a আবারও নতুন চমক দিয়ে পূর্ণগঠন করা হচ্ছে হেফাজতের কমিটি
ঢাকা সোমবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৫
https://www.msprotidin.com website logo

আবারও নতুন চমক দিয়ে পূর্ণগঠন করা হচ্ছে হেফাজতের কমিটি


এমএস.প্রতিদিন ডেস্ক:
সোমবার, ৩১ মে, ২০২১, ১১:৫০
আবারও নতুন চমক দিয়ে পূর্ণগঠন করা হচ্ছে হেফাজতের কমিটি

ফাইল ছবি । হেফাজতের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির কেন্দ্রীয় কাউন্সিল

 
রাজনৈতিক পরিচয়ধারী নেতাদের বাদ দিয়ে খুব শিগগিরিই নতুন কমিটি ঘোষণা করতে যাচ্ছে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। আগামী দুই একদিনের মধ্যে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র গণমাধ্যমকে জানিয়েছে।  

নতুন কমিটিতে রাজনৈতিক পদে রয়েছেন এমন নেতাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। সংযুক্ত করা হয়েছে সদ্য বিলুপ্ত কমিটি থেকে বাদ পড়া আল্লামা শফীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত কয়েকজন নেতাকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হেফাজতের শীর্ষ এক নেতা সোমবার গণমাধ্যমকে বলেন, বিতর্কিত নেতাদের বাদ দিয়ে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরাসরি রাজনৈতিক দলের পদে আছেন এমন কাউকে খসড়া কমিটিতে রাখা হবেনা। 

সূত্রে জানা যায়, রাজনৈতিক পদে রয়েছেন এমন নেতাদের বাদ দিয়ে খসড়া কমিটি ইতোমধ্যে অনুমোদন দিয়েছেন বর্তমান আহ্বায়ক জুনায়েদ বাবুনগরী। দুই একদিনের মধ্যে এ কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেওয়া হবে।  

বাবুনগরীর তৈরি করা খসড়া কমিটি নিয়ে প্রকাশ্যে হেফাজত সংশ্লিষ্টরা মুখ খুলতে চাচ্ছেন না। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ওই কমিটিতে ৩০-৩৮ সদস্যবিশিষ্ট হতে পারে।  

খসড়া কমিটিতে জুনায়েদ বাবুনগরীকে আমির, মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদীকে মহাসচিব হিসেবে রাখা হয়। 

কমিটিতে মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মাওলানা সালাউদ্দিন নানুপুরী, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, মাওলানা মুহিব্বুল হক (সিলেট), মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব (বরিশাল) কয়েকজনকে নায়েবে আমির হিসেবে রাখা হয়েছে। 

যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে রয়েছেন- মাওলানা সাজিদুর রহমান (বি-বাড়িয়া), মাওলানা আবদুল আউয়াল (নারায়নগঞ্জ) ও মাওলানা আরশাদ রহমানী (বসুন্ধরা)। 
 
কমিটি থেকে বাদ পড়তে যাচ্ছেন সদ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, নাছির উদ্দিন মুনির, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, কেন্দ্রীয় নেতা জাকারিয়া নোমান ফয়জী, খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, হাসান জামিল, মুফতি হারুন ইজহারসহ নানা ইস্যুতে বিতর্কে জড়িয়ে পড়া হেফাজতের নেতারা।

একইভাবে আল্লামা আহমদ শফীর হত্যা মামলার অভিযুক্ত নেতাদেরও বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সদ্য বিলুপ্ত কমিটিতে একক আধিপত্য বিস্তারকারী ‘রাবেতা’ ও ‘জমিয়ত’ সিন্ডিকেটও ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ আগমনকে কেন্দ্র করে গত মার্চের ২৫, ২৬ ও ২৭ তারিখ দেশজুড়ে যে সহিংস ঘটনা ঘটেছে, অন্তত ১৭ জন মানুষের প্রাণহানি হয়। এসব নাশকতার পেছনে জড়িত থাকার অভিযোগে অন্তত এক ডজন হেফাজত নেতা গ্রেফতার রয়েছেন।

সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে কোণঠাসা হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতারা শুরু থেকেই সমঝোতার চেষ্টা করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় তারা গোয়েন্দা সংস্থা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে একাধিকবার বৈঠকও করেছেন। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হেফাজতে ইসলামের এক নেতা বলেন, সর্বশেষ কমিটিতে মামুনুল হক ও জমিয়ত এককভাবে তাদের আধিপত্য বিস্তার করে। যা নিয়ে বাবুনগরীকে বেশ বেকায়দায় পড়তে হয়েছে। পরে মামুনুর হকের রিসোর্টকাণ্ডের পর একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে ওই কমিটি বিলুপ্ত করেন। 

নতুন কমিটি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে নানামুখী চাপে রয়েছেন আল্লামা বাবুনগরী। তাই রাজনৈতিক পদধারী নেতাদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করছেন তিনি। তথ্যসূত্র: যুগান্তর

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

আরও পড়ুন

দেশ গঠনে যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে না উঠলে জাতির ভবিষ্যৎ অচিরই সংকটে পড়বে


কর্নেল(অব.) আকরাম, কলাম লেখক, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫, ০৪:৫৩
দেশ গঠনে যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে না উঠলে জাতির ভবিষ্যৎ অচিরই সংকটে পড়বে

ছবি সংগৃহীত

 

সংকট জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এটি ব্যক্তিগত ও জাতীয় জীবনে সমান গুরুত্বপূর্ণ। সংকট সমাধানের জন্য তার মূলসূত্র জানা অপরিহার্য। যদি সংকটের প্রকৃত কারণ বোঝা না যায়, তাহলে ব্যক্তিগত বা জাতীয়—কোনো ক্ষেত্রেই কার্যকর সমাধান সম্ভব নয়। বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর থেকেই নানা সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটে ভুগছে।  

আমাদের জাতীয় সংকটের শেকড় মূলত রাজনৈতিক নেতৃত্বের দুর্বলতায় নিহিত। দেশভাগের আগের সময়টিতে আমাদের ভাগ্য ভালো ছিল যে কিছু উজ্জ্বল মুসলিম নেতা পেয়েছিলাম, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত দেশভাগের পর সঠিক নেতৃত্বের অভাব দেখা দেয়।  

পাকিস্তান শুরু থেকেই তীব্র নেতৃত্ব সংকটে পড়েছিল। প্রথমত, প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর মৃত্যুর পর দেশটি গভীর সংকটে পড়ে। এরপর লিয়াকত আলী খানের হত্যার মাধ্যমে পাকিস্তান নেতৃত্বহীন হয়ে পড়ে। পাকিস্তানের সেই দুর্বল অবস্থার সুযোগ নিয়ে পূর্ব পাকিস্তান থেকে খাজা নাজিমুদ্দিন নেতৃত্বে এলেও তার মৃত্যুর পর সংকট আরও গভীর হয়। চৌধুরী মোহাম্মদ আলী (বগুড়া) এবং পরে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী পাকিস্তানের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন, কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি হয়, যা ১৯৬৯ সালে আইয়ুব খানের পতনের মাধ্যমে শেষ হয়।  

পূর্ব পাকিস্তান থেকে তিনজন প্রধানমন্ত্রী আসলেও আমাদের জনগণ তখনো রাজনৈতিক বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছিল। যদিও পাকিস্তান তখন 'উন্নয়নের দশক' পার করছিল, কিন্তু একইসঙ্গে গণতান্ত্রিক চর্চা ধ্বংস হয়েছিল, যা জাতীয় ঐক্যের ব্যর্থতার মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়।  

দুর্বল নেতৃত্ব ও সামরিক শাসনের সুযোগ নিয়ে ভারত তার পূর্ব পাকিস্তানি এজেন্টদের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ছিল ভারতীয় রাজনৈতিক সংযোগের একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ, যা স্বাধীনতার পর শেখ মুজিব নিজেই স্বীকার করেছিলেন।  

নিঃসন্দেহে, বাংলাদেশের জন্ম ভারতীয় কৌশলগত রাজনীতির ফল। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ভারত পূর্ব পাকিস্তানে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা শুরু করেছিল। যদিও আমরা একাত্তরে স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভারতীয় রাজনৈতিক ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়েছি। এখন ভারত ১৯৭১ সালের বিজয়কে তার নিজের জয় হিসেবে তুলে ধরতে চায়।  

