় পায় না, তারা প্রশাসনকে ভয় পায় না।
গতকালকেও পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে। বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি করেছে। কিন্তু তারা আমাদেরকে কোনোভাবেই দমাতে পারে নাই।
এ সময় রুমিন ফারহানা বলেন, ‘আজকের এ সমাবেশ প্রমাণ করে পুলিশ দিয়ে পারবেন না। রাস্তায় রাস্তায় বাধা দিয়েও নেতাকর্মীদের আটকে রাখতে পারেননি।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের অনেক ভয়। দেশনেত্রী ও তারেক রহমানকে ভয়। যে কারণে দেশনেত্রীকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বেগম জিয়া পায়ে হেঁটে কারাগারে গেছেন। এখন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেন না। এর জবাব সরকারকে দিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া ক্ষমতায় আছেন। এসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাটি দেখে যান। আমার কোটি কোটি ভাইয়ের সমর্থন দেখে যান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া তো সেই মাটি, যেখানে মোরগও লড়াই করে বেঁচে থাকে। এখানে ১৯৫২ সালে অলি আহাদ ভাষার জন্য ১৪৪ ধারা ভেঙিছিলেন। এই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাটিতে ১৪৪ ধারা কাজ করে না। ১৪৪ ধারা দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষকে আটকিয়ে রাখতে পারবেন না।’
ছবি সংগৃহীত
বুলডোজার সাধারণত ধ্বংসযজ্ঞের কাজে ব্যবহৃত হয় এবং সাম্প্রতিক সময়ে আমরা এটি ৩২ নম্বরে প্রকাশ্যে ব্যবহৃত হতে দেখেছি। হাজার হাজার মানুষ সেখানে জড়ো হয়ে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ির ঐতিহাসিক ধ্বংসযজ্ঞে অংশগ্রহণ করেছে। অনেকেই এই ধ্বংসযজ্ঞ উপভোগ করেছে আনন্দের সঙ্গে। এটি স্মরণ করিয়ে দেয় বেগম খালেদা জিয়াকে জোরপূর্বক তার বাসভবন থেকে উচ্ছেদ এবং তার বাড়ি ভেঙে ফেলার ঘটনাকে।
একটি যুগ আগে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট, এই বাড়ির সকল বাসিন্দাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে। সেই সময়ে কেউ সাহস করেনি রাস্তায় নেমে এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করতে। অনেকেই এই ঘটনাকে "আগস্ট বিপ্লবের" অংশ হিসেবে দেখেছে। তবে ইতিহাসই নির্ধারণ করবে এর প্রকৃত অবস্থান এবং মূল্যায়ন।
তবে প্রতিটি কর্মেরই একটি প্রতিক্রিয়া থাকে—এটি শুধু সময়ের ব্যাপার। ইতিহাস বারবার নিজেকে পুনরাবৃত্ত করে। সাম্প্রতিক ঘটনাবলী দেখিয়ে দিয়েছে যে, মানুষ ৩২ নম্বর বাড়িকে ধ্বংস করতে বদ্ধপরিকর। বাড়িটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং শেখ মুজিবের ম্যুরাল সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছে। ভবনের বেসমেন্টে স্কুলছাত্রীদের ইউনিফর্ম পাওয়া গেছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে সেখানে সম্ভাব্য নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে। অনেকেই মনে করেন, ৩২ নম্বর বাড়িটি দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দু ছিল।
শেখ হাসিনা সীমা অতিক্রম করেছেন। যখন জনগণের ক্ষোভ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছিল, তখন তিনি তার দলের নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। এতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, এবং এটি কোথায় গিয়ে শেষ হবে তা কেউ জানে না। কিন্তু এটা নিশ্চিত যে, ভবিষ্যতের পরিণতি বিবেচনা না করেই শেখ হাসিনা নিজেই আগুনে ঘি ঢেলেছেন।
ভারতের আশীর্বাদ নিয়ে শেখ হাসিনা যদি আরও পদক্ষেপ নেন, তবে তার অনুসারীদের জানমাল হুমকির মুখে পড়বে। বিপ্লবের সময় এবং বিজয়ের পরও "বিপ্লববিরোধী" শক্তির বিরুদ্ধে তেমন হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়নি। অথচ ওবায়দুল কাদের নিজেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে সরকার পরিবর্তনের পর প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ নিহত হতে পারে।
শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক পদক্ষেপ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার একটি পরিকল্পিত প্রচেষ্টা, যা দেশকে আরও সংকটে ফেলতে পারে। জনগণ এবং শিক্ষার্থীরা যে কোনো সময় রাস্তায় নেমে বিপ্লববিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে। যারা দেশের শান্তি বিনষ্ট ও বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধে মানুষ জেগে উঠছে।
জনগণ এখনও ভুলে যায়নি কিভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল এবং কিভাবে তার বাড়ি গুঁড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। পরবর্তীতে সেই জায়গায় উচ্চ ভবন নির্মাণ করে কর্মকর্তাদের আবাসন ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এখন জনগণের দাবি, ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবে শহীদ হওয়া পরিবারগুলোর জন্য ৩২ নম্বরে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হোক। যারা অতীতে বাড়ি ধ্বংস ও নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিল, তারা এর দায় এড়াতে পারবে না। ইতিহাসের পরিহাস—যারা একসময় অন্যের বাড়ি ধ্বংস করেছিল, আজ তাদেরই বাড়ি একই পরিণতির শিকার হয়েছে।
আমাদের জানতে হবে, যেসব জেনারেল ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে উচ্ছেদ করেছিল এবং জাতীয় স্বার্থ উপেক্ষা করেছিল, তারা প্রতারক ও বিশ্বাসঘাতক। জনগণ কখনোই এই ষড়যন্ত্রকারীদের ক্ষমা করবে না।
২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লব এখনো শেষ হয়নি। এটি পরিপূর্ণ রূপ নিতে আরও কয়েক বছর সময় লাগতে পারে।* আজ নেওয়া প্রতিটি পদক্ষেপই বিপ্লবের অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে যতক্ষণ না বিপ্লবের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয় এবং রাষ্ট্র কাঠামোতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও সংস্কার সম্পন্ন হয়।
কলাম লেখক: প্রফেসর ড. এস কে আকরাম আলী