a
ফাইল ছবি
গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টায় পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পদে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের ছেলে হামজা শাহবাজের নিয়োগ ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে রায় দেন সুপ্রিম কোর্ট। এরপর দিবাগত রাত দুইটায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান–সমর্থিত চৌধুরী পারভেজ এলাহি নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। খবর ডন ও জিও নিউজের।
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে ক্ষমতাসীন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, পাঞ্জাবের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে মরিয়া ছিল কেন্দ্রীয় সরকার।
রায় ঘোষণার পর এক সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে ‘বিচারিক অভ্যুত্থান’ বলে কড়া সমালোচনা করেছেন তথ্যমন্ত্রী মারিয়াম আওরঙ্গজেব। অন্যদিকে, রায় মেনে নিতে পিএমএল-এন জোটের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)।
রাত নয়টায় সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণা করেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়ালের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ। পাঞ্জাবের ডেপুটি স্পিকার দোস্ত মুহাম্মদ মাজারির আদেশ বাতিল করে এতে বলা হয়, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৩এ(১)(বি) নিয়ে তাঁর জানাশোনা ও বাস্তবায়ন ‘ভুল ও ত্রুটিপূর্ণ’।
গত শুক্রবার পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদে মুখ্যমন্ত্রী পদে ভোটাভুটি হয়। এতে জোটের শরিক পাকিস্তান মুসলিম লিগ-কায়েদের (পিএমএল-কিউ) চৌধুরী পারভেজ এলাহিকে প্রার্থী করে পিটিআই। তিনি পান ১৮৬ ভোট। আর পিএমএল-এন নেতৃত্বাধীন প্রার্থী হামজা শাহবাজ পান ১৭৯ ভোট।
কিন্তু সংবিধানের ৬৩(এ) অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে ডেপুটি স্পিকার পিএমএল-কিউ দলের ১০ সদস্যের ভোট বাতিল করে দেন। কারণ হিসেবে তিনি দাবি করেন, পিএমএল-কিউ প্রধান চৌধুরী সুজাত হোসেন কোনো দলের পক্ষে পার্লামেন্ট সদস্যদের ভোট না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে এক চিঠিতে তাঁকে জানিয়েছেন। ফলে, তিন ভোটে হামজা শাহবাজকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
সংবিধানের ৬৩(এ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে দেওয়া কোনো পার্লামেন্ট সদস্যের ভোট গণনা করা হবে না। এমনকি দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ভোট দিলে তাঁদের সদস্য পদও বাতিল বলে গণ্য হবে।
ডেপুটি স্পিকারে সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন পিটিআই নেতা রাজা বাশারাত। তিনি বলেন, পিএমএল-কিউয়ের সংসদীয় নেতা চৌধুরী সাজিদ। তাই এ ক্ষেত্রে সংবিধানের আর্টিকেল ৬৩(এ) প্রযোজ্য হবে না। উল্লেখ্য, এই অনুচ্ছেদের ব্যাখ্যায় ‘পার্লামেন্টারি পার্টির সিদ্ধান্তের’ কথা বলেছিলেন সুপ্রিম কোর্ট।
একপর্যায়ে অধিবেশন মুলতবি করে পিটিআই ও পিএমএল-কিউ নেতাদের তাঁদের আপত্তি নিয়ে ‘আদালতের দ্বারস্থ হতে বলেন’ ডেপুটি স্পিকার। শেষ পর্যন্ত তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলে গতকাল ডেপুটি স্পিকারের রায় অবৈধ ঘোষণা করেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ।
একই সঙ্গে চৌধুরী পারভেজ এলাহিকে মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগ দিয়ে তাঁকে রাত সাড়ে ১১টায় শপথ পড়াতে পাঞ্জাবের গভর্নরকে নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট। যদি কোনো কারণে গভর্নর এলাহিকে শপথ না পড়ান, তাহলে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি তাঁকে শপথ পড়াবেন বলে আদেশে বলা হয়।
পাঞ্জাবের গভর্নর এলাহিকে শপথ পড়াতে অস্বীকৃতি জানালে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী রাত দুইটার দিকে তিনি প্রেসিডেন্ট আলভির কাছে শপথ নেন। জিও নিউজ জানায়, ইসলামাবাদে শপথ অনুষ্ঠানে আনতে এলাহির জন্য বিশেষ উড়োজাহাজ পাঠান প্রেসিডেন্ট।
জাতীয় পরিষদে বিরোধী জোটের আনা অনাস্থা প্রস্তাবে হেরে গত ৯ এপ্রিল বিদায় নেয় ইমরান খানের সরকার। অনাস্থা ভোটের অধিবেশন ঘিরেও ওই দিন রাতভর নাটকীয়তা চলে। ওই সংকট চলাকালে মধ্যরাতে বসেছিলেন সুপ্রিম কোর্ট। সূত্র: প্রথম আলো
ফাইল ফটো
ইহুদিবাদী দেশ ইসরাইলে গত দুই বছরে চারবার সাধারণ নির্বাচন দিয়েও দেশটির পার্লামেন্ট নেসেটে কোনো দল বা জোটই সরকারকে টিকে রাখতে পারছে না। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত চতুর্থ নির্বাচনের আগে জনমত জরিপে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পরাজয়ের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। খবর বিবিসি, রয়টার্স ও আলজাজিরার।