ভারত সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে শুরু থেকেই নিজের উপর নির্ভরশীল করার চেষ্টা করেছে। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে ভারতের উপনিবেশে পরিণত করা এবং আমাদের নেতৃত্ব তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলো—বিশেষত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দুর্বল করা। ভারত এতে সফল হয়েছে, আমাদের নেতৃত্বকে কার্যত শূন্যের কোঠায় নামিয়ে এনেছে।  

আমাদের দুর্ভাগ্য যে, দূরদর্শী ও যোগ্য নেতৃত্ব এখনো আমরা পাইনি, ব্যতিক্রম শুধু জিয়াউর রহমান। তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি ভারতের আধিপত্যবাদী রাজনীতি বুঝতে পেরেছিলেন এবং একটি টেকসই রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তার হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-কেন্দ্রিক জাতীয় রাজনীতির অবসান ঘটে।  

১৯৮১ সালের মে মাসে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর থেকে আমরা নেতৃত্ব সংকটে ভুগছি। গত চার দশকে সমাজের জন্য যোগ্য নেতাদের তৈরি করতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি, এমনকি বিএনপিও তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি।  

বর্তমানে আমাদের জাতীয় জীবন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে প্রকৃত পেশাদার নেতৃত্বের অভাব সর্বস্তরে দৃশ্যমান। গত সরকার কৌশলে সমাজের সব স্তর থেকে নেতৃত্ব বিকাশের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগকে দিয়ে একটি পারিবারিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, যা শেখ হাসিনা অত্যন্ত সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছেন জাতীয় স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে।  

২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের পর নতুন পরিবেশে আমরা নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি। প্রথমত, এই বিপ্লবের কিছু অংশগ্রহণকারী বিপ্লবের চেতনাকে অগ্রাহ্য করছে। বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন এবং নবগঠিত এনসিপি (NCP) গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় বিষয়গুলোর—বিশেষ করে নির্বাচন ও সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্যে আসতে পারছে না।  

তারা জাতীয় স্বার্থের পরিবর্তে দলীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, যা জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে যাচ্ছে। অথচ জুলাই বিপ্লবে ছাত্ররা অসাধারণ ভূমিকা রেখেছে, যা ইতিহাস কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।  

তবে নেতৃত্বের জন্য শুধু আবেগ নয়, অভিজ্ঞতাও জরুরি। অল্পবয়সী ছাত্ররা এখনো রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যথেষ্ট পরিপক্ব নয়। তাদের ধাপে ধাপে রাজনীতি, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। আমরা তাদের হাতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব ছেড়ে দিতে পারি না, কারণ এটি কোনো পরীক্ষার বিষয় নয়। তাদের ধৈর্য ধরতে হবে এবং প্রকৃত নেতা হয়ে উঠতে হবে।  

আমাদের সমাজের নেতৃত্ব সংকট দূর করতে হলে সুপরিকল্পিত নেতৃত্ব তৈরির কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু শেখ হাসিনা তার ভারতীয় প্রভুদের সহায়তায় ইচ্ছাকৃতভাবে এই প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করেছেন।  

জনপ্রশাসনের কোনো খাতই তিনি অক্ষত রাখেননি। যদি নেতৃত্ব বিকাশের জন্য জরুরি সংস্কার না করা হয়, তাহলে বাংলাদেশ তার সার্বভৌমত্ব ধরে রাখতে পারবে না। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা, প্রশাসন ও বিচারব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে, যা তাদের স্থানীয় দোসরদের সহায়তায় ভারত অত্যন্ত সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছে।  

যোগ্য ও মেধাবী মানুষ ছাড়া আমাদের পক্ষে এই বিশাল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে টিকে থাকা অসম্ভব। ভারতের সমাজে মেধাবী ও দক্ষ মানুষের অভাব নেই। শুধু আবেগ ও বড় বড় কথা বলে এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।  

আমরা এখনো দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নিতে পারিনি, অথচ নেতৃত্ব সংকট এখন সবচেয়ে জরুরি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের হাতে সময় খুবই কম। এখনই যদি নেতৃত্ব গঠনের ওপর গুরুত্ব না দিই, তাহলে জাতির ভবিষ্যৎ সংকটে পড়বে।


