a
ফাইল ছবি
কাবুল বিমানবন্দরে জঙ্গি হামলায় ১৩ মার্কিন সেনাসহ ১০০ জনের ওপর মৃত্যুর ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পদত্যাগের দাবি জোরাল হল।
জাতিসংঘে আমেরিকার সাবেক রাষ্ট্রদূত নিক্কি হ্যালি টুইট করে বলেন, "বাইডেন কি এবার পদত্যাগ করবেন, নাকি তাকে সরানো হবে? তবে বাইডেন সরে গেলে যদি কমলা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট হন, তাহলে তা দশগুণ খারাপ হবে। স্রষ্টা আমাদের রক্ষা করুন।"
নিক্কির এই টুইটের পরে রিপাবলিকান পার্টির একাধিক কংগ্রেস ম্যান টুইট করে বাইডেনের পদত্যাগ দাবি করতে থাকেন। বাইডেনের সঙ্গে সঙ্গে তারা কমলা হ্যারিস ও বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনেরও পদত্যাগ দাবি করেন। রিপাবলিকান সাংসদরা বলতে থাকেন, যদি একটা ফোনের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইমপিচ করা হয়ে থাকে, তাহলে কেন বাইডেনের ইমপিচমেন্ট হবে না।
আফগানিস্তান থেকে যেভাবে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছে, তা বাইডেনের চরম গাফিলতি বলে রিপাবলিকান দলের নেতারা জানাতে থাকেন। বস্তুত, আফগানিস্তান ইস্যুতে বাইডেনের ব্যর্থতার জন্য সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার পদত্যাগ চেয়েছিলেন। রিপাবলিকান কংগ্রেস ম্যানরা অবিলম্বে মার্কিন কংগ্রেসের অধিবেশন দাবি করলেও স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তা উড়িয়ে দিয়েছেন।
আফগানিস্তানে মার্কিন সেনার মৃত্যু শেষবার হয়েছিল ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। তার কয়েক সপ্তাহ বাদেই তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তালেবানের সঙ্গে চুক্তি করেন, যাতে মার্কিন বাহিনীর উপর তারা কোনও হামলা না করে। ফলে গত বৃহস্পতিবার কাবুলের বিস্ফোরণে ১৩ মার্কিন সেনার মৃত্যু বাইডেনকে চরম অস্বস্তিতে ফেলেছে।
তালেবান যেভাবে আফগানিস্তান নিজেদের দখলে নিয়েছে, তাতে গোটা বিশ্বের সঙ্গে মার্কিন জনতারও একটি বড় অংশ বাইডেনের উপর ক্ষুব্ধ। কাবুলের বিস্ফোরণ সেই ক্ষোভকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
সূত্র- ফক্স নিউজ, দ্যা নিউজ এন্ড অবজারভার।
ফাইল ছবি
আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর এখনো পূর্ণাঙ্গ হয়নি মন্ত্রীসভা। কারা থাকছে পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিসভায় তা ঘোষণা হতে পারে আজই। এর পূর্বে চারজন মন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে তালেবানের পক্ষ থেকে। নিয়ন্ত্রণের তিন সপ্তাহ পর সরকার গঠনের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানায় তালেবান কর্তৃপক্ষ। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে এখন চলছে তালেবান সরকার গঠনের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় সংগঠনটির সর্বোচ্চ নেতা হেবায়েতুল্লাহ আখুন্দজাদার হবেন দেশটির প্রধান নেতা। তার ডেপুটি থাকবেন তিনজন। তারা হলেন শীর্ষ নেতা মোল্লাহ আব্দুল গনি বারাদার, প্রভাবশালী হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান সিরাজিুদ্দিন হাক্কানি, এবং প্রয়াত নেতা মোল্লা ওমরের ছেলে মৌলবী ইয়াকুব।
এ ছাড়া আগেই ঘোষিত চার মন্ত্রী হলেন অর্থমন্ত্রী গুল আগা, ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সদর ইব্রাহিম, ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা আবদুল কাইয়ুম জাকির ও ভারপ্রাপ্ত উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী আবদুল বাকি হাক্কানি।
গত ১৫ আগস্ট তালেবান কাবুল দখল করে নেওয়ার মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। চুক্তি অনুযায়ী ৩১ আগস্ট আফগানিস্তান থেকে সব সেনা প্রত্যাহার করে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। ৩১ আগস্ট কে আফগানিস্তানের স্বাধীন দিবস ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের দীর্ঘতম যুদ্ধের। একই সঙ্গে আফগানিস্তানে আনুষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হয় তালেবানের।
ফাইল ছবি
ফ্রান্সের পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফায় উগ্র ডানপন্থীরা বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে। ফলে ফ্রান্সে বসবাসকারী ইহুদিদের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, তারা এখন দলে দলে বসবাসরত দেশটি ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রাথমিক জরিপে দেখা যাচ্ছে, নির্বাচনে মারিন লে পেন-এর উগ্র ডানপন্থী দল ন্যাশনাল র্যালি (আরএন) পেয়েছে ৩৪.৫ শতাংশ ভোট। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে- বামপন্থী নিউ পপুলার ফ্রন্ট অ্যালায়েন্স। দলটি ২৮.৫ থেকে ২৯.১ শতাংশ ভোট। আর বর্তমান প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর জোট ২০.৫ থেকে ২১.৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে।
জরিপ সংস্থাগুলোর হিসাব অনুযায়ী, আরএন ৫৭৭ আসনের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাবে। কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডের পর তারা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ২৮৯ আসন পাবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
সংস্থাগুলোর হিসাবে ভিন্নতাও আছে। ইপসস-এর প্রজেকশন অনুযায়ী আরএন পাবে ২৩০ থেকে ২৮০ আসন; ইফপ-এর হিসাব হচ্ছে ২০৪ থেকে ২৭০; এবং এলাব একমাত্র সংস্থা যারা এরএন-এর আসন সংখ্যা ২৬০ থেকে ৩১০-এর মধ্যে করেছে।
এই প্রেক্ষাপটে কোয়েলিটা অ্যাসোসিয়েশন ফর দি এবজরপশন অ্যান্ড এনকারেজমেন্ট অব জিউশ ইমিগ্রেশন বা আলিয়াহ’র সিইও অ্যারিয়েল কান্ডেল বলেছেন, “এখন প্রায় ৫০ হাজার ফরাসি ইহুদি ফ্রান্স ত্যাগের কথা ভাবছে।”
এনআরের সভাপতি জর্ডান বরদেল্লা এবং এর শীর্ষ আইনপ্রণেতা মারিন লে পেন ধর্মীয় উপাসনায় সরকারি অবস্থান সীমিত করতে চান। দলটির মুসলিমবিরোধী অ্যাজেন্ডার অংশ হিসেবেই তারা ইহুদিদেরও সংযত করতে চায়। তারা বিদেশে বসবাসকারী নাগরিকদের পেনসন সুবিধাও সীমিত করতে চায়।
এনআর-এর অনেক সমালোচক দলটিকে অ্যান্টিসেমিটিক হিসেবে অভিহিত করেছে। তবে অনেকে এই অভিমতের সাথে একমত পোষণ করতে পারছেনা।
কান্ডেল বলেন, যদি জ্যাঁ-লাক মেলেনচোনের নেতৃত্বে উগ্র বামরা ক্ষমতায় আসে, তবে ইহুদিদের ফ্রান্স ত্যাগের আরও প্রবল তাগিদ সৃষ্টি হবে। কারণ অনেক ইহুদিই মেলেনচোনকে অ্যান্টিসেমিটিক বিবেচনা করে।
উল্লেখ্য, যখন ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ তৃতীয় বছরে গড়িয়েছে এবং জ্বালানি আর খাদ্য মূল্য অনেক উঁচুতে, তখন অভিবাসন-বিরোধী আরএন পার্টি এগিয়ে গেছে।
এই নির্বাচন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ফ্রান্সে প্রথমবার উগ্র ডানপন্থীদের ক্ষমতায় আনতে পারে, এবং দলের নেতা লে পেনের শিষ্য ২৮-বছর বয়স্ক জর্ডান বরদেল্লাকে সরকার গঠনের সুযোগ দিতে পারে। সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল