a
ফাইল ছবি
বিশ্বের ধনী ও উন্নয়নশীল দেশের সমন্বয়ে গঠিত জি-২০ সম্মেলন আজ শুরু হচ্ছে। এবারের সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন ও করোনা মহামারী ইস্যু গুরুত্ব পাচ্ছে। গতকালই ইতালির রোমে পৌছান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে যুক্ত থাকছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
এদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দরিদ্র দেশগুলোকে সহায়তা দিতে জি-২০ ভুক্ত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। খবর সিএনএন ও রয়টার্স
করোনা ভাইরাস মহামারী শুরু হওয়ার পর এই প্রথম সরাসরি অংশগ্রহনের মাধ্যমে জি-২০ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিশ্ব নেতাদের সম্মেলনের আগে জি-২০ভুক্ত দেশগুলোর অর্থ ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা শুক্রবার আলোচনা করেছেন কিভাবে করোনা মহামারী এবং অর্থনৈতিক দূরাবস্থা থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া যায়। অর্থমন্ত্রীরা রোমে সরাসরি বৈঠক করলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা করেছেন ভিডিও লিংকের মাধ্যমে। জি-২ ব্লকে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত এবং জার্মানির মতো দেশ আছে।
বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশই এই দেশগুলোর এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে এদের ৮০ শতাংশ অবদান রয়েছে। এবারের সম্মেলনে হতাশাও আছে। কারণ চীন, জাপান, মেক্সিকো, রাশিয়া এবং সৌদি আরবের মতো দেশগুলো সম্মেলনে সরাসরি অংশ গ্রহণ করছে না।
জি-২০ এর এজেন্ডা
এবারের সম্মেলনে জলবায়ু ইস্যু বিশেষ করে কয়লা থেকে স্বচ্ছ জ্বালানির দিকে কিভাবে এগিয়ে যাওয়া যায় সেই বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। জ্বালানির মূল্য কমানো এবং সাপ্লাই চেইন ঠিক রাখা যা বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্থ করছে সেটাও গুরুত্ব পাবে সম্মেলনে।
বিশ্ব নেতাদের এই সম্মেলনে বড় বড় কোম্পানির জন্য ন্যুনতম ১৫ শতাংশ কর আরোপের বিষয়ে একটি চুক্তি হচ্ছে। চলতি মাসেই চুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। বাংলাদেশ সময় কাল সোমবার থেকে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন ২৬ শুরু হচ্ছে। তবে তার আগেই জি-২০ সম্মেলনে জলবায়ু ইস্যু গুরুত্ব পাচ্ছে। কারণ বিশ্বের কার্বন নি:সরণের ৮০ শতাংশ এই ব্লকের দেশ থেকে হয়। এই সম্মেলনে বিশ্ব নেতারা বিশ্বের তাপমাত্রা এক দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে আনার বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন।
ফাইল ছবি: ভলকার তুর্ক
কয়েক মাস উপর্যুপরি সতর্কতার পর জাতিসংঘ সমর্থিত সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনের পরিসংখ্যানগত প্রমাণে দেখা গেছে গাজায় মানবিক বিপর্যয় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষে পরিণত হচ্ছে। তাই ফিলিস্তিনি নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য আইনি দায়িত্ব পালন করতে ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়িয়েছে জাতিসংঘ। সেইসঙ্গে যাদের প্রয়োজন তাদের কাছে পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা সরবরাহের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
জাতিসংঘের সবচেয়ে ঊর্ধ্বতন মানবাধিকার কর্মকর্তা, ভলকার তুর্ক বিবিসি-র একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইসরায়েলের উল্লেখযোগ্য দোষ রয়েছে। তারা যে গাজা যুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে অনাহারকে ব্যবহার করছে সেটিরও ‘প্রমাণযোগ্য’ ঘটনা রয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার তুর্ক বলেছেন, অভিপ্রায় প্রমাণিত হলে তা হবে যুদ্ধাপরাধ।
