a
ফাইল ছবি
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যশিক্ষা বিভাগের ১৭টি ফাইল গায়েব হয়ে যাওয়ায় তোলপাড় চলছে। এ ঘটনায় এখন কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। কেননা এ ধরনের ঘটনা এবারই প্রথম নয়- এর আগেও একবার একই কায়দায় ফাইল চুরি হলেও সে ঘটনাও ধামাচাপা দেয়া হয়েছে। তবে এবার নড়ে চড়ে বসেছেন স্বাস্থ্য সচিব আলী নূর।
তিনি কঠোর মনোভাব নিয়ে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের কঠোর শাস্তির কথা বলেছেন। সচিব জানিয়েছেন- ফাইল গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনায় ‘কেউই সন্দেহের উর্ধে নন। এরই মধ্যে ওই শাখার তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণীর ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেছে সিআইডি। রবিবার বেলা ১২টার দিকে সচিবালয় থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়। সিআইডির পাশাপাশি আরও কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থাও এ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে সক্রিয় হয়েছে।
জানা গেছে, এ ঘটনায় সচিবালয়ে তদন্ত শুরু করেছে সিআইডির ক্রাইম সিনের সদস্যরা। তদন্তের জন্য সচিবালয়ে এসেছিলেন সিআইডির বিশেষ সুপার মোঃ কামরুজ্জামান। তিনি জানান, যেহেতু একটা জিডি হয়েছে। সেটার বিষয়ে প্রাথমিক তদন্তের জন্য খোঁজখবর নিতে আমরা এসেছি। কিছু তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে।
এদিন ক্রাইম সিনের সদস্যরা সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের নিচতলায় অতিরিক্ত সচিব মোঃ শাহাদাত হোসাইন ও যুগ্ম সচিব কাজী আনোয়ার হোসেনের কক্ষে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেন। এ সময় তারা সবার আঙ্গুলের ছাপ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেক করেন। অন্তত ১৩ জনের আঙ্গুলের ছাপ নেয়া হয়।
এদিকে সিআইডি সূত্র জানিয়েছে, তাদের দফতরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যে ৬ জনকে ডেকে আনা হয়েছে তারা হলেন- জোসেফ, আয়শা, বাদল, বারী, মিন্টু ও ফয়সাল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ওই কক্ষের ছয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দুপুর সোয়া ১টার দিকে একটি মাইক্রোবাসে করে সিআইডি কার্যালয়ে নেয়া হয়। জানা গেছে, তদন্তকারীদের সাধারণ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়েই তারা অসংলগ্ন কথা বার্তা বলছেন। কিছু প্রশ্নের জবাবে তারা রহস্যজনকভাবে নীরব থাকে। এদের আরও ব্যাপক জেরা করার প্রয়োজনে গ্রেফতার করা হতে পারে।
রবিবার ফাইল গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনায় কেউই সন্দেহের উর্ধে নন বলে জানিয়েছেন বিভাগটির সচিব মোঃ আলী নূর। তিনি সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, আমি নথি হারানোর বিষয়টি বৃহস্পতিবার জানতে পেরেছি। জানার পর পুলিশকে জানিয়েছি। পরে সিআইডিকে বিষয়টি টেকওভার করতে বলেছি।
এ ঘটনায় তদন্ত কমিটির একজন সদস্য বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে আলী নূর বলেন, শুক্রবার রাতে অতিরিক্ত সচিব মোঃ শাহ্ আলমকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য দুই সদস্য ছিলেন চিকিৎসা শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব মোঃ আহসান কবীর এবং উপ-সচিব আবদুল কাদের। কমিটিতে বিভাগের উপসচিব মল্লিকা খাতুনকে যুক্ত করা হয়েছে। কবেনাগাদ প্রতিবেদন পাওয়া যেতে পারে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কমিটিকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আশা করছি এই সপ্তাহের মধ্যেই রিপোর্ট পাব।
এ ঘটনায় কাউকে সন্দেহ করছেন কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মোঃ আলী নূর বলেন, আমরা কেউই সন্দেহের উর্ধে নই। সিআইডিকে বলা হয়েছে, আপনাদের যাকে যাকে মনে হয়, জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কারও কোন আপত্তি থাকবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সচিব আলী নূর গতকাল সন্ধ্যায় গনমাধ্যমকে বলেন, সিআইডি আমাদের অনুমতি নিয়েই ৬ জনকে নিয়ে গেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজনেই নিয়ে গেছে। আমরা চাই এ ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন করা হোক।
জানা গেছে, ফাইল চুরির ঘটনা এবারই প্রথম নয়। মাত্র দেড় মাস আগেও একই শাখা থেকে ফাইল গায়েব হয়েছিল। তবে সেই ঘটনার এখনও কোন সুরাহা হয়নি। বরং ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। মাস দেড়েক আগে ওই একই শাখা থেকেই ফাইল গায়েব হয়ে গিয়েছিল। সেই ফাইলটি ছিল রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ সংক্রান্ত। ফাইল গায়েব হওয়ার পর তিন দিনের ভেতরে ফাইল খুঁজে দেয়ার জন্য আয়েশা সিদ্দিকাকে চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু তিনি চিঠির জবাব দেননি। পরে তাকে শো-কজ করা হয়। আয়েশা সিদ্দিকা বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা। সে সময় চিঠির জবাবে তিনি বেশিরভাগই তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানান। তখন তিনি জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। এরপর নিয়ম অনুযায়ী, সে জবাব সন্তোষজনক না হওয়াতে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনিক শাখায় অভিযোগ পাঠিয়ে দেয়া হফ। পরে তার শরীরের অবস্থা বিবেচনা ও সন্তানের ওপর কোন প্রভাব পড়ে কিনা চিন্তা করে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
একই ঘটনায় অতিরিক্ত সচিব মোঃ শাহাদাৎ হোসাইন গণমাধ্যমকে বলেন, ফাইল গায়েব হওয়ার ঘটনায় জিডি করা হয়েছে শাহবাগ থানায়। সিআইডি, এনএসআই এসেছে। এখন তো আমাদের আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া আর কোন পথ নেই। তারা আমাদের সবার মোবাইল নম্বর নিয়েছে। আগামীকাল থেকে এর হদিস বের করার চেষ্টা করা হবে। রবিবারে সব স্টাফরা আসার পর পুলিশসহ সবাই তদন্ত করবে।
নথি গায়েবের ঘটনাকে ভয়াবহতা উল্লেখ করে শাহাদাত হোসেন বলেছেন, এটা অনেক ভয়াবহ একটা ব্যাপার, কারণ নথি তো একটা ডকুমেন্ট। এটা সরকারী ডকুমেন্ট। এই সরকারী ডকুমেন্ট নাই এটা তো বারবার ঘটতে পারে। এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, পুনরাবৃত্তি না হয় এবং এর একটা সমাধান যেন হয়, সে জন্য যেভাবে যা করার আমরা করছি। সূত্র: জনকন্ঠ
ফাইল ছবি
টাঙ্গাইল রেলওয়ে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা কমিউটার ট্রেনে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। এতে ট্রেনের দুটি বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বুধবার (১৫ নভেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে টাঙ্গাইল থেকে ঢাকাগামী ট্রেনটিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ ইদ্রিচ গণমাধ্যমকে বলেন, রাত ৩টার দিকে খবর পেয়ে স্টেশনে গিয়ে ট্রেনের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। ট্রেনের ইঞ্জিনের কাছাকাছি দুটি বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কমিউটার ট্রেনটি টাঙ্গাইল টু ঢাকা অভিমুখে স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, রাত ৩টায় পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রেন টাঙ্গাইল স্টেশন ত্যাগ করার পর আগুন লাগে। আগুনের সূত্রপাত তদন্ত শেষে জানা যাবে।
ঘারিন্দা রেলস্টেশনের বুকিংমাস্টার সেলিম মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রাত ৩টার দিকে ঘারিন্দা রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনটির দুইটি বগিতে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট গিয়ে এক ঘণ্টার মতো চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কে বা কারা আগুন দিয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেনি কেউই। সূত্র: যুগান্তর
ছবি:মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষায় একজন শিক্ষার্থীর প্রক্সি পরীক্ষা দিতে এসে আটক হয়েছেন আবির নামের একজন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল বলে জানা গেছে।
আটককৃত শিক্ষার্থীর মোবাইল ঘেটে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির সত্যতা পেয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তার মোবাইল এর মেসেঞ্জার ঘেটে বিভিন্ন তথ্য পায় প্রক্টর অফিস।
ভর্তি পরীক্ষা অংশ নেয়া প্রবেশপত্রে শিক্ষার্থীর নাম দেখা যায় সেজান মাহফুজ (রোল ৩০৯৯৭৬) বাবা মোঃ আবদুল বারী, মাতা: মোসাম্মদ মাহফুজা বেগম।
শনিবার (১৩ আগস্ট) ভর্তি পরীক্ষা দায়িত্বরত শিক্ষক প্রবেশপত্র ছবির সাথে আটককৃত শিক্ষার্থীর চেহারা মিল না পাওয়ায় তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়ে পরে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয় প্রশাসন। পরে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা সন্দেহজনকভাবে আবিরকে আটক করে।
প্রক্টর অফিসে জেরা করার মাঝে একটি ফোন কল আসলে সবার উপস্থিতি জোরপূর্বক কথা বলতে হয় তাকে মোবাইলফোনে লাউড স্পিকারে শোনা যায় আরেক ভাইবা পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা। বড় কোন চক্রের সাথে জড়িত আছে এই শিক্ষার্থী বলে ধারনা করা হচ্ছে।
এসময় আবিরের কাছ থেকে একটি মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের কার্ড উদ্ধার করা হয়। ব্যাংক কার্ডে ২৬ লক্ষ টাকা পাওয়া যায়। যা গত দুইদিনে অস্বাভাবিকভাবে লেনদেন করা হয়েছে।পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে পুলিশে সোপর্দ করে প্রক্টরিয়াল বডি। ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির একটি বড় চক্রের অংশ হিসেবে সে কাজ করছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় একজনের প্রক্সি দিয়েছে বলেও প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন,আমাদের পর্যবেক্ষন অনুযায়ী সে অন্যের হয়ে পরীক্ষা দিতে এসেছে, এটা সে স্বীকার ও করেছে। এ জন্য যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে তাকে প্রশাসনের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।