a
সংগৃহীত ছবি
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) ৪১তম পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে গত শুক্রবার। যেখানে চার লাখের বেশি স্বপ্নবাজ লড়েছেন এমন অগ্নি পরীক্ষায়। তাদের মাঝেই উঠে এসেছে অন্যরকম এক স্বপ্নবাজ যুবকের নাম যিনি কিনা পরীক্ষা কেন্দ্রেই উপস্থিত হয়েছিলেন বাঙালির ঐতিহ্যবাহী পোশাকে।
গত শুক্রবার(১৯ মার্চ)অনুষ্ঠিত বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে আলোচিত হয়েছেন খাইরুল হাসান শিবলু (২৯)। ইতোমধ্যে তার ছবিটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায়, লুঙ্গি-গেঞ্জি ও গামছা পরা এক শিক্ষার্থী পরীক্ষার একটি কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। তার হাতে পরীক্ষার প্রবেশপত্র।
বিশেষ সূত্রে জানা যায়, খায়রুল ময়মনসিংহের নান্দাইলের আতকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। ডিপ্লোমা শেষে বিএসসি, একইসঙ্গে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় আইন বিষয়েও পড়েছেন দু’বছর। নানামুখী অবিজ্ঞতা সম্পন্ন শিবলু ৪১তম বিসিএস পরীক্ষা দিয়েছেন। মজার ব্যাপার হলো এই শিবলুই করে বসেছেন সচরাচর এক নীতিবিরুদ্ধ কাজ। পরীক্ষার কেন্দ্রে গিয়েছেন লুঙ্গি, গেঞ্জি এবং গামছা পরেই। আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন অতি-আধুনিকতার চাপায় পিষ্ট সত্যিকার বাঙালি এখনও টিকে আছে।
শুক্রবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর মহাখালী টিএন্ডটি মহিলা কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রের গেটের সামনে লুঙ্গি, টি-শার্ট ও গলায় গামছা পরে একটি ছবি তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে শেয়ার করেন। ছবির ক্যাপশনে তিনি লেখেন ‘তৃতীয় ও শেষ বিসিএস পরীক্ষা। তাই আজ লুঙ্গি পরেই পরীক্ষা দিলাম।’এ সময় তার সাথে ছিলেন তার বোন ও ভগ্নিপতি।
এ বিষয়ে শিবলু বলেন, লুঙ্গি বাংলাদেশের মানুষের বহুল ব্যবহৃত এক আরামদায়ক পোশাক। বাঙালির ঐতিহ্য। এমন আরামদায়ক পোশাক সারাবিশ্বে আর দ্বিতীয়টি খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা তা সন্দেহ। দেশে বাস করেন কিন্তু কখনো লুঙ্গি পরেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মনে হয় অসম্ভব। আর সেই লুঙ্গি নিয়েই আমি ৪১তম বিসিএস পরীক্ষা দিলাম।
তিনি আরো জানান, বাংলার সোনার সন্তানরা বিদেশি সংস্কৃতিকে লালন করে না। বরং দেশীয় ঐতিহ্যকে ধারণ করে নিজেকে পরিচয় দিলাম একজন কৃষক বাবার সন্তান হিসেবে। শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আমাকে প্রকৃত বাঙালি হিসেবে পরীক্ষার হলে ঢুকতে দেওয়ার জন্য টি অ্যান্ড টি মহিলা কলেজ, মহাখালী কর্তৃপক্ষের কাছে। তাদের জন্য শুভকামনা নিরন্তর। পাশ্চাত্য সংস্কৃতি এড়িয়ে নিজেকে বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিয়ে পরীক্ষা দিলাম। একজন বাঙালির ঐতিহ্য প্রকাশ করায় আমাকে নিয়ে ট্রল করছেন, আসলে ট্রলের পাত্র আমি নই, যারা আমাকে করার চেষ্টা করছেন, তারাই ট্রলের পাত্র। বহুরূপীতা প্রকাশ করছেন। তাদের বাইরে-ভেতরে আরেক। প্যান্ট পরে নিজেকে শিক্ষিত প্রকাশ করতে চাইছেন। নিজেকে আধুনিক প্রকাশ করতে চাচ্ছেন। তবে আমি কাউকে ছোট করছি না, এটি বলে।
উল্লেখ্য, তুমি সফল হলে তোমার লুঙ্গি পরা ছবিটাই হবে ইতিহাস। শুধু বাংলাদেশ বা ভারতের সীমানায় নয়, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, জর্ডান, সোমালিয়া বা কেনিয়ার মতো দেশেও জনপ্রিয় পোশাক লুঙ্গি। সোনার বাংলার সন্তান হয়ে ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে ৪১ তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে আলোচিত হয়েছেন খাইরুল হাসান শিবলু।
ফাইল ছবি
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু মারা গেছেন। বুধবার (১৪ এপ্রিল) বিকালে সিএমএইচে তিনি মারা যান। তার ব্যক্তিগত সহকারী অ্যাডভোকেট মো. মহিন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ১৬ মার্চ সকালে সিএমএইচে ভর্তি হন তিনি। তবে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ২৫ মার্চ রাতে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। পরে তার শারীরিক অবস্থায় উন্নতি হওয়ায় ৩১ মার্চ কেবিনে দেওয়া হয়।
এরপর তার করোনা পরীক্ষা করা হয়। গত ১ এপ্রিল করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। কিন্তু হঠাৎ করে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ৬ এপ্রিল তাকে ফের আইসিইউতে নেওয়া হয়। তারপর থেকে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।
গত ১২ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন আব্দুল মতিন খসরু। তিনি বিএনপি সমর্থক প্রার্থী ফজলুর রহমানকে পরাজিত করেন।
গত সোমবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা-২০২১ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় নবনির্বাচিত কমিটির কাছে সুপ্রিম কোর্ট বারের দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয়। তবে করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিত্সাধীন থাকায় নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু অংশ নিতে পারেননি।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ১৯৯১ সালে কুমিল্লা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মতিন খসরু। তারপর ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৯ সালে মোট ৫ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর মধ্যে ৭ম সংসদে (১৯৯৬-২০০১) আইনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমান সংসদে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
ড. একে আব্দুল মোমেন
বাংলাদেশ নিয়ে বিজেপির সাবেক সভাপতি ও ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলছেন, ভারতের লোকদের ৫০ শতাংশের ভালো কোনো বাথরুম নেই। আর আমাদের ৯০ শতাংশ লোকই ভালো বাথরুম ব্যবহার করেন।
আমার দেশের শিক্ষিত লোকের চাকরির অভাব আছে। তবে অশিক্ষিত লোকের চাকরির অভাব নেই। আর ভারতের লক্ষাধিক লোক বাংলাদেশে চাকরি করে। তাই আমাদের ভারতে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) ড. মোমেন গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এসব মন্তব্য করেন।
বিজেপির সাবেক সভাপতি ও ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বক্তব্য জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, পৃথিবীতে অনেক জ্ঞানী লোক আছেন, দেখেও দেখেন না। জেনেও জানেন না। তবে তিনি (অমিত শাহ) যদি সেটা বলে থাকেন, আমি বলবো, বাংলাদেশ নিয়ে তার জ্ঞান সীমিত। বরং ক্ষেত্র বিশেষে বাংলাদেশ তাদের দেশ থেকে অনেক এগিয়ে।
ড. মোমেন বলেন, তারা যদি এ ধরনের চিন্তা করে থাকেন, তাহলে আমি বলবো, তাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে হবে। আর তাদের মনে হয় আমরা সঠিক তথ্য জানাতে পারিনি। এটা আমাদের দীনতা। তাদের সঠিক তথ্য জানাতে আমরা সচেষ্ট থাকবো।
বিজেপির সাবেক সভাপতি ও ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মঙ্গলবার ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, বাংলাদেশের গরিব মানুষ এখনও খেতে পায় না, তাই ভারতে আসে। বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ বন্ধ করা হবে।