নির্বাচনের পর বুথফেরত জরিপেও নেতানিয়াহুর কট্টর ডান নিকুদ পার্টি নেসেটের ১২০ আসনের মধ্যে বড়জোর ৫২ থেকে ৫৩টি আসন পেতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার দেশটির সাধারণ নির্বাচনে সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। সরকার গঠন করতে হলে নেতানিয়াহুর দল এবং তার জোটকে কমপক্ষে দরকার ৬১টি আসন, যা পাওয়ার সম্ভবনা খুবই কম। জনমত জরিপে উঠে এসেছে নেসেটের কর্তৃত্ব নিয়ে সেখানে আবারও রাজনৈতিক অচলাবস্থা সৃষ্টি হতে পারে।
পার্লামেন্টে ৬১ আসন পেলেই সরকার গঠন করতে পাবে যে কোনো দল। প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে জনমত জরিপের ফলে জানা গেছে। ফলে কোনো পক্ষই মন্ত্রিসভা গঠনের মতো সুস্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না।
ইসরাইলের কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল নির্বাচনের একদিন আগে জনমত জরিপে যে ফল উঠে এসেছে, নির্বচনের পর বুথফেরত জরিপেও একই চিত্র ফুটে উঠেছে জানা গেছে।
ইসরাইলে গত দুই বছরের মধ্যে এ নিয়ে চতুর্থ দফা সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও কোনো নির্বাচনেই কোনো দল বা জোট সুস্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার কারণে ইসরাইলে রাজনৈতিক অচলাবস্থা চলে আসছে। নতুন এই নির্বাচনেও সেই অচলাবস্থা দূর হচ্ছে না বলে আভাস দিচ্ছে ইসরাইলের টিভি চ্যানেলগুলো।
নির্বাচনের বিজয়ী হওয়া নেতানিয়াহুর জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে তার ওপর রাজনৈতিক চাপও সৃষ্টি হয়েছে। ইসরাইলের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসছেন নেতানিয়াহু। ২০০৯ সাল থেকে নেতানিয়াহু টানা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসছেন কট্টরপন্থি এ লিকুদ পার্টির নেতা।
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে বিচার চলছে; পাশাপাশি করোনাভাইরাসের মহামারি ব্যবস্থাপনায় চরম ও দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন বলে তার বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা ও আন্দোলন হয়ে আসছে।
ফাইল ছবি
ক্রিকেটের অভিজাত ফরম্যাটের ধুমধাড়াক্কা লড়াই হলো টি-টুয়ান্টি। সেখানে অনেকেই বাংলাদেশকে ছোট দল হিসেবেই গননা করে থাকে কিন্তু সম্প্রতি সময়ে বাংলাদেশ যেন রীতিমতো উড়ছে। টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়ার পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও সংক্ষিপ্ত এই সংস্করণে টাইগারদের জয়রথ চলছেই।
এদিকে, ধারাবাহিক সাফল্যে র্যাংকিংয়েও অবিস্মরণীয় সাফল্য মাহমুদউল্লাহ বাহিনীর। গতকাল শুক্রবার সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১৪১ রান করে বাংলাদেশ। টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৩৭ রানে ইনিংস গুটায় নিউজিল্যান্ড। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ৪ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।
টানা দ্বিতীয় জয়ে এবার র্যাংকিংয়ে আরেকধাপ এগোল মাহমুদউল্লাহ বাহিনী। টি-২০ তে এখন অস্ট্রেলিয়ার চেয়েও ভালো দল বাংলাদেশ! কি অবাক হচ্ছেন? অবাক হওয়ার কিছুই নেই। আইসিসির সবশেষ র্যাংকিং যে বলছে অজিদের চেয়ে এই মুহূর্তে টাইগাররাই এগিয়ে। ক’দিন আগে ওদের বিপক্ষে ৪-১ এ সিরিজ জয়।
এরপর নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে টানা দুই ম্যাচ জয়ের পুরস্কার এটি। আইসিসি র্যাংকিং হালনাগাদ করা হলেও এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ের ২৪১ রেটিং নিয়ে ছয় নম্বরে অবস্থান করছে বাংলাদেশ।
মাহমুদউল্লাহরা পেছনে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া (২৪০), শ্রীলংকা (২৩৫), আফগানিস্তান (২৩৬) ও ওয়েস্টে ইন্ডিজকে (২৩৪)। সুখবর আরও অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের সামনে। কিউইদের বিপক্ষে তৃতীয় টি-২০ জিতলে আরও তিন রেটিং পয়েন্ট যুক্ত হবে তাদের। জয়ের ধারাবাহিকতা পরের ম্যাচে থাকলে আরও দুই পয়েন্ট পাবে টাইগররা। সেক্ষেত্রে সমান ২৪৬ রেটিং পয়েন্ট হবে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে।
তবে ম্যাচ কম খেলার কারণে সমান পয়েন্টেও প্রোটিয়াদের টপকে পাঁচ নম্বরে উঠে যাবে রিয়াদ বাহিনী। এর আগে ওয়ানডে র্যাংকিংয়ের সাত নম্বরে উঠেছিল বাংলাদেশ। রেটিং পয়েন্টের হিসেবে ওটাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টাইগারদের সবচেয়ে বড় অর্জন ছিল এতদিন। কিন্তু সেটা ছাপিয়ে এবার টি-২০ তে সফলতা পেল সাকিব-মুস্তাফিজরা। ওয়ানডে তাদের পছন্দের ফরম্যাট বলা হলেও শতকরা জয়ের হিসেবে টি-২০’তেই সফলতার হার এখন সবচেয়ে বেশি।