a বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার ৩৬ বছরের অপেক্ষা শেষে শিরোপা অর্জন
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫
https://www.msprotidin.com website logo

বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার ৩৬ বছরের অপেক্ষা শেষে শিরোপা অর্জন


ক্রীড়া ডেস্ক:মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২, ০৭:১৩
বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার ৩৬ বছরের অপেক্ষা শেষে শিরোপা অর্জন

ছবি: সংগৃহীত

৩৬ বছরের অপেক্ষার প্রহর পেরিয়ে চরম নাটকীয়তার এক ফাইনাল শেষে টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে হারিয়ে নিজেদের তৃতীয় বিশ্বককাপ শিরোপা জিতলো আর্জেন্টিনা। রোববার (১৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় ফাইনালে মাঠে নামে দু'দল। ম্যাচের ২৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে লিড এনে দেন লিওনেল মেসি। এরপর ম্যাচের ৩৬ মিনিটে আর্জেন্টিনার লিড বাড়িয়ে দেন ডি মারিয়ে। এরপর আক্রমণ করেও গোল করতে ব্যর্থ হয় ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনা। শেষ পর্যন্ত আর কোন গোল না হলে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা। বিরতি থেকে ফিরে জোড়া গোল করে ফ্রান্সকে সমতায় ফেরায় কিলিয়ান এমবাপ্পে। শেষ পর্যন্ত আর কোন গোল না হলে অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ফাইনাল ম্যাচটি। অতিরিক্ত সময়েও গোল করতে ব্যর্থ হয় দু'দল। তবে অতিরিক্ত সময়ের বিরতি থেকে ফিরেই মেসির গোলে লিড পায় আর্জেন্টিনা। এরপর পেনাল্টি থেকে গোল করে আবারও ফ্রান্সকে সমতায় ফেরায় এমবাপ্পে। এরপর টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচটি। টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে ফ্রান্সকে হারিয়ে বিশ্বকাপের শিরোপা জিতলো আর্জেন্টিনা।

অতিরিক্ত সময়ের শুরুতেই ফ্রি কিক পায় আর্জেন্টিনা। তবে কাজে লাগাতে পারেনি তারা। এরপর ম্যাচের ৯৪ মিনিটে আক্রমণে যায় ফ্রান্স। তবে তা ক্লিয়ার করে দেন ডিফেন্ডাররা। ম্যাচের ৯৮ মিনিটে ডি পল ক্রস করলেও তা চলে যায় সাইড লাইনের বাইরে।

এরপর ম্যাচের ৯৯ মিনিটে কোম্যান ক্রস করলেও তা নিজের দখলে নেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। ম্যাচের ১০০ মিনিটে বাম দিক থেকে ফ্রি কিক পায় ফ্রান্স। সেখান থেকে কোম্যানের নেওয়া দেড করে ক্লিয়ার করলেও কর্নার পায় ফ্রান্স। তবে কর্নার কাজে লাগাতে পারেনি তারা।

ম্যাচের ১০৪ মিনিটে ডি বক্সের ভেতর থেকে শট করেন আকুনা। তবে তা চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে। ম্যাচের ১০৫ মিনিটে গোলের সহজ সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। লাওতারো মার্টিনেজের নেওয়া শট আটকে দেন দায়ত উপামেকানো। এরপরে শট করলেও তা হেড করে ক্লিয়ার করেন রাফায়েল ভারানে। শেষ পর্যন্ত কোন গোল না হলে সমতায় থেকে অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধ শেষ করে আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স।

অতিরিক্ত সময়ের বিরতি থেকে ফিরে আক্রমণে যায় আর্জেন্টিনা। তবে জায়গা ছেড়ে বেড়িয়ে এসে ক্লিয়ার করে দেন হুগো লরিস। এরপর মেসির নেওয়া শটও আটকে দেন লরিস। ম্যাচে ১০৮ মিনিটে গোলের দেখা পায় আর্জেন্টিনা। ডি বক্সের ভেতর থেকে শট করে বল জালে জড়ান লিওনেল মেসি। তার গোলে ম্যাচে ফের লিড পায় আর্জেন্টিনা।

এরপর গোল শোধে মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে ফ্রান্স। ম্যাচের ১১৫ মিনিটে কর্নার পায় ফ্রান্স। সেখান থেকে ম্যাচের ১১৬ মিনিটে পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। পেনাল্টি থেকে ফের গোল করে ফ্রান্সকে সমতায় ফেরায় এমবাপ্পে। সেই সঙ্গে নিজের হ্যাট্রিক পূর্ণ করেন এমবাপ্পে। এরপর ম্যাচের ১১৯ মিনিটে কর্নার পায় আর্জেন্টিনা। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে অসাধারণ সেভে দলকে রক্ষা করেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। শেষ পর্যন্ত আর কোন গোল না হলে টাইব্রেকারে গড়ায় ফাইনাল ম্যাচ।

