a
ছবি: সংগৃহী যুগান্তর ডেস্ক
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) এস আই রেজাউল করিম নিজেকে ইন্সপেক্টর রবিউল পরিচয়ে টার্গেট ব্যক্তিদের ফোন করেন। তাদের বলেন, ‘আপনার নামে অভিযোগ আছে। আপনি মানি লন্ডারিং করেন।’ টার্গেট ব্যক্তিকে মালিবাগের সিআইডি হেডকোয়ার্টার্সে ডাকেন তিনি। অফিসে না আসলে ওই ব্যক্তিকে তার বাসা থেকে তুলে নিয়ে আসেন। পরে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন। তার এসব কাজে সহায়তা করেন আবু সাঈদ নামে সিআইডির আরেক সদস্যসহ অপর ৩ ব্যক্তি। দীর্ঘদিন ধরেই তারা এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। পুলিশের তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তার এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড এতদিন কেউ না জানলেও এক ভুক্তভোগীর করা মামলায় বিষয়টি সামনে উঠে এসেছে। এ নিয়ে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক হয়েছে। শর্ষের ভেতর ভূত। এ যেন সেই বইয়ের বাগধারাই বাস্তবতা। আসলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেকের বিরুদ্ধে মানুষকে জিম্মি করে অথবা তাদের কাছে বিভিন্ন আইনগত সুবিধা নিতে গেলে উল্টো তারাই প্রকারন্তরে ক্ষতিগ্রস্থ ও হেরাজমেন হন। আবার বিভাগীয় তদন্তে অনেকেই ছাড় পেয়ে যান, ফলে পরবর্তীতে এরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। তবে এবার ভুক্তভোগী গার্মেন্ট ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান অনেকটা সাহসের পরিচয় দিয়েছেন। রাজধানীর ভাটারা থানায় মামলা করেছেন। তাতে উল্লেখ করেছেন, তাকে জিম্মি করে তার বাবার অপারেশনের জন্য জমি বিক্রির টাকা ও ব্লাংক চেকে সই নেয় সিআইডির ওই চক্রের সদস্যরা। এটি তিনি কোনভাবেই সহ্য করতে পারেননি। ওই মামলায় অভিযুক্ত সিআইডি এসআই রেজাউল করিম (৩৯), কনস্টেবল আবু সাঈদসহ (৩২) পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অপহরণ, মারধর ও চাঁদাবাজির অভিযোগ করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারও করেছে ডিবি পুলিশ। অন্য আসামিরা হলেন- বরিশালের উজিরপুরের মো. ইমন (২১), একই উপজেলার আব্দুল্লাহ আল ফাহিম (২১) ও ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার শরীফ হোসেন (২৬)। ফাহিম ও ইমনকে গত ৩ ডিসেম্বর গ্রেফতার করা হয়। আর বাকি তিনজনকে রোববার গ্রেফতার করা হয়। সোমবার অনেকটা গোপনেই তাদের কারাগারে পাঠিয়েছে ডিবি পুলিশ। অথচ অন্যান্য আসামিদের বেলায় ব্রিফিং করে আসামিদের ছবিসহ গণমাধ্যমকে অবহিত করা হয়। ভাটারা থানায় করা মামলার বাদী মো. মোস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, তিনি গার্মেন্ট ব্যবসায়ী। টাকা নেওয়া ছাড়াও তার কাছ থেকে ব্লাংক চেকে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। ওই এলাকার অনেকের কাছ থেকেই এই চক্র বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ফন্দি আটিয়ে টাকা আদায় করেছে। এর আগে রংপুর থেকে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় গিয়ে এক বাড়ি থেকে দুজনকে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সিআইডির তিন সদস্যকে আটকের পর আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়। সিআইডির ওই তিন সদস্যের মধ্যে একজন সহকারী পুলিশ সুপার, একজন সাব ইন্সপেক্টর ও একজন কনস্টেবল। সিআইডির সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় নানা অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে। অনেকে কারাগারেও গিয়েছেন কিন্তু পরবর্তীতে তাদের খবর অদৃশ্যই থেকে যায়। ৩১ অক্টোবর ভাটারা থানায় দায়ের করা মামলায় ভুক্তভোগী মো. মোস্তাফিজুর রহমান উলেখ করেন, গত ৭ অক্টোবর আমাকে হোয়াটস-অ্যাপে ফোন করে এক ব্যক্তি বলেন, আমি সিআইডির ওসি রবিউল বলছি। আপনি আগামীকাল সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে মালিবাগ সিআইডি অফিসে এসে আমার সঙ্গে দেখা করবেন। তখন মোস্তাফিজ বলেন, ‘আমি একটু ব্যস্ত আছি। আমি আগামীকাল দুপুরের পর আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারব।’ পরদিন সকালে ৪ জন হেলমেটধারী ব্যত্তি সিআইডির পোশাক ও আইডি কার্ডসহ আমাকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। এ সময় আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। প্রকাশ্যে চড়থাপ্পড় মারে। পরে আমাকে পূর্বাচলের নির্জন একটি লেকের পাড়ে নিয়ে মারধর করে। আমার কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। পরে ইসলামী ব্যাংকের নিকুঞ্জ শাখায় আমাকে নিয়ে যায়। সেখানে আমার এটিএম কার্ডের মাধ্যমে বুথ থেকে ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা তুলে নেয় তারা। পরে নির্যাতন করে ইসলামী ব্যাংকের দুটি ব্লাংক চেকে সই নেয়। এমনকি তিনশ টাকার একটি ব্লাংক স্ট্যাম্প পেপারেও সই নেয় তারা। বিষয়টি কাউকে বললে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।’ এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃতদের বিষয়ে জানা গেছে, এসআই রেজাউল সিআইডি হেডকোয়ার্টার্সে কর্মরত। তার বাড়ি পিরোজপুরের ইন্দুরকানি থানার চর বলেশ্বর বালিপাড়া। তার বাবার নাম মোহাম্মদ আলতাব হোসেন হাজী। আর কনস্টেবল আবু সাঈদও সিআইডি হেডকোয়ার্টার্সে কর্মরত। তার বাড়ি রাজবাড়ী জেলার পাংশা থানার শাহমিরপুর। বাবার নাম আব্দুল হামিদ। সোমবার বিকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকরা এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের কাছে জানতে চান। তখন তিনি বলেন, ভাটারা থানায় চলতি বছরের আগস্ট মাসে এক ট্রাভেল ব্যবসায়ী ভুক্তভোগী হিসাবে একটি মামলা করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিচয় দিয়ে ফোন করে ধরে নিয়ে টাকা-পয়সা আদায় শেষে ফেলে যাওয়ার। ডিবি প্রধান বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই এমন বেশ কিছু অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের (উত্তর) তদন্তের নামে। তদন্তের পর্যায়ে বরিশাল থেকে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে আদালতের তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে অপহরণ ও টাকা আদায়ের কথা স্বীকার করে। এই সময়ে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, চক্রে একজন পরিদর্শক ও আরেকজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদের দুই পুলিশ সদস্য জড়িত রয়েছে। যদিও পরে জানা যায়, যিনি নিজেকে পরিদর্শক রবিউল পরিচয় দিয়েছেন তিনি আসলে একজন এসআই। তারা নিজেদের ভুয়া নাম-পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে টাকা-পয়সা আদায় করে থাকে। তিনি বলেন, পরবর্তীতে দুজনের নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়ায় অপহরণ ও ব্যাংক থেকে টাকা তোলার সিসিটিভি ফুটেজ, কল লিস্ট এবং লোকেশন ট্রাকিং করে নিশ্চিত হওয়ার পর সিআইডির দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। ডিবি প্রধান আরও বলেন, আমরা তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করব। তাদের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করা হবে আর কেউ জাড়িত আছে কি না, অথবা বর্তমান ও সাবেক কোনো পুলিশ সদস্য জড়িত আছে কি না। এদিকে, ডিবির ওয়ারী বিভাগের ডিসি আ. আহাদের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবি প্রধান বলেন, এক ব্যক্তির অভিযোগ পেয়ে জয়েন কমিশনার নর্থকে প্রধান করে দুই সদস্যে কমিটি করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পরই বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান ডিবি প্রধান। সূত্র: যুগান্তর
ফাইল ছবি
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শামলাপুর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ককটেল বানানোর সময় দুই রোহিঙ্গাকে আটক করেছেন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) সদস্যরা। এ সময় তাদের কাছ থেকে চাকু, লাল স্কচটেপ, কাঁচি, রেক্সিন ও ৯টি ককটেল-সদৃশ বস্তু উদ্ধার করা হয়।
কক্সবাজার ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক এসপি তারিকুল ইসলাম আজ বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) সকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ।
আটককৃত ওই দুই রোহিঙ্গা নাগরিকরা হলেন উখিয়া বালুখালী ক্যাম্প-১৮-এর মৃত নুর হোসেনের ছেলে মো. শাহীন (২২) ও নুর হোসেনের ছেলে মো. সাহেদ (১৮)।
কক্সবাজার ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক তারিকুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, বুধবার (১৪ জুলাই) গভীর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টেকনাফ শামলাপুর এপিবিএন ক্যাম্পের অফিসার ও ফোর্সের নেতৃত্বে ক্যাম্প-২৩ (শামলাপুর) এ/৪ ব্লকে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।
তিনি আরও বলেন, আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য টেকনাফ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
ফাইল ছবি
ইসরায়েল ক্রমেই গৃহযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে - এমন আশঙ্কা করেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইহুদ ওলমার্ট। তিনি বলেছেন, এই মুহূর্তে ইসরায়েল মারত্মক ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
ব্যাপক প্রতিবাদ ও গণবিক্ষোভ সত্ত্বেও ইসরায়েলি পার্লামেন্ট গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা খর্ব করা সংক্রান্ত একটি বিল পাস করেছে। এর ফলে বাস্তবে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভার ক্ষমতা বাড়বে।
ওলমার্ট আরও বলেছেন, ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা গণতন্ত্রের ভিত্তিগুলোর জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে যা আমাদের পক্ষে সহ্য করা সম্ভব নয়।
ইসরায়েলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের সাবেক প্রধান ড্যানি ইয়াটোম বলেছেন, বিচারিক কাঠামোতে পরিবর্তন আনার প্রতিবাদে বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত ছিল।
এর আগে ইসরায়েলের সাবেক যুদ্ধমন্ত্রী বেনি গান্তজ সতর্ক করে বলেছিলেন, বিচারিক কাঠামো পরিবর্তনের বিল পাস করা হলে গৃহযুদ্ধ দেখা দিতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা হ্রাসের প্রস্তাবটি সোমবার সংসদে পাস হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো অস্থিরতা ও ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভকারী ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সূত্র: জেরুজালেম পোস্ট, টাইমস অব ইসরায়েল