a
ফাইল ছবি । ইয়োসি কোহেন
দীর্ঘ সময় ধরে ইসরায়েলি গোয়েন্দারা কীভাবে ইরানে গোপন অভিযান চালিয়ে আসছেন, তার বিশদ বিবরণ তুলে ধরেছেন সেখানকার গোয়েন্দা বাহিনী মোসাদের সদ্য বিদায়ী প্রধান ইয়োসি কোহেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ইরানের পরমাণু আর্কাইভে ঢুকে কীভাবে হাজার হাজার নথি বের করে নেওয়া হয়েছে, তার রোমহর্ষ বর্ণনা দিয়েছেন তিনি।
ইরানের নাতাঞ্জ পরমাণু স্থাপনা ধ্বংস এবং একজন পরমাণুবিজ্ঞানী হত্যায় ইসরায়েলের সম্পৃক্ততার ইঙ্গিতও দিয়েছেন ইয়োসি কোহেন।
গতকাল শুক্রবার (১১ জুন) বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইসরায়েলের চ্যানেল ১২–এর ইউভডা ডকুমেন্টারি প্রোগ্রামে সাংবাদিক ইলান ডায়ানকে ওই সাক্ষাৎকার দেন কোহেন। ওই ডকুমেন্টারি ইসরায়েলি টেলিভিশনে স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার (১০ জুন) রাতে সম্প্রচার করা হয়।
সাক্ষাৎকারে মোসাদের কার্যক্রমের গোপন অনেক তথ্যও সামনে চলে এসেছে। কোহেন ৫ বছরের বেশি সময় ধরে মোসাদকে নেতৃত্ব দেওয়ার পর গত সপ্তাহে অবসরে যান।
জানা যায়, ২০১৮ সালে ইরানের ওয়্যারহাউসে হামলা চালিয়ে পরমাণু কর্মসূচিসংক্রান্ত হাজার হাজার নথি চুরি করে ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন তিনি। ২০১৮ সালে নেতানিয়াহু এক সংবাদ সম্মেলনে চুরি করা ওই সব নথি দেখিয়ে দাবি করেছিলেন, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে। তবে ইরান বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
সাক্ষাৎকারে কোহেন বলেছেন, ‘ওই অপারেশন পরিকল্পনা করতে দুই বছর সময় লেগেছিল মোসাদের। এর সঙ্গে ২০ জন মোসাদ এজেন্ট মাঠপর্যায়ে যুক্ত ছিলেন। অথচ এসব এজেন্টের কেউই ইসরায়েলি নাগরিক ছিলেন না এবং তেল আবিবের কমান্ড সেন্টার থেকে গোয়েন্দা প্রধান এসব অপারেশন দেখছিলেন। এজেন্টরা ওয়্যারহাউস ভেঙে ঢুকে পড়ে ৩০টি সিন্দুক ভাঙেন। স্ক্রিনে যখন ওই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো দেখানো হয়, তা ছিল আমাদের জন্য দারুণ রোমাঞ্চকর।’
তিনি দাবি করেন, ওই অপারেশনে অংশ নেওয়া সব এজেন্ট জীবিত ফিরে এসেছিলেন। তবে কয়েকজন এজেন্টকে ইরান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
বিবিসি জানায়, মোসাদের সাবেক প্রধান হিসেবে গণমাধ্যমের সামনে বিশেষ কিছু বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরার ঘটনা একেবারে নতুন নয়। তবে ইয়োসি কোহেনের মন্তব্যে যে মাত্রায় বিস্তারিত তথ্য উঠে এসেছে, তা অসাধারণ। কোনো রোমাঞ্চধর্মী গল্পের মতোই কোহেন তাড়ার মুখে এজেন্টদের সিন্দুক ভেঙে ইরানের পারমাণবিক তথ্য বের করে আনার এবং তা দেশের বাইরে পাঠানোর ঘটনা বর্ণনা করেন।
সাক্ষাৎকারে ইরানের ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর বিষয়টি স্বীকার করার কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন কোহেন। তবে ওই সাক্ষাৎকারটি যথেষ্ট হিসাব–নিকাশ করেই প্রচার করেছে ইসরায়েল। তাদের সামরিক বাহিনীর সেন্সরও পার হয়েছে। এ ছাড়া সাক্ষাৎকারটি প্রকাশের সময়টিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের সমঝোতা চুক্তি যখন নতুন করে জীবন পাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে, সে সময় সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হলো।
কোহেন তার সাক্ষাৎকারে আরও বলেন, ‘তিনি ইরানের ওই স্থাপনা সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জানেন। এমনকি তিনি ওই স্থাপনার ঘূর্ণমান সেন্ট্রিফিউজের কাছ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারবেন। ইরান যে সেলার ব্যবহার করে সেটা ঘূর্ণমান। এখন অবশ্য এ ধরনের সেলার ব্যবহৃত হয় না।’
সাক্ষাৎকারে ইরানের পরমাণুবিজ্ঞানী মহসেন ফাখরিজাদেকে নিয়েও কথা বলেন কোহেন। গত বছরের নভেম্বরে তেহরানের বাইরে তার ওপর হামলা চালানো হয়। ওই ঘটনার জন্য সরাসরি ইসরায়েলকে দোষারোপ করে ইরান। ওই বিজ্ঞানীর মৃত্যুর ঘটনায় সেসময়ে ইসরায়েলের যুক্ত থাকার কথা স্বীকার বা অস্বীকার কোনোটাই করেননি কোহেন। তবে তিনি বলেন, ওই বিজ্ঞানী দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তুতে ছিলেন। কারণ, তাঁর বৈজ্ঞানিক প্রজ্ঞা মোসাদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