টাইব্রেকারের প্রথম শট থেকে গোল করেন এমবাপ্পে। এরপর আর্জেন্টিনার পক্ষে প্রথম শট থেকে গোল করেন মেসি। ফ্রান্সের পক্ষে কোম্যানের নেওয়া দ্বিতীয় শট রক্ষা করেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। আর্জেন্টিনার পক্ষে দ্বিতীয় শট থেকে গোল ক্রেন পাওলো দিবালা। এরপর ফ্রান্সের পক্ষে শট থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয় চুয়ামেনি। তবে আর্জেন্টিনার পক্ষে তৃতীয় শট থেকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে আরও এগিয়ে নেন পারদেস।

এরপর ফ্রান্সের পক্ষে চতুর্থ শট থেকে গোল করেন কোলো মোয়ানি। এরপর আর্জেন্টিনার পক্ষে চতুর্থ শট থেকে গোল করে আর্জেন্টিনার জয় নিশ্চিত করেন গঞ্জালো মন্টিয়েল। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে ৪-২ গোলে হারিয়ে ৩৬ বছর পর বিশকাপের শিরোপা জিতলো আর্জেন্টিনা। সূত্র: ইত্তেফাক

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

আরও পড়ুন

স্থল ইউনিটি স্পোর্টিং ক্লাব ২-০ গোলে রংধনু স্পোর্টিং ক্লাবকে পরাজিত করে


ফয়সাল, সি. রিপোর্টার, সরিষাবাড়ি
রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৯:৩৬
স্থল ইউনিটি স্পোর্টিং ক্লাব ২-০ গোলে রংধনু স্পোর্টিং ক্লাবকে পরাজিত করে

ছবিঃ মারুফ, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন

 

নিজস্ব প্রতিনিধি, সরিষাবাড়ি: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তৃণমূল পর্যায়ে ছাত্র/ছাত্রীদের পড়াশুনার পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতি গভীর আগ্রহ বাড়াতে ফুটবলসহ নানা খেলাধুলায় অংশগ্রহণ সুযোগ সৃষ্টি এবং অনেকে নিজেরাও সম্পৃক্ত হয়ে যুব সমাজকে নানা অপকর্ম থেকে দূরে রাখতে খেলাধুলাসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে নিয়োজিত করার এক মহতি উদ্যোগ সারাদেশে চালিয়ে যাচ্ছেন।

এরই ধারাবাহিকতায় সরিষাবাড়ি উপজেলাধীন স্থল ইউনিটি স্পোর্টিং ক্লাবের উদ্যোগে মিনিবার ফুটবল টুর্নামেন্ট ফাইনাল খেলা রংধনু স্পোর্টিং ক্লাব ও স্থল ইউনিটি স্পোর্টিং ক্লাবের মাঝে অনুষ্ঠিত হয়।

খেলাটি এলাকার যুবক, আবাল-বৃদ্ধসহ সকলের মন কাড়ে, কারণ খেলাটি গোলশুন্যভাবে শেষ হয়। সর্বশেষ, অত্র খেলাটি টাইব্রেকারে ২-০ গোলে স্থল ইউনিটি স্পোটিং ক্লাব, রংধনু স্পোটিং ক্লাবকে হারায়।
 
উক্ত খেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মনিরুজ্জামান (মাছুম) সহ সভাপতি, ৪ নং আওনা ইউনিয়ন বিএনপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যথাক্রমে জনাব ডাক্তার ইমরান মিয়া, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক, ৪ নং আওনা ইউনিয়ন।

অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন নাঈম তালুকদার, ডাক্তার রানা, ডাক্তার মেহেদী হাসান মারুফ, হাফেজ মারুফ তালুকদার, সাবেক ছাত্র নেতা আরিফুর রহমান রঞ্জু, ছাত্র নেতা সাব্বির হোসেন, ফয়সাল তরফদার, সোয়াদসহ এলাকার সর্বশ্রেণীর লোকজন। খেলার ধারাভাষ্যকার ছিলেন ইমরান, রেফারির দায়িত্ব পালন করেন শিহাব।

স্থল ইউনিটি স্পোটিং ক্লাবকে চ্যামপিয়ান কাপ (বিজয় দল) প্রদান করেন প্রধান অতিথি জনাব মনিরুজ্জামান মাছুম ও নাঈম তালুকদার। রংধনু স্পোটিং ক্লাবকে রানার্স আপ কাপ প্রদান করেন ডাক্তার ইমরান মিয়া, ডাক্তার রানা ও ডাক্তার মারুফ। খেলার ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন হাসান।

 

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

পেশাদার সেনাবাহিনীর উৎপত্তি, বিকাশ, নেতৃত্ব ও সততা


কর্ণেল(অব.)আকরাম, লেখক ও সামরিক বিশেষজ্ঞ, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন,
মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫, ১০:২৮
পেশাদার সেনাবাহিনীর উৎপত্তি, বিকাশ, নেতৃত্ব ও সততা

ছবি সংগৃহীত

 

কর্ণেল(অব.) আকরাম, সামরিক বিশ্লেষকঃ সৈন্যবৃত্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ পেশা, যা অতীত থেকে বর্তমান পর্যন্ত প্রতিটি দেশের জন্য অপরিহার্য বলে বিবেচিত হয়েছে। অনেক গবেষক মনে করেন, এটি পৃথিবীর প্রাচীনতম পেশা। আধুনিক সেনাবাহিনীর উৎপত্তি প্রুশিয়ায়, যেখানে পেশাদার সামরিক বাহিনী মূলত পেশাদার অফিসার বাহিনীর উপর নির্ভরশীল ছিল। ইউরোপের পূর্ব ও পশ্চিম অংশ, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, জার্মানি এবং ইতালি আধুনিক পেশাদার সেনাবাহিনীর বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।  

প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে আধুনিক সামরিক বাহিনীর ব্যাপক প্রসার ঘটে। শীতল যুদ্ধের যুগে যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত রাশিয়ার মধ্যে অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু হয়, যা সামরিক বাহিনীকে আরও উন্নত ও পেশাদার করে তোলে।  

ইসলামিক রাষ্ট্র মদিনার সূচনালগ্ন থেকেই সামরিক বাহিনীর বিকাশ লক্ষ্য করা যায়, যা খলিফা উমর (রা.)-এর শাসনামলে পেশাদার রূপ লাভ করে। এই সময়ে ইসলামি বাহিনী প্রথমবারের মতো একটি সুসংগঠিত ও পেশাদার রূপ নেয়, যা যে কোনো যুদ্ধ পরিচালনার জন্য প্রস্তুত ছিল। পরে অটোমান সাম্রাজ্যের সেনাবাহিনী পেশাদারিত্বের জন্য প্রসিদ্ধ হয়। জনিসারিদের (Janissary) ইউরোপের মানুষ এক সময় আতঙ্ক হিসেবে দেখত, কারণ সেখানে শুধুমাত্র অফিসার থাকত, সাধারণ সৈনিক নয়।  

ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্যের *মানসবদারি ব্যবস্থা* একটি ব্যতিক্রমধর্মী সামরিক কাঠামো ছিল। ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধে নবাবের বাহিনীও মানসবদারি কাঠামোর মতোই সংগঠিত ছিল।  

ভারতে আধুনিক সেনাবাহিনী প্রতিষ্ঠার কৃতিত্ব ব্রিটিশদের। প্রথমে তারা *বাংলা আর্মি* গঠন করে, এরপর *বোম্বে আর্মি* এবং *মাদ্রাজ আর্মি* গড়ে ওঠে। তবে ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের পর ব্রিটিশরা তিনটি বাহিনী বিলুপ্ত করে নতুন *ভারতীয় সেনাবাহিনী* গঠন করে।  

প্রথমদিকে শুধুমাত্র ব্রিটিশরা ভারতীয় সেনাবাহিনীর অফিসার হতে পারত। স্থানীয় ভারতীয়দের সর্বোচ্চ পদ ছিল *সুবেদার মেজর*। কোম্পানির অফিসারদের পাশাপাশি ব্রিটিশ অফিসাররা সেনাবাহিনী পরিচালনা করত। ব্রিটিশ শাসনামলে এই অফিসাররা নবাবদের মতো বিলাসী জীবনযাপন করত।  

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ভারতীয়দের সেনাবাহিনীতে সীমিত আকারে অফিসার হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আরও বেশি সংখ্যক ভারতীয় সেনাবাহিনীর অফিসার হতে সক্ষম হয়।  

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সূচনা:
১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর ভারতীয় সেনাবাহিনী দুটি ভাগে বিভক্ত হয়—ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনী। পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) সেনা অফিসারের সংখ্যা ছিল অত্যন্ত নগণ্য। পূর্ববাংলার মানুষের সামরিক ঐতিহ্য বা পটভূমি তেমন ছিল না। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সূচনাকালে বাঙালি অফিসারের সংখ্যা ছিল হাতেগোনা কয়েকজন, যেখানে পশ্চিম পাকিস্তান, বিশেষ করে পাঞ্জাব থেকে বহু সংখ্যক মুসলিম অফিসার অন্তর্ভুক্ত হয়। ব্রিটিশ আমলে প্রথম ভিক্টোরিয়া ক্রসজয়ী ছিলেন একজন পাঞ্জাবি মুসলিম।  

