a
ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
মুন্না শেখ, জবি প্রতিনিধি: তিন দফা দাবি নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচিতে বাধা দেয় পুলিশ । আগত শিক্ষার্থীদের উপর অমানবিক লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল-সাউন্ড গ্রেনেড ও গরম পানি নিক্ষেপ করে পুলিশ। । এ ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন শতাধিক। আহতদের মধ্যে প্রায় ৩০ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন
রয়েছে । প্রতিবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রাজধানীর কাকরাইল মসজিদ এলাকায় সড়কের সামনে বসে পড়েন।
উল্লেখ্য যে, প্রথমে গুলিস্তান মাজার গেটে বাধার সম্মুখীন হন আন্দলনকারীরা। বাধা অতিক্রম করে মৎস্য ভবনের দিকে যেতে থাকলে দ্বিতীয় দফায় ওখানে আবার পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এবারও তারা বাধা উপেক্ষা করে যমুনা অভিমুখে এগিয়ে যেতে থাকেন। পরবর্তীতে কাকরাইল সংলগ্ন এলাকায় পৌছালে টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড, গরম পানি নিক্ষেপ করতে শুরু করে। এতে জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন, সহকারী প্রক্টর নোইম সিদ্দিকি ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক নাসির উদ্দিন, জবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব সামছুল আরেফিন,
সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন লিমন, জবি প্রেসক্লাবের সভাপতি সুবর্ণ আসসাইফ সহ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।
গুরুতর আহত হন জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক জিলন, তাকে কয়েকজন পুলিশ ঘেরাও করে মারতে মারতে রাস্তায় ফেলে দেয় এবং তার বুকের উপর পাড়া দেয়। তারপর থেকেই সে অজ্ঞান হয়ে যায়। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি। পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাদমানের বাম কানের পর্দা ফেটে রক্তক্ষরণ হয় ।
এ সময় বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও আহত হন। তাদের মধ্যে রয়েছেন- বাসসের সাংবাদিক নাজিদ, ঢাকা ট্রিবিউন এর জবি প্রতিনিধি সোহান, দৈনিক সংবাদের জবি প্রতিনিধি মেহেদী, ডেইলি ক্যাম্পাসের সাংবাদিক আরিফ, স্বদেশ প্রতিদিনের জবি প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম সহ অনেকে।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা উপস্থিত শিক্ষক - শিক্ষার্থীদের।
জবিয়ানদের তিন দফা দাবি হলো-
১. আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০% শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করতে হবে
২. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করতে হবে
৩. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।
ফাইল ছবি: বক্তব্য রাখছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু
নির্বাচন যত পিছিয়ে যাবে সংকট তত তীব্র হবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘আমরা বর্তমান সরকারের কাছে খুব বেশি কিছু প্রত্যাশা করি না। ছোট্ট একটি প্রত্যাশা আছে। দীর্ঘ ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারে না। ড. মুহাম্মদ ইউনুস জ্ঞান গরিমা এবং কর্মের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একজন ব্যক্তি। তিনি নির্বাচন কবে হবে এই কথাটা যতদিন জাতিকে জানাতে না পারবেন ততদিন নানান বিতর্ক তৈরি হবে। এই বিতর্ক সৃষ্টিতে সরকারের ভূমিকা থাক এটা আমরা প্রত্যাশা এবং পছন্দ করি না।’
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলন আয়োজিত প্রতীকী প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অবিলম্বে গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে এ সমাবেশ হয়।
