a
ফাইল ছবি
পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, থানার ওসি চাইলেই হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা হতে পারেন। মানুষের জন্য কাজ করে তাদের হৃদয় ও মন জয় করতে পারেন। এটা টাকা দিয়ে কেনা যায় না।
শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রেঞ্জের আগস্ট মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, পুলিশ যত ভালো কাজ করুক না কেন একটি খারাপ কাজ সব অর্জনকে নষ্ট করে দেয়। সমাজ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা ও অপরাধ পরিস্থিতিরও পরিবর্তন হয়। সর্বদা সমাজের পরিবর্তনশীল চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে পুলিশিং কার্যক্রম চালু রাখতে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।
জুনিয়রদের যোগ্য করে গড়ে তোলা সিনিয়রদের দায়িত্ব উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, জুনিয়রদের জন্য ভালো উদাহরণ তৈরি করতে হবে। ভালো কাজে তাদেরকে মোটিভেট করতে হবে। তাদেরকে সুপারভাইজ করতে হবে। চাকরিতে ‘প্যাশন’ আনতে হবে। প্রত্যেক পুলিশ সদস্যের সম্মান ও মর্যাদাবোধ থাকতে হবে।
বিট পুলিশিং একটি কার্যকর পদ্ধতি জানিয়ে পুলিশপ্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধু প্রতিটি ইউনিয়নে থানা করার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন মূলত বিট পুলিশিং সে লক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা করেছিলেন; প্রতিটি গ্রামে শহরের সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে প্রতিটি ইউনিয়নে অপরাধ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিট পুলিশিং কার্যকর অবদান রাখতে পারে।
আইজিপি বলেন, কোনো পুলিশ সদস্য যদি অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে সেটা বন্ধ করতে হবে। পুলিশে কোনো অপরাধীর জায়গা নেই। ঢাকা রেঞ্জের বিভিন্ন ইনোভেশন কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি অন্যান্য ইউনিটেও এ ধরনের ইনোভেশনের চর্চার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সূত্র: ইত্তেফাক
ছবি সংগৃহীত: সালমান এফ রহমান
বেক্সিমকো গ্রুপের মালিক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সংবাদ প্রকাশের পর কারা কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসেছে।
কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সালমান এফ রহমানসহ ডিভিশন পাওয়া ভিআইপি বন্দিদের কক্ষে তল্লাশি চালিয়েছেন কারা কর্মকর্তারা। এ সময় সালমানসহ কয়েকজন ভিআইপি কারা কর্মকর্তাদের ওপর খেপে যান বলে কারা সূত্রে জানা গেছে। সালমান বলেন, ‘আপনারা আমাদের ডিস্টার্ব করছেন।’
গতকাল মঙ্গলবার কালের কণ্ঠে “কারাগারেও তৎপর ‘দরবেশ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয় এবং সংবাদে সালমান এফ রহমানের ফোনালাপের তথ্য তুলে ধরা হয়। এ খবর প্রকাশের পর যেসব কারারক্ষী এতোদিন ভিআইপি বন্দিদের দায়িত্ব পালন করতেন তাদের সরিয়ে দিয়ে নতুন কারারক্ষীদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ভিআইপি বন্দিদের একসঙ্গে গল্প করার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে তারা একসঙ্গে হাঁটাহাঁটি করতে পারবেন কিন্তু হাঁটার সময় ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ কোনো আলোচনা করে কিনা, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। রাষ্ট্রবিরোধী কোন আলোচনা ধরা পড়লে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
কেউ যেন অর্থ দিয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার না করেন, সে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। পুরো বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষ মনিটর করছেন বলে তথ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। সূত্র: বিডি প্রতিদিন
ছবি সংগৃহীত
