a তেলের লরির ট্যাংকে পাওয়া গেল গাঁজা!
ঢাকা বুধবার, ৩ পৌষ ১৪৩২, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫
https://www.msprotidin.com website logo

তেলের লরির ট্যাংকে পাওয়া গেল গাঁজা!


এমএস.প্রতিদিন ডেস্ক:
শুক্রবার, ২৫ জুন, ২০২১, ১০:৩৮
তেলের লরির ট্যাংকে পাওয়া গেল গাঁজা!

ফাইল ছবি

জ্বালানি তেল সরবরাহের কাজে ব্যবহার করা হয় ঢাকা মেট্রো ল-২৯৭৪ নম্বরের লরিটি। তবে বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে, লরির ট্যাংকির ঢাকনা খুলে জ্বালানি তেলের পরিবর্তে পাওয়া যায় ট্যাংক ভর্তি অনেকগুলো বস্তা স্কস্টেপ দিয়ে পেঁচানো এসব চটের বস্তায় রয়েছে গাঁজা। 
যার পরিমাণে ৩৬ কেজি।
 
অপরদিকে ইয়াবা আনা হচ্ছে প্রাইভেটকারের গ্যাস সিলিন্ডারের বিশেষ কায়দায়। বুধবার (২৩ জুন) পৃথক দুটি অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ।

যে  পাঁচজন গ্রেফতার হলেন- মো. রিগান খাঁন (২৭), মো. জনি খান (২৫),  মো. জাকির হোসেন  (২৪), মো. খোকন মৃধা (২৬) ও মো. হৃদয় শিকদার (২১)।
 
বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) ডিবি গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম সাকলায়েন সংবাদ মাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম সাকলায়েন বলেন, দেশের সীমান্তবর্তী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে তা ঢাকায় আনতে পুরোনো কৌশলগুলোকে নতুনভাবে ব্যবহার করছে মাদককারবারিরা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে ট্রাক-লরি, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল, যানবাহনের তেলের ট্যাংক-গ্যাসের সিলিন্ডারে করে আসছে ইয়াবা, গাঁজা ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদক।

গোলাম সাকলায়েন আরও বলেন, এমন দুটি অভিনব কায়দায় মাদক বহনকালে গাঁজা ও ইয়াবাসহ ওই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

ডিবি গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম সাকলায়েন সাংবাদিকদের জানান, কতিপয় মাদককারবারি কক্সবাজার থেকে ঢাকা হয়ে গাজীপুরের উদ্দেশ্যে অভিনব কৌশলে প্রাইভেটকারের মধ্যে ইয়াবা নিয়ে আসছে এমন খবর পেয়ে বুধবার যাত্রাবাড়ী থানার রায়েরবাগের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চেকপোস্ট স্থাপন করে গাড়ি তল্লাশিকালে নম্বরবিহীন প্রাইভেটকারসহ জনি খান ও হৃদয় শিকদারকে গ্রেফতার করা হয়।

গোলাম সাকলায়েন বলেন, গ্রেফতার হওয়া আসামিদের দেখানো মতে প্রাইভেটকারের পেছনের ব্যাক ডালায় সংযুক্ত খালি গ্যাস সিলিন্ডারের ভেতর থেকে বিশেষ কায়দায় পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় ২০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

একই দিন বিকেলে অন্য এক অভিযানে শেওড়া বাসস্ট্যান্ড বটতলা থেকে জ্বালানি তেল বহনকারী ট্যাংক লরির মধ্যে ৩৬ কেজি গাঁজা বহনকালে রিগান, জাকির ও খোকনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা এ বিপুল পরিমাণ গাঁজা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে বিক্রির উদ্দেশ্যে ঢাকায় নিয়ে আসছিলো বলেও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম সাকলায়েন।

ডিবি গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম সাকলায়েন জানান, গ্রেফতার আসামিদের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

টেলিটকে বর্তমান এমডি ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রেতাত্মা


সিরাজ, বিশেষ প্রতিনিধি
সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৫, ০৭:২২
টেলিটকে বর্তমান এমডি ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রেতাত্মা

ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন

 

নিজস্ব প্রতিনিধি: আওয়ামী ফ্যাসিস্ট বিরোধী ভিন্ন মতাবলম্বীদের প্রতি চরম অবজ্ঞা এবং অসম্মান দেখিয়ে তৃপ্তি লাভই জেনো টেলিটক বাংলাদেশ লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব নুরুল মাবুদ চৌধুরীর ধ্যান জ্ঞান। ফ্যাসিষ্ট সরকারের আমলে সুপারিশের ভিত্তিতে তিনি টেলিটকে ডেপুটেশনে আসেন।জুলাই আন্দোলনের ঘোর বিরোধীতা করেও তিনি সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মুশফিকুর রহমান এর প্রিয়ভাজন হন এবং এম ডি সিহেবে পূর্ন দায়িত্ব গ্রহণ করেন।এরপরে তিনি সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার স্নেহধন্য ও সুপারিশে জিএম পদে নিয়োগ প্রাপ্ত জনাব ডি এম নুরুল হুদা কে  ঢাকায় বদলী করে নিজের কাছে নিয়ে আসেন । জনাব ডি এম নুরুল হুদা বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদ টেলিটক শাখার উপদেষ্টা হিসেবে দাপটের সাথে ফ্যাসিষ্ট আমলে চাকরী করে আসছিলেন। বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদ টেলিটক শাখার সভাপতি জনাব মোঃ রনক আহসান এবং সাধারন সম্পাদক জনাব আতিকুল আলম(মতিয়া চৌধুরীর দেবর) বছরের পর বছর অফিস না করলেও তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে (জুলাই আন্দোলন সমর্থকদের চাপে) বদলী করে কার্যত তাদের সকল অপরাধ মাফ করে দেন এবং ফৌজদারী অপরাধে অপরাধী জনাব মোঃ রনক আহসান ও অর্থযোগানদাতাদের ভারতে গিয়ে দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নে সাহায্য করতে ভারত ভ্রমনের অনুমতি দেন যা সত্যিই বিস্ময়কর।পরে অদৃশ্য ক্ষমতাবলে তিনি বেছে বেছে জুলাই আন্দোলনের প্রকাশ্য বিরোধীতাকারী এবং ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহনকারী সহ সাবেক মন্ত্রী এমপি দের আত্মীয় স্বজনদের বৈদেশীক ভ্রমনের ব্যবস্থা করেন ।সাবেক আলোচিত ডাক টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এর খালাত ভাই জনাব মোঃ মকলেসুর রহমান (বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদ কমিটির পদধারী),সিংড়া উপজেলা মহিলা লীগের সভাপতি কন্যা এবং  প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এর বন্ধু জনাবা শাকিলা বিশ্বাস (বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদ কমিটির পদধারী), জনাব মাসুদুর রহমান (বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদ কমিটির পদধারী) এবং হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া অধিকাংশ কট্টর আওয়ামীপন্থীদের বৈদেশিক ভ্রমন এর আদেশ করেন।শুধু তাই নয় আউট সোর্স এমপ্লয়ী ( আওয়ামী মন্ত্রী এমপি এবং সচিবগনের আত্মীয় স্বজন ) যাদের সংখ্যা প্রায় ৫০০+ তাদের কে তিনি আগলে রেখেছেন পরম মমতায় পক্ষান্তরে যে দুইএকজন আওয়ামী মনভাবের বাহিরে তাদেরকে শাস্তি দিচ্ছেন বদলী করে।  

প্রজেক্ট সহ গুরুত্বপূর্ন পদ গুলোতে বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদ নির্বাহী কমিটির পদধারীদের তিনি পদায়ন করে ফ্যাসিষ্টদের নির্বিঘ্ন বিচরণ নিশ্চিত করেছেন। শুধুমাত্র জাতীয়তাবাদী পেশাজীবী পরিষদে সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে এমন হাতেগোনা কয়েকজনকে বৈদেশিক ভ্রমনে নাম প্রস্তাব করায় জনাব আশরাফুজ্জামান, সভাপতি,টেলিটক এমপ্লয়ীজ ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশন কে ৫জি প্রকল্প থেকে অব্যাহতি দেন অথচ তার মেধাবী নেতৃত্বে  স্থবির টেলিটক ৫জি প্রজেক্ট গতি পায়  এবং  দুর্নিতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান গ্রহন এর ফলে   সর্ব মহলে প্রশংসিত হয়েছিলেন। 
সুযোগের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে টেলিটক বাংলাদেশ লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব নুরুল মাবুদ চৌধুরী সাবেক সচিব আবু হেনা মোর্শেদ জামান ও তৈয়বুর গং কে “স্মার্ট বাংলাদেশের অদম্য অভিযাত্রা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ” বই লিখতে উৎসাহ দিয়ে পাশে ছিলেন আবার জুনায়েদ আহমেদ পলকের আস্থা ভাজন ছিলেন আবার সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম কে তিনি কব্জা করেন এলাকার ছেলে হিসেবে। তাকে দিয়েই শেষ মূহুর্তে এমডি পোষ্ট বাগিয়ে নেন। এই বিরল চরিত্রের অধিকারী্র নিকট বাংলাদেশ রাজনৈতিক পটভূমি পরিবর্তন কোন মানেই রাখেনা।তার অতিরিক্ত আওয়ামী প্রীতি জুলাই আন্দোলনের প্রতি অবজ্ঞার তীব্র প্রদর্শন।

টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড এর কর্মী সংগঠন টেলিটক এমপ্লয়ি ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন গতকাল ৫/১১/২০২৫ একটি স্মারক লিপি টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহোদয় কে প্রদান করে। প্রতিবাদ লিপিতে চুক্তিভিত্তিক সকল নিয়োগ ঘোষণা বাতিল  এবং পদোন্নতি নীতিমালা চুড়ান্ত না করে নিয়োগ ও পদোন্নতি পরীক্ষা সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম স্থগিত রাখার আহবান জানানো হয় এবং গত ৬/১১/২০২৫খ্রিঃ তারিখ বিকাল ৪:৩০ মিনিটে টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহোদয়ের সাথে সাক্ষাৎ করে স্মারক লিপি তে উল্লেখিত বিষয়ে গৃহীত সিদ্ধান্ত সম্বন্ধে জানতে চাওয়া হয়।তিনি বলেন,চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ স্থগিত করা হবে না।

ফ্যাসিস্ট দোসর রেডিসন গ্রুপ কর্তৃক নিয়োগকৃত এমপ্লয়িদের কেনো পুন:বহাল করার তোরজোড় চলছে জানতে চাইলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন,এই সরকারের সময়ে নিরপেক্ষতা থাকবে আর ভোটের পরে তদবিরের কারনে সুষ্ঠ নিয়োগ সম্ভব হবে না। পদোন্নতি সম্পর্কে তার বক্তব্য অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এখন পদোন্নতি   না দিলে ভোটের পরে এই মেধাবীদের(বিপিপি বংগবন্ধু প্রকৌশল পরিষদ) মুল্যায়ন হবে না কারন আগামী সরকারের সময়ে লবিং হবে বেশী। 

উল্লেখ, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের নামে অনিদিষ্ট সংখ্যক পদে লোক নিয়োগের একটা মচ্ছব চালানোর জন্যই পরিকল্পিত ভাবে নিয়োগ দিতে চাইছে এবং আজ্ঞাবহ বিপিপির একনিষ্ঠ কর্মীদের পদোন্নতি যাতে আগামী সরকার বানচাল করতে না পারে তার পাকা ব্যবস্থা করাই ব্যবস্থাপনা পরিচালকের প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব বলে আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে।

১৯ বছর থেকে ছলে বলে কৌশলে টিকে থাকা ফ্যাসিষ্ট বিরোধী মুষ্টিমেয় কর্মীদের বঞ্চিত করার সুযোগ তিনি কিছুতেই হারাতে চান না এবং পদোন্নতি দিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিষ্টদের তিনি এমন অবস্থানে রেখে যেতে চান যাতে তারাই টেলিটকের মূল দায়িত্ব পালন করে ভিন্ন মতের এমপ্লয়ীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। 

চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল এবং পদোন্নতি নীতিমালা চুড়ান্ত না করে পদোন্নতি নেওয়ার ধান্দাবাজি বন্ধ করার জন্য সাধারন এমপ্লয়িরা আহবান জানাচ্ছে।
ফ্যাসিষ্ট প্রেতাত্মাদের পরম আত্মীয় হয়ে উঠা এই মেধাবী বর্ণচোরা কে আওয়ামী অধ্যুষিত টেলিটক থেকে অবিলম্বে অব্যহিত দিয়ে নিরপেক্ষ ব্যক্তি এমডি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া উচিৎ সময়ের প্রয়োজনে। 

জুলাই আন্দোলনে শহীদের রক্তের সাথে প্রতারণা করে বাংলাদেশ মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে না-টেলিটক ফ্যাসিষ্টদের দৌরাত্ম থেকে মুক্তি চায়।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

কোরবানি ঈদ সম্পর্কে যা বললেন মুফতী মুস্তাফিজুর


এমএস.প্রতিদিন ডেস্ক:
শুক্রবার, ১৬ জুলাই, ২০২১, ১১:২০
কোরবানি ঈদ সম্পর্কে যা বললেন মুফতী মুস্তাফিজুর

সংগৃহীত ছবি

বছর ঘুরে আবারো এল পবিত্র ঈদুল আযহা। মুসলিমদের জীবনে ঈদুল ফিতরের মতো আরেকটি আনন্দোৎসব হলো ঈদুল আজহা। এদিন ধনী-গরীব সকল মুসলমানই ঈদগাহে হাজির হয় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দু’রাকাত নামায আদায় করেন। আর সামর্থ্যবান মুমিন বান্দারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য রাসূল সাঃ এর তরিকা অনুযায়ী কুরবানীর পশু আল্লাহর নামে উৎসর্গ করে থাকেন। 

পবিত্র ঈদুল আযহা মুসলমানদের অন্যতম উৎসবের দিন। যার মূল বিষয় হল কুরবানী করা। এটি কুরআন-সুন্নাহর অকাট্যভাবে প্রমাণিত বিধান এবং আল্লাহ ও রাসূলের পক্ষ হতে নির্দেশিত অন্যতম প্রধান ইবাদত।

এই দিনের আনন্দ হল, দশই যিলহজ্ব আল্লাহর মাগফিরাত লাভের আনন্দ এবং ত্যাগের মহিমায় কুরবানী পেশ করা। তাৎপর্যগত দিক থেকে ইসলামী ঈদ আর অন্যান্য ধর্মের পর্ব উৎসবের মাঝে এই পার্থক্য রয়েছে যে, অন্যান্য ধর্মে যেখানে শত বছরের পুরনো কোনো ঘটনা কিংবা বিশেষ কোনো ব্যক্তিত্বকে কেন্দ্র করে বছর বছর উৎসব উদযাপিত হয়। সেখানে ইসলাম নিজেরই সদ্য করা ইবাদতের সৌভাগ্য-আনন্দে উজ্জীবিত হতে বলে। তাই এক মাস সিয়াম সাধনার সৌভাগ্যের আনন্দ উৎসব হল ঈদুল ফিতর।

আর হজ্ব, কুরবানী ও মহান আল্লাহর মেহমানদারী লাভের খুশির উৎসব হচ্ছে ঈদুল আযহা। মনে রাখতে হবে যে, এই কুরবানীর মূল সূত্র যদিও মিল্লতে ইবরাহীমিতে বিদ্যমান ছিল কিন্তু মিল্লাতে ইবরাহীমির ‘সেই’ ঘটনাই আমাদের আনন্দের মৌলিক উৎসব নয়; বরং আমাদের আনন্দের অন্তর্নিহীত কারণ তাই যা উপরোল্লেখিত হয়েছে।

কারণ কুরবানী ইসলামেরই একটি স্বতন্ত্র বিধান এবং শরীয়তে মুহাম্মাদীর শিআর। যুগে যুগে কুরবানী বা প্রিয় বস্তুটি মহান আল্লাহর দরবারে উৎসর্গ করার ইতিহাস সুