করোনা সংক্রমণ ভয়ংকরভাবে বাড়ছে আর তা নিয়ন্ত্রণে আওয়ামী লীগ সরকারের দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের ঘোষিত ১৮ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে সরকারের দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি।
করোনা এ দুর্যোগে সুবর্ণজয়ন্তীর বৃহৎ আয়োজনের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সুবর্ণজয়ন্তীর অনেক আগেই স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বলা হয়েছিলো যে, করোনা খুব মারাত্মকভাবে আসছে, অবিলম্বে জনসমাগম বন্ধ করা দরকার। কিন্তু সরকার তা করেনি। এখন যেহেতু উৎসব শেষ হয়েছে, তাদের মহান অতিথিরা চলে গেছেন। এখন তারা এই বিষয়টা আবার সামনে এনেছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, শুধু স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে নয়, সরকারের পক্ষ থেকে যে দৃশ্যমান ক্যাম্পিং থাকবে, প্রচার-প্রচারণা থাকবে, উদ্যোগ থাকবে সেসব লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকার ফ্যাক্টসগুলোকে গোপন করছে, ডাটাগুলোকেও গোপন করছে। এর আগে টেস্টই করেনি। যে করতে পেরেছে তার ওপর তারা নির্দেশনা দিয়েছে। এখনো যে টেস্ট হচ্ছে তা খুবই কম।
করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষায় দলের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর কর্মসূচি স্থগিত করার কথা পুনরুল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর কর্মসূচি স্থগিত করেছি। আমরা রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে বাধ্য হয়েছি যখন তারা (সরকার) আমাদের জনগনের উপর এভাবে আক্রমণ করেছে, হামলা করেছে তার জন্য।
সম্মেলনে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, সহ দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ও চেয়ারপার্সনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, ‘একটি অপ্রিয় সত্য কথা বলতে চাই। বাংলাদেশের রাজনীতিতে আজকে যে দুর্বৃত্তায়ন চলছে এজন্য আজকে রাস্তায় মানুষ বলাবলি করছে ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব নাকি মেরুদণ্ডহীন প্রাণী’।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে মির্জা কাদের এসব কথা বলেন।
কাদের মির্জা বলেন, আর নোয়াখালীর মানুষ বলাবলি করছে, নোয়াখালীর রাজনীতির এই দূরবস্থা এবং একরাম চৌধুরীর অপকর্মের জন্য মেরুদণ্ডহীন সভাপতি খায়রুল আনম সেলিম দায়ী। তারপরে কোম্পানীগঞ্জের রাজনীতির আজকের এই অবস্থার জন্য আরেক মেরুদণ্ডহীন সাহাব উদ্দিন দায়ী।’
তিনি বলেন, এটা অপ্রিয় হলেও সত্য কথা। এটা মানুষের কথা, মানুষের মনের কথা। আমি আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করেছি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সংগঠন বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের সদস্য হয়ে রাজনীতি করবো। আমি নামাজের বিছানায় বসে শপথ করেছি অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলবো।
কাদের মির্জা বলেন, আমি আমার প্রতিশ্রুতি থেকে আজও এক চুল পরিমাণ সরে যায়নি। হেফাজতের উত্থান কিভাবে হয়েছে আপনারা জানেন। আওয়ামী লীগের অপরাজনীতির কারণে তাদের উত্থান। তারা আজকে এমন পর্যায়ে গিয়েছে, তারা এখন মানুষ হত্যা করতে দ্বিধাবোধ করে না। দলের এখন সুসময়। বসন্তের কোকিলদের আনাগোনায় ত্যাগীরা হারিয়ে যাচ্ছেন।
কাদের মির্জা বলেন, মন্ত্রীর স্ত্রী সন্ত্রাসীদের অর্থের যোগান দিয়েছেন। যেহেতু তিনি দুর্নীতিগ্রস্ত, তার দুর্নীতিকে ঢাকা দেওয়ার জন্য আমি যাতে তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে নেত্রীর কাছে দেশবাসীর কাছে কোনো কিছু করতে না পারি সেজন্য তিনি আমার বিরোধীতা করছেন।
আমাকে হত্যা করার জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনি কার স্বার্থে, কিসের স্বার্থে, কেন আজকে সন্ত্রাসী, অস্ত্রবাজদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। আমার নেতাকর্মীরা গুলি খেয়ে ঢাকাতে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে। আপনি একবার তাদের দেখতেও যাননি, আপনার কোন প্রতিনিধিও যায়নি। এটার জবাব একদিন জনগণকে দিতে হবে, আল্লাহর আদালতে দিতে হবে।
সারাদেশে ডেঙ্গু প্রকোপ আকার ধারণ করেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় সরকার সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। রোববার (৩০ জুলাই) সকালে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ ও নতুন ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে ডেঙ্গু প্রকোপ আকার ধারণ করেছে। এখন পর্যন্ত দেশে ২০০ জনেরও বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে এবং ৪৫ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। সরকার ডেঙ্গু মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য সব ধরনের ওষুধ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আলাদা রুম রাখা হয়েছে। ডাক্তার-নার্সদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এমনকি ৫০ টাকা দিয়ে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা যাবে। দেশবাসীর কাছে অনুরোধ আপনারা বাড়িঘর পরিষ্কার রাখবেন। মশা কমে গেলে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কমে যাবে।
এ সময় সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: ইত্তেফাক