দুদু বলেন, ‘এক মাসে কিছু হয় না। একটা সন্তান জন্ম দিতেও নয় মাস লাগে। এক মাসে যদি কোনো সন্তান আনতে হয় সেটা হয় মৃত। ১৬টি বছর এদেশের মানুষ রক্ত দিয়েছে। ১৬টি বছর এদেশের ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক গুম ও নিখোঁজ হয়েছে। ১৬টি বছর জেল খেটেছে। এক মাসের আন্দোলনের কথা সব বিবেচনায় যদি এনে থাকেন সেটা ঠিক হয়নি। এজন্য যত তাড়াতাড়ি নির্বাচন করা সম্ভব হবে তত তাড়াতাড়ি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। যত তাড়াতাড়ি নির্বাচন করা সম্ভব হবে, তত তাড়াতাড়ি নির্বাচিত সরকার দেশ পরিচালনায় তার উপযুক্ততা প্রমাণ করতে পারবে। এটাই আমাদের মাথায় রাখতে হবে। সেদিকেই আমি সরকারকে আহ্বান করি। কারণ, এই সরকার আমাদের সরকার। এই সরকার ব্যর্থ হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা গণতন্ত্র বিপন্ন হবে। সেজন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সিদ্ধান্ত নিয়ে নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘বাজারে আগুন লেগে গেছে। দ্রব্যমূল্য এতটাই বেড়েছে যে মানুষ অস্বস্তিতে পড়েছে। নতুন সরকার আসার পরে এই অবস্থা হবে সেটা কেউ প্রত্যাশা করে নাই। মানুষ প্রত্যাশা করেছিল, জিনিসপত্রের দাম কমবে। সংস্কার সরকার করবে সে সংস্কার পরবর্তী সরকার সংসদে এসে অনুমোদন করবে।’
দুদু বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মিলেমিশে চলাটাই এ সরকারের সাফল্যের একটি কারণ হতে পারে। দূরত্ব বাড়লে দেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, স্বাধীনতার জন্য বিপদ হতে পারে।’
প্রতীকী সমাবেশে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক এম জাহাঙ্গীর আলম সভাপতিত্ব করেন এবং সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মোফাজ্জেল হোসেন হৃদয় সঞ্চালনা করেন।
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপাসন উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জেড খান মো. রিয়াজউদদীন নসু, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রিন্সিপাল শাহ মুহাম্মদ নেছারুল হক। সূত্র: বিডি প্রতিদিন
ছবি সংগৃহীত
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের) এমপি বলেছেন, অত্যন্ত অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যাচ্ছে দেশ। বাংলাদেশের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ এবং সামনের দিকে আরো অনেক খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এটা আমার আশঙ্কা। যদি না হয় আমি খুশি হব। আমি আশঙ্কা করছি, দেশের মানুষ একটা আগ্নেয়গিরি জ্বালা বুকের মধ্যে নিয়ে বসে আছে। বাংলাদেশ এখন শ্রীলঙ্কার পথে হাঁটছে। গোজামিল দিয়ে দেশ পরিচালনা করা হচ্ছে। বাস্তবে দেশ দেউলিয়া হয়ে গেছে।
জি এম কাদের শনিবার (১১ মার্চ) বিকালে কুমিল্লা নগরীর টাউন হল মাঠে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি এয়ার আহমেদ সেলিমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি। এছাড়া দলের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
সম্মেলনে জাপা চেয়ারম্যান আরো বলেন, দেশে এমন অনেক আইন করা হয়েছে, মুখ খুলে কথা বললে দেশদ্রোহী হয়ে যাবেন। এখন আর মনের কথা বলা যায় না। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললে এটা দেশের বিরুদ্ধে চলে যাবে এবং দেশদ্রোহী মামলা হয়। একটা কথা স্পষ্ট করে বলতে পারি—মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে, দেশে এখন সবচেয়ে বেশি বৈষম্য হচ্ছে। তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা ছিল জনগণের মালিকানাধীন একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। আজকে বর্তমান সরকারের দল আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলতে বলতে নিজেদের মুখে ফেনা তুলে ফেলেছে। কিন্তু আমি পক্ষে-বিপক্ষে বলব না। বললে তো কালকে আবার ফাঁসিতে নিয়ে যেতে পারে। দেশের একটি শ্রেণির মানুষ সরকারি দল করে তারা বিভিন্নভাবে সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। তারা লাখ লাখ, কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে দেশের বাইরে পাচার করছে। বেশির ভাগ মানুষকে চাকরি-বাকরি ও আইনি সহায়তাসহ সবক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে ফেলা হচ্ছে। তারা দরিদ্র থেকে দরিদ্র হচ্ছে।
সম্মেলনে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জাতীয় পার্টির নতুন কমিটিতে এয়ার আহমেদ সেলিমকে সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা ওবায়দুল কবির মোহনকে সাধারণ সম্পাদক এবং সিনিয়র সহসভাপতি পদে হুমায়ুন কবির মুন্সীর নাম ঘোষণা করা হয়। এদিকে দীর্ঘ আট বছর পর অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে দুপুরের পর থেকে জাতীয় পার্টির কুমিল্লা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে মুখরিত হয় টাউন হল মাঠ। সূত্র:ইত্তেফাক