১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যবিত্ত মুসলিমদের জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে অফিসার হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।  

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও সেনাবাহিনী গঠন:
১৯৭১ সালে একদল তরুণ অফিসার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তোলেন পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি (PMA) প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মেজর জিয়া, মেজর শফিউল্লাহ, মেজর খালেদ মোশাররফ, মেজর জলিল, ক্যাপ্টেন ওলি আহমদ, ক্যাপ্টেন হাফিজসহ আরও অনেকে। অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল ওসমানীর নেতৃত্বে এই অফিসাররা নতুন বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর ভিত্তি স্থাপন করেন।  

২৫ মার্চ ১৯৭১ রাতে মেজর জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং সামরিক দিক থেকে নেতৃত্ব দেন। এটি ছিল এক পেশাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে একদল তরুণ অফিসারের চ্যালেঞ্জ, যা শেষ পর্যন্ত সফল হয়।  

যুদ্ধের সময় কিছু তরুণ বেসামরিক নাগরিক ওয়ার কমিশন পায়, আর অন্যরা মুক্তিযুদ্ধ শেষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়।  

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিকাশ ও সংকট:
স্বাধীনতার পর, নবগঠিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রথম দিকে অবহেলিত ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার সেনাবাহিনীর পরিবর্তে জাতীয় রক্ষী বাহিনী (JRB)  নামে একটি আধাসামরিক বাহিনী গঠন করে, যা সরাসরি ভারতীয় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ছিল।  

১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের পতন এবং জিয়াউর রহমানের উত্থান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইতিহাস পরিবর্তন করে। সেনাবাহিনী বিভিন্ন পটভূমির অফিসারদের দ্বারা গঠিত হলেও জিয়াউর রহমানের দক্ষ নেতৃত্বে এটি একটি পেশাদার বাহিনীতে পরিণত হয়। এই পরিবর্তনের পেছনে পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে ফেরত আসা বাঙালি অফিসারদের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  

বিভিন্ন পটভূমির অফিসারদের নিয়ে একটি পেশাদার সেনাবাহিনী গঠন করা চ্যালেঞ্জিং ছিল, কিন্তু দক্ষ অফিসারদের মাধ্যমে এটি সম্ভব হয়। এটি ছিল প্রকৃত সামরিক দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের প্রতিফলন। ইতিহাস একদিন এই অফিসারদের অবদান ও আত্মত্যাগকে যথাযথ সম্মান দেবে।  

সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব সংকট:
প্রত্যাবর্তিত অফিসারদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পেশাদার রয়ে গিয়েছিল। কিন্তু যখন বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি (BMA) থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অফিসাররা নেতৃত্বে আসে, তখন সংকটের সূত্রপাত হয়।  

প্রথম BMA কমিশনপ্রাপ্ত অফিসার হিসেবে জেনারেল মইনুদ্দিন সেনাপ্রধান হন, কিন্তু তিনি জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আসতে সহায়তা করেন। এর ফলে দেশে এক নব্য ফ্যাসিবাদী শাসনের জন্ম হয়।  

এই ফ্যাসিবাদী সরকারের অধীনে দায়িত্ব পালনকারী জেনারেলরা জাতির প্রতি দায় এড়াতে পারেন না। জনগণ এখন তাদের বিশ্বাস করতে নারাজ। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক যে, আজ আমাদের অনেক অফিসারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে।  

নেতৃত্ব ও সততার অভাব:
আমি দীর্ঘদিন বিএমএ-তে নেতৃত্ব তৈরির কাজে যুক্ত ছিলাম। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আমাদের সেনাবাহিনীর প্রধান সমস্যা হলো *সততার অভাব*। আমরা ক্যাডেটদের মধ্যে ব্যক্তিগত সততা গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছি, যার ফলে তারা ভবিষ্যতে রাজনৈতিক ও আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে।  

আমাদের উচিত সততার প্রশ্নটিকে গুরুত্ব সহকারে দেখা, যদি সত্যিই আমরা এমন অফিসার চাই, যারা জাতির প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে। আমার মতামত কারও মনে কষ্ট দিলে আমি দুঃখিত, কিন্তু বাস্তব সত্য এটাই।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম
Share on Facebook

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন এর সর্বশেষ