নিউজ ডেস্ক: ঐক্য জীবনের প্রতিটি স্তরে সাফল্যের মূল চাবিকাঠি এবং এটি একটি ক্লাব থেকে শুরু করে একটি জাতিরাষ্ট্র পর্যন্ত সাফল্যের প্রধান মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত। যে কোনো সাফল্যের জন্য ঐক্য অপরিহার্য। সম্প্রতি আমরা বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্য প্রত্যক্ষ করেছি।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট বিপ্লব বাংলাদেশের স্বাধীনতাপ্রিয় মানুষের মধ্যে এক নতুন ঐক্যের জন্ম দিয়েছে। আমরা আবারও ১৯৭১ সালের মতো জাতীয় ঐক্য প্রত্যক্ষ করেছি এবং এটি জাতির জন্য মহান বিজয় এনেছে, যার মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন ঘটেছে।
ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন সহজ ছিল না, কিন্তু জনগণ এবং বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী শক্তি ও জামায়াতে ইসলামী নেতৃত্বাধীন ইসলামী শক্তি অত্যন্ত আন্তরিক ও সংকল্পবদ্ধ হয়ে এই ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।
বিএনপি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল কখনোই ফ্যাসিস্ট সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছাড়া ছেড়ে দেয়নি এবং গত পনেরো বছরে তাদের অনেক নেতা-কর্মী জীবন উৎসর্গ করেছেন। জামায়াতে ইসলামীর ক্ষেত্রেও একই অবস্থা ছিল এবং তারা অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাদের কোনো রাজনৈতিক পরিসর দেওয়া হয়নি; বরং পুরো ফ্যাসিবাদী শাসনামলে তারা বাড়িতে বন্দী থাকতে বাধ্য হয়েছেন। বিনা কারণে কয়েকজন শীর্ষ নেতা ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলেছেন।
হেফাজতে ইসলামের অনেক নেতা-কর্মীকে ফ্যাসিস্ট সরকার হত্যা করেছে। অন্যান্য ইসলামী সংগঠনের আলেমগণও এই সময়ে অত্যন্ত কষ্ট ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
তবে কোনো কিছুই জনগণের মনোবল ধ্বংস করতে পারেনি এবং পুরো জাতি ধৈর্যের সঙ্গে ফ্যাসিস্ট শাসনের পতনের অপেক্ষায় ছিল। আল্লাহর অশেষ রহমতে এটি সম্প্রতি ঘটেছে এবং তিনি আমাদের জন্য একটি নতুন অধ্যায় খুলে দিয়েছেন যাতে আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অত্যন্ত সক্রিয় ছিল এবং এটি জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে গতি পায়। এরপর রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ ছাত্রদের নেতৃত্বে আন্দোলনে যোগ দেয় এবং ৫ই আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন সম্ভব হয়।
আমরা জাতি হিসেবে সম্প্রতি অর্জিত জুলাই-আগস্ট বিজয়কে হারানোর সামর্থ্য রাখি না। বিএনপি, জামায়াত, ছাত্র সমাজ এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার— সকলের উচিত এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকা, যা ঐক্যের মাধ্যমে অর্জিত এই বিজয়কে নষ্ট করতে পারে।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের ঘোষণা যত দ্রুত সম্ভব দেওয়া উচিত ছিল এবং সবকিছু সেই অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা যেত। এখনও সময় শেষ হয়ে যায়নি, এবং এখনই সময় নষ্ট না করে এটি করা উচিত।
তবে এই ঘোষণা অবশ্যই জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে হওয়া উচিত এবং জাতীয় সিদ্ধান্তে সব পক্ষের প্রতিনিধিত্ব থাকতে হবে।
সমস্ত রাজনৈতিক বিষয় এবং সংস্কারের ব্যাপারগুলো পক্ষগুলোর মধ্যে সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করা উচিত। জাতীয় সরকার গঠন করা যেতে পারে, যা অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে। কারণ, অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক শত্রুরা আমাদের ঐক্য ধ্বংস করার জন্য সক্রিয় রয়েছে। ঐক্যের মাধ্যমে অর্জিত সাফল্য আমাদের নিজেদের ভুলের কারণে যেন ভবিষ্যতে নষ্ট না হয়।
লেখক: সম্পাদক, মিলিটারি হিস্ট্রি জার্নাল এবং আইন ও ইতিহাসের অধ্যাপক।