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টির একজন সিনিয়র রাজনীতিবিদ ও ইসরায়েলের অর্থনীতি মন্ত্রী নির বারকাত তুর্কের সতর্কবার্তাকে ‘সম্পূর্ণ অর্থহীন ও দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
তার মন্ত্রিপরিষদের সহকর্মীদের মতো বারকাত জোর দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বাকি বিশ্বের পাঠানো সহায়তা গাজায় প্রবেশ করতে দিচ্ছে। তবে ইসরায়েল মিথ্যাচার করে বলছে, হামাস নিজেদের সাহায্য করার পর বাকি যা থাকে সেগুলো বিতরণ করতে ব্যর্থ জাতিসংঘ। কিন্তু গাজা উপত্যকার উদ্দেশ্যে আসা ত্রাণবাহী লরিগুলোর দীর্ঘ সারি দেখা গেছে মিসরের রাফা সীমান্তে। জটিল ও আমলাতান্ত্রিক তল্লাশির পরই এগুলো ইসরায়েলের মধ্য দিয়ে গাজায় প্রবেশ করতে পারে।
পর্যাপ্ত সহায়তা গাজায় না পৌঁছানোয় জর্ডান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ অন্য দেশগুলো আকাশপথে বাধ্য হচ্ছে সরবরাহ পাঠাতে। আর এই ত্রাণের ভাগ নিতে আসা ফিলিস্তিনিরা সমুদ্রে ডুবে মরছে। অনেকে আবার প্যারাসুট দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে।
মার্কিন নৌবাহিনী সমুদ্রপথে সাহায্যের জন্য একটি অস্থায়ী পিয়ার তৈরি করতে আটলান্টিক জুড়ে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্লোটিলাও পাঠাচ্ছে।
ইসরায়েল যদি গাজায় সম্পূর্ণ রাস্তার প্রবেশাধিকার দেয় এবং উত্তর গাজার প্রায় আধা ঘণ্টা পথের দূরত্বে আধুনিক কনটেইনার বন্দরের মাধ্যমে ত্রাণ সরবরাহের গতি বাড়ায় তবে এসবের কোনটিরই প্রয়োজন হবে না। জেনেভা থেকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে তুর্ক বলেছেন, প্রমাণ পাওয়া গেছে যে ইসরায়েল সাহায্য সরবরাহের গতি কমিয়ে দিচ্ছে বা আটকে রেখেছে।
৭ অক্টোবর ইসরায়েলি বেসামরিক ও সৈন্যদের ওপর হামাসের হামলারও নিন্দা করেছেন তুর্ক। তবে তিনি এও বলেছিলেন, যুদ্ধের কোনো পক্ষই গাজায় সহায়তা বন্ধ করার যেকোনো প্রচেষ্টাসহ অন্যান্য কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহিতার বাইরে থাকবে না। সূত্র: ইত্তেফাক
ফাইল ছবি
বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি ও দীর্ঘদিন ধরে লিবিয়ার পরিস্থিতি প্রতিকূলে থাকার কারণে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বেনগাজিসহ পূর্বাঞ্চলীয় শহরগুলোতে আটকে পড়ে শত শত বাংলাদেশি। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এর সহযোগিতায় তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার।
সে প্রেক্ষিতেই আজ ১৬০ বাংলাদেশি দেশি ফিরলো। বুরাক এয়ারের একটি বিশেষ ফ্লাইটে আজ বুধবার (৫ মে) সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তাঁরা। গতকাল মঙ্গলবার (৪ মে) ১৬০ বাংলাদেশিকে নিয়ে লিবিয়ার বেনগাজি বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে আইওএম এর চার্টার্ড করা বুরাক এয়ারের একটি ফ্লাইট।
ফ্লাইটটি আজ বুধবার সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। আজকে ফেরত আসা যাত্রীদের ফ্লাইটে লিবিয়ায় মৃত্যুবরণকারী একজন বাংলাদেশি নাগরিকের মৃতদেহও দেশে আনা হয়েছে।
দেশে আসার সাথে সাথেই সরকার নির্ধারিত নিয়মঅনুযায়ী বিমানবন্দরে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁরা সবাই নিজ ইচ্ছায় দেশে ফেরত এসেছেন।
তারা অনেকেই সেখানেই দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছিল, পরবর্তীতে বিভিন্ন কারণে দেশে ফেরার অপেক্ষায় ছিল কিন্তু করোনার কারনে তা সম্ভন হয়ে উঠছিল না। তাছাড়া লিবিয়ার বর্তমান আর্থ-সামাজিক অবস্থা চিন্তা করে তাঁরা দেশে ফিরে এসেছেন। তাদের এমন পরিস্থিতি বাংলাদেশ সরকার অবহিত হলে সরকারের পক্ষ থেকে আইওএম এর সহায়তায় লিবিয়ায় আটকে পড়া সকল বাংলাদেশিদের একে একে দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।
করোনা পরিস্থিতিতে লিবিয়ায় আটকে পড়াদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য এটি নবম ফ্লাইট। এসব ফ্লাইটে এখন পর্যন্ত মোট ১৩৭৯ জন অভিবাসীকে লিবিয়া থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।