লেখক: ড. শেখ আকরাম আলী
কলাম লেখক ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

৪৩তম বিসিএস এর ২য় গেজেট বঞ্চিত নিরপরাধ ক্যাডার অফিসারদের গেজেটভুক্ত করার দাবি


সাইফুল আলম, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
রবিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৫, ০৭:৫৪
৪৩তম বিসিএস এর ২য় গেজেট বঞ্চিত নিরপরাধ ক্যাডার অফিসারদের গেজেটভুক্ত করার দাবি

ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন

 

সাইফুল আলম, ঢাকা:  অনতিবিলম্বে ৪৩তম বিসিএস এর ২য় গেজেট বঞ্চিত নিরপরাধ ক্যাডার অফিসারদের গেজেটভুক্ত করে চাকরিতে যোগদান নিশ্চিত করার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন ৪৩তম বিসিএস এর দ্বিতীয় গেজেট বঞ্চিত ২২৭টি পরিবার এবং ক্যাডার অফিসারবৃন্দ।

আজ ১৬ মার্চ ২০২৫ তারিখে বিকাল ৩ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলায় মাওলানা আকরাম খা হলে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সকল সাংবাদিক ভাই ও বোনদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও সালাম জানিয়ে বলেন, আমরা ৪৩তম বিসিএস এর দ্বিতীয় গেজেট বঞ্চিত ২২৭টি পরিবার আজ আবারও আপনাদের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ও দেশবাসীর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

প্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা, আপনারা জানেন, মেধাভিত্তিক জাতি গঠনের লক্ষ্যে শতভাগ কোটামুক্ত ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় দীর্ঘ চার বছর ধরে নিজের মেধা, যোগ্যতা, পরিশ্রম, মা বাবার আজীবনের ত্যাগ এবং শিক্ষক-আপনজনদের অশেষ আশীর্বাদে আমরা ২১৬৩ জন বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের মাধ্যমে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে দেশের সেবায় আত্মনিয়োগের স্বপ্ন দেখেছিলাম। দীর্ঘ দশ মাস ধরে দুই ধাপে পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর ১৭ নভেম্বর ২০২৪ খ্রি. যোগদানের তারিখ নির্ধারণ করে ১৫ অক্টোবর, ২০২৪ আমাদের বহুল কাঙ্খিত গেজেট প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে ২৮ অক্টোবর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমাদের যোগদান পিছিয়ে ১ জানুয়ারি ২০২৫ খ্রি. নির্ধারণ করা হয়। আমরা এটিকে নিয়তির অংশ হিসেবে মেনে নিয়েছিলাম। এরই মধ্যে যোগদানের প্রস্তুতি হিসেবে আমাদের সহকর্মীদের মধ্যে অনেকেই পূর্বের চাকুরী থেকে ইস্তফা দেন। কিন্তু কে জানতো, আমাদের জন্য আরও বড় আঘাত অপেক্ষা করছিল।

৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ যোগদানের একদিন পূর্বে প্রকাশিত নতুন গেজেটে আমাদের ২২৭ জনের নিয়োগ স্থগিত করে গেজেট প্রকাশ করা হয় যা আমাদের জীবনকে এক অনিশ্চয়তার অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। বিসিএস এর ইতিহাসে একবার গেজেট প্রকাশিত হওয়ার পর নিয়োগ স্থগিত করার উদাহরণ আর দ্বিতীয়টি নেই। আমাদের ২২৭ জন সুপারিশপ্রাপ্ত অফিসারবৃন্দের নিয়োগ স্থগিত করে ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ গেজেট প্রকাশিত হলে ৩১ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সামনে আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান করে আমাদেরকে ২য় গেজেট থেকে বাদ দেওয়ার যৌক্তিক কারণ জানতে চাই। তৎপ্রেক্ষিত ২ জানুয়ারি ২০২৫ খ্রি, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আমাদের কাছে পুনঃবিবেচনার জন্য আবেদনপত্র আহ্বান করে। এর প্রেক্ষিতে আমরা সকলেই সেই সুযোগ গ্রহণ করি এবং সুবিচারের আশায় অপেক্ষা করতে থাকি।

এরপর, ৯ জানুয়ারি ২০২৫, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব স্যার উপস্থিত সকল মিডিয়ার সামনে স্পষ্ট ভাষায় জানান যে, যদি কারও বিরুদ্ধে তিনটি গুরুতর অভিযোগ-
(১) ফৌজদারি অপরাধ,
(২) রাষ্ট্রদ্রোহিতা, এবং
(৩) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কারাদেশ
না থাকে, তবে তারা যোগদান করতে পারবেন। তিনি আরও জানান, এই প্রক্রিয়ার সাথে যেহেতু আরো দুটি অফিস অর্থাৎ মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ও মহামান্য রাষ্ট্রপতির দপ্তর জড়িত, নতুন গেজেট প্রকাশিত হতে দুই থেকে তিন কর্মদিবস প্রয়োজন হতে পারে।

কিন্তু এক গভীর বেদনাবিধুর নির্মম বাস্তবতা হচ্ছে আজ দুই মাস পেরিয়ে গেলেও সেই গেজেট আলোর মুখ দেখেনি। আমরা এখনো অন্ধকারে, অনিশ্চয়তার অতল গহ্বরে। আমাদের প্রাত্যহিক জীবন বিপন্ন, জীবন যেন থমকে গেছে সেই ৩০ ডিসেম্বরে। আপনারা জানেন, ২৮-৪২তম বিসিএস পর্যন্ত ১৫ বছর ধরে গেজেট বঞ্চিত ২৫৯ জনের সকলকে অন্তর্বর্তী সরকার মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিয়োগ প্রদান করেছেন যা বৈষম্যহীন বাংলাদেশে এক অনন্য দৃষ্টান্ত। কিন্তু একই সময়ে, ৪৩তম বিসিএস থেকে ২২৭ জনকে বাদ দেয়া স্পষ্টত পূর্বের বৈষম্যেরই ধারাবাহিকতা। এই বৈষম্য শুধু ২২৭ জনের পরিবারের প্রতি অন্যায়ই নয়-নতুন বাংলাদেশের জন্য এটি এক লজ্জাজনক অধ্যায়।
গত ২ ফেব্রুয়ারি বইমেলায় জনপ্রশাসনের স্টল উদ্বোধনের সময়ও সম্মানিত সিনিয়র সচিব স্যার গণমাধ্যমে বলেছেন যে, এই ২২৭ জনের বেশিরভাগই খুব শীঘ্রই চাকরিতে যোগদান করতে পারবে। কিন্তু সেই বক্তব্যের পরও প্রায় দেড় মাস পেরিয়ে গেছে, অথচ গেজেট এখনো প্রকাশিত হয়নি।

আমাদের সহকর্মীরা যেখানে আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরে বেতন-বোনাসসহ পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, সেখানে আমরা ২২৭ জন পরিবারকে মুখ দেখানোর অবস্থায়ও নেই। আমাদের অনেকেই তাদের পিতা- মাতার বয়স, অসুস্থতা, আবেগ, স্বপ্ন বিবেচনা করে এত বড় দুঃসংবাদ এখনো পরিবারকে জানাননি, কারণ আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিয়োগ পাবো-এই আশ্বাস পেয়েছিলাম।

আপনাদের মাধ্যমে আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই- “আগামী ১৭ মার্চ”, রোজ সোমবারের মধ্যে ২২৭ জনের মধ্যে নিরপরাধ সকলের গেজেট প্রকাশ করতে হবে। এটি আমাদের ন্যায্য অধিকার, এটি আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন, এটি আমাদের আত্মসম্মানের প্রশ্ন। যে বৈষম্য ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে বিপ্লবের মাধ্যমে আমাদের নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছিল, সেই বাংলাদেশে আজ ২২৭টি পরিবারের সাথে চরম বৈষম্য করা হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, সরকার আমাদের ন্যায়সঙ্গত দাবির প্রতি সম্মান জানাবেন এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। আমরা দেশের প্রতি, জাতির প্রতি এবং সুবিচারের প্রতি অবিচল আস্থাশীল। আমরা আশাবাদী, রাষ্ট্র আমাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে এবং অনতিবিলম্বে আমাদের স্বপ্নের চাকরিতে যোগদানের সুযোগ করে দেবে।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম
Share on Facebook

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন এর সর্বশেষ

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন এর জনপ্রিয়

সর্বশেষ - রাজনীতি