সংগৃহীত ছবি
পৃথিবীর দরিদ্রতম রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অন্যতম আফগানিস্তান। ৯০ ভাগ আফগানই দৈনিক দুই ডলারের কম আয়ে দৈনন্দিন জীবন চালান। দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার সংযোগস্থল সেই আফগানিস্তানের মাটির নিচেই রয়েছে সারাবিশ্বের জন্য প্রয়োজনীয় এক লাখ কোটি ডলার (৮৪ লাখ কোটি টাকা) মূল্যের খনিজ সম্পদ।
২০১০ সালে মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা ও ভূতাত্ত্বিকদের প্রকাশিত এক জরিপে এই সম্পদের সন্ধান দেয়া হয়েছিল। জরিপে বলা হয়েছিলো, এই বিপুল পরিমাণ সম্পদ আফগানিস্তানের অর্থনীতির গতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে।
দেশটির বিভিন্ন প্রদেশেই লোহা, কপার ও সোনাসহ বিপুল ধাতব খনিজ সম্পদ ছড়িয়ে আছে। পাশাপাশি ধারণা করা হচ্ছে, নবায়ন উপযোগী ব্যাটারির জন্য প্রয়োজনীয় কিন্তু দুর্লভ ধাতু লিথিয়ামের বৃহত্তম মজুদ আফগানিস্তানেই রয়েছে।
মার্কিন ইকোলজিক্যাল ফিউচার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ রড স্কুনুভার বলেন, 'আফগানিস্তান নিশ্চিতভাবে ঐতিহ্যগত ধাতব সম্পদে সমৃদ্ধশালী একটি অঞ্চল। সাথে সাথে ২১ শতকে উদীয়মান অর্থনীতির জন্য প্রয়োজনীয় ধাতুও এখানে রয়েছে।'
গত মে মাসে আন্তর্জাতিক শক্তি কমিশন এক প্রতিবেদনে পরিবেশ বিপর্যয় এড়াতে লিথিয়াম, কপার, নিকেল, কোবাল্ট, মাটির বিরল মৌলসহ সরবরাহ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের লিথিয়াম, কোবাল্ট ও মাটির বিরল মৌলের বৈশ্বিক সরবরাহের ৭৫ ভাগই চীন, কঙ্গো ও অস্ট্রেলিয়া থেকে আসে।
২০১০ সালে মার্কিন জিওলজ্যিকাল সার্ভের কর্মকর্তা সাইদ মীরজাদ সায়েন্স ম্যাগাজিনকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, 'যদি আফগানিস্তান অল্প কয়েক বছর শান্ত থাকে এবং এর খনিজ সম্পদ উন্নয়নের সুযোগ দেয়া হয়, তবে এক দশকের মধ্যেই এটি এই অঞ্চলের ধনী দেশগুলোর মধ্যে একটিতে পরিণত হবে।'
বর্তমানে আফগানিস্তানে খনিজ সম্পদ থেকে প্রতি বছর এক শ' কোটি ডলার (আট হাজার চার শ' কোটি টাকা) আয় হয়।
মার্কিন থিঙ্ক ট্যাংক আটলান্টিক কাউন্সিলের সিনিয়র ফেলো মহসিন খানের মতে, খনিজ সম্পদ থেকে আয় হওয়া অর্থের ৩০-৪০ ভাগই দুর্নীতির মাধ্যমে লুটপাট হয়ে যায়।
দীর্ঘ ৪০ বছরের যুদ্ধ-বিগ্রহে বর্তমানে আফগানিস্তান বিধ্বস্ত। সর্বশেষ দুই দশক মার্কিন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অবিরাম যুদ্ধ চলেছে দেশটিতে। রোববার তালেবান রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর আফগানিস্তানে আপাতত যুদ্ধ শেষ হয়েছে। পুরো আফগানিস্তানে নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর দেশের উন্নয়নে এই খনিজ সম্পদ তালেবান ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
খনিজ সম্পদ উত্তোলনে উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন কোনো দেশের উপস্থিতি বর্তমানে আফগানিস্তানে না থাকায় চীনের সুযোগ রয়েছে এই অঞ্চলে বিনিয়োগের। ইতোমধ্যেই তালেবানের সাথে চীনা কর্তৃপক্ষের যোগাযোগ হয়েছে। তালেবান কর্তৃপক্ষ চীনকে আফগানিস্তানের মাটি দেশটির বিরুদ্ধে ব্যবহার না করার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছে।
সূত্র: সিএনএন/যায় যায় দিন
ছবি: অভিনেত্রী রোমানা ইসলাম স্বর্ণা
সৌদি প্রবাসী সাবেক স্বামীর প্রতারণা মামলায় মডেল ও অভিনেত্রী রোমানা ইসলাম স্বর্ণার রিমান্ড ও জামিন আবেদন দুটোই নামঞ্জুর হয়েছে আদালত। পাশাপাশি তাকে একদিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদ আক্তারের আদালত এই নির্দেশ প্রদান করা হয়।
এর আগে মডেল ও অভিনেত্রী রোমানা ইসলাম স্বর্ণাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে হাজির করা হয়।
সৌদি প্রবাসী ব্যবসায়ী স্বামীর দেড় কোটি টাকারও বেশি অর্থ হাতিয়ে নেওয়ায় অভিযোগে অভিনেত্রী রোমানা ইসলাম স্বর্ণাকে গতকাল গ্রেফতার করা হয়।