a
ফাইল ছবি
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নেতারা চিরাচরিত মিথ্যাচার করে আসছে। তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার করছ। বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়াকে নারী মুক্তিযোদ্ধা আখ্যায়িত করে যে বক্তব্য দিয়েছেন- তা বাংলা সাহিত্যের ‘আষাঢ়ে গল্প’র মতো।’
শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এই মন্তব্য করেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়াকে মুক্তিযোদ্ধা আখ্যা দিয়ে প্রকৃতপক্ষে একাত্তরের রণাঙ্গনে অংশ নেওয়া বীর নারীদের গৌরবগাথা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের প্রতি কটাক্ষ করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। কারণ মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তিই বিএনপির শক্তির একমাত্র উৎস।
তিনি বলেন, আমরা আশা করি- বিএনপি নেতারা এ ধরনের বানোয়াট গল্প থেকে বিরত থাকবেন। তাদের বোধোদয় হওয়া উচিত, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির মতো ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও জাতিদ্রোহী কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার কারণেই বিএনপির মতো একটি বড় দল হয়েও জনগণ দ্বারা বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা বিদেশে অর্থ পাচারের কথা বলেছেন। দেশবাসী জানে, এ অর্থ পাচারের মূল হোতা কারা? কারা হাওয়া ভবন সৃষ্টি করে হাজারও কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। দুর্নীতিতে বারবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ও অর্থ পাচারকারীদের দল বিএনপি নেতাদের মুখে অর্থ পাচারের কথা ভূতের মুখে রাম নাম ছাড়া কিছু নয়!
তিনি বলেন, বিএনপির শাসনামলে জার্মানির প্রযুক্তি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিমেন্স গ্রুপের কাছ থেকে তারেক রহমানের ঘুস গ্রহণের কথা আদালতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইর সাক্ষ্যে প্রমাণিত হয়েছে। একইসঙ্গে চীনের হার্বিন কোম্পানির কাছ থেকে তারেক রহমানের ঘুস কেলেঙ্কারির কথা সবাই জানে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও জিয়া পরিবারের দুর্নীতির চিত্র বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে। সিঙ্গাপুর থেকে খালেদা জিয়ার ছেলে কোকোর পাচার করা অর্থ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই দেশে ফেরত আনা হয়েছে। বিএনপি নেতারা মুখে একদিকে অর্থ পাচারের কথা বলে অন্যদিকে লন্ডনে অবস্থানরত তাদের নেতা সাজাপ্রাপ্ত পালতক খুনি আসামি তারেক রহমানের বিলাসী জীবনযাপনের রসদ প্রেরণ করে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক সব সূচকেই বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে। জনগণের জীবনমানের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। দেশের টাকা দেশে আছে বলেই উত্তরোত্তর বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা ও সুশাসন আছে বলেই মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ফাইল ছবি: আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী
হেফাজতে ইসলামের আমির ও হাটহাজারী মাদরাসার শায়খুল হাদীস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, এ আন্দোলন দেশ কিংবা সরকারের বিরুদ্ধে ছিল না। এই আন্দোলন ছিল নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে।
তিনি বলেন, এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে জনতার ওপর এমন বর্বরোচিত হামলা বরদাশত করা যায় না। পুলিশের গুলিতে নিহতদের প্রতি ফোটা রক্তের বদলা নেওয়া হবে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
শনিবার সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হেফাজত আমির এসব কথা বলেন।
জনতার বিক্ষোভে হামলায় নেতাকর্মী নিহত ও আহত হওয়ার প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের ডাকে শনিবার সারা দেশে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ পালনের ঘোষণা দেন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।
এসময় তিনি রোববার সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে হরতাল কর্মসূচী পালন করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে আমিরে হেফাজত বলেন, মোদির আগমনের প্রতিবাদে শুক্রবার ঢাকার বায়তুল মোকাররম, হাটহাজারী, যাত্রাবাড়ী, বি-বাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনরত জনতার ওপর গুলিবর্ষণ করে আনুমানিক ছয়জনকে শহীদ করা হয়েছে। গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে প্রায় চারশত প্রতিবাদীকে রক্তাক্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে এভাবে গুলিবর্ষণের ন্যাক্কারজনক ঘটনা কখনো মেনে নেওয়া যায় না। কার নির্দেশে নিরীহ-নিরস্ত্র ছাত্রদেরকে এভাবে হামলা ও শহীদ করা হল—এর জবাব প্রশাসনকে অবশ্যই দিতে হবে এবং অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
আল্লামা বাবুনগরী বলেন, মোদির আগমনের প্রতিবাদে ঢাকা ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে তৌহিদি জনতা। বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনরতের ওপর হামলার সংবাদ পাওয়া গেছে।
‘হাটহাজারীতে আমার কলিজার টুকরা চার ভাইকে শহীদ করা হয়েছে। শহীদদের গা থেকে ঝরা এ রক্ত কভু বৃথা যেতে দেওয়া হবে না।’
পুলিশের গুলিতে নিহতদের ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সরকার প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান আল্লামা বাবুনগরী।
হুশিয়ারি উচ্চারণ করে আমিরে হেফাজত আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী আরও বলেন, যদি আর একজন তৌহিদি জনতার রক্ত ঝরে বা ওলামায়ে কেরামকে হামলা মামলা ও হয়রানি করা হয়; তাহলে এর প্রতিবাদে পুরো দেশে আন্দোলনের দাবানল জ্বলে উঠবে। প্রয়োজনে শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের সঙ্গে পরামর্শ করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করতে বাধ্য হবে। সূত্র: যুগান্তর
মৌলভীবাজার: অনিয়ন্ত্রিত এবং ভেজাল খাদ্যাভাসে মানবদেহে দেখা দিয়েছে সুস্থতার অভাব। অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে অধিকাংশ মানুষ আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন হৃদযন্ত্রের নানা অসুখে।
এসব অসুখের বেশিভাগই খাবারকে কেন্দ্র করে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একটু সচেতন হলেই এই হৃদযন্ত্রের অসুখ কিছুটা হলেও দূর করা সম্ভব। আর তা হলো, দৈনিক খাদ্যাভাসে ঝুঁকিপূর্ণ সোয়াবিন তেলের পরিবর্তে উপকারী সূর্যমুখী তেল রান্নায় ব্যবহার করা।
আশা কথা, মৌলভীবাজার জেলায় উপকারী সূর্যমুখী তেলে বাম্পার ফলন হয়েছে। গত বছরের তুলনায় প্রায় ১০ গুণ। যা মানবদেহের উপকার কিছুটা হলেও সূচনা করার জন্য প্রস্তুত।
সম্প্রতি শ্রীমঙ্গল উপজেলার সদর ইউনিয়নের হাইল হাওর সংলগ্ন একটি ৫ কেয়ারের (বিঘা) বাগান সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, প্রায় ৪ হাজার সূর্যমুখী ফুল পূর্ণতা নিয়ে বাতাসে দোলা খাচ্ছে। কিছু কিছু সূর্যমুখী অবশ্য খাড়া অবস্থা থেকে মাটিতে পড়ে গেছে। তবে, এতে ক্ষতির তেমন কোনো কারণ নেই বলে জানান কৃষক। এ খামারের কৃষক জুবের মিয়া বলেন, এই সূর্যমুখী ফসলটি আমাদের প্রদর্শনী খামার। আমরা পাঁচজন কৃষক সম্মিলিতভাবে অগ্রহায়ণ মাসের শেষে চাষ করেছি। আমাদের ৫ জন কৃষকের প্রত্যেককে সাইফুল স্যার ৫ কেজি সূর্যমুখী বীজ এবং ১৫০০ টাকা করে দিয়েছেন। আমরা মাটি তৈরি করে সরাসরি বীজ মাটিতে লাগিয়েছি।
শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়ন ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, সূর্যমুখী চাষ বাবদ আমি কৃষক জুবেরকে ১৪ হাজার ৫০০ টাকা দিয়েছি। কিছুদিন আগে শিলা বৃষ্টির কারণে কিছু গাছের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তেল হিসেবে সূর্যমুখী অত্যন্ত উন্নত এবং স্বাস্থ্যের উপকারী।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মৌলভীবাজারের উপ পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী বাংলানিউজকে বলেন, গত বছর মাত্র ৫৮ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছিল। এবার সেটা বেড়ে ৫৬৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। ৫৬৫ হেক্টর জমির জন্য যে পরিমাণ বীজ দরকার সে পরিমাণ বীজ কৃষকদের দেওয়া হয়েছে। এটি হাইসান-৩৩ ভ্যারাইটির।
স্বাস্থ্যক্ষতির দিকটি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমরা যেভাবে রেনডমলি (ক্রমাগতভাবে) সোয়াবিন তেল বিভিন্ন খাদ্যের সঙ্গে নিয়মিত খাচ্ছি, তা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। সূর্যমুখী তেল অত্যন্ত পুষ্টিসম্পন্ন এবং এতে কোলেস্টেরালের মাত্রা কম। এ তেলের ভিড়ে ক্যানসার প্রতিরোধের উপাদান আছে। এসব গুণের জন্য এই তেল অনেকে দাম দিয়ে কিনে খাচ্ছেন। সুস্থ থাকতে হলে আমাদের সূর্যমুখী তেল বা সরিষা তেল অবশ্যই খেতে হবে। এজন্য আমাদেরকে প্রতিবছর ৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকার ভোজ্যতেল আমদানি করতে হয়। আমাদের বাংলাদেশে তেলের যে প্রয়োজন তার শতকরা মাত্র ১০ শতাংশ তেল সরিষা, সূর্যমুখী, তিসি, বাদাম প্রভৃতি থেকে আসে। বাকি শতকরা ৯০ শতাংশ তেল বিদেশ থেকে আনতে হয় বলে জানান তিনি। সূর্যমুখী বীজ থেকে উৎপাদিত তেলের পরিমাণ সম্পর্কে তিনি বলেন, সূর্যমুখী বীজ থেকে শতকরা ৪০ শতাংশ তেল হয়। অর্থাৎ ১০ কেজি সূর্যমুখী যদি ভাঙান তবে, ৪ লিটার তেল পাবেন। এখন প্রতিকেজি সূর্যমুখীর দাম ৮০ টাকা। যখন এটা হারভেস্ট (আহরণ) হবে তখন একটু দাম কমবে। গত বছর আমরা ৬০ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি করেছি।
১০ কেজি সূর্যমুখী বীজের দাম হবে ৬০০ টাকা। এই ১০ কেজি ভাঙালে ৪ লিটার সূর্যমুখী তেল পাবেন। ভাঙানো পর সূর্যমুখীর খইল দিয়ে দিলে ভাঙানোর খরচ ফ্রি। তাহলে প্রতি কেজির দাম ১৫০ টাকা করে পড়লো। বীজের দাম বেশি হলে হয়তো ১৬০ টাকা পড়বে।
আমেরিকান বা বিদেশি অন্যান্য কোম্পানির সূর্যমুখী তেল হলে আপনাকে বাজার থেকে প্রতি লিটার ২০০ টাকা করে কিনতে হবে বলে যোগ করেন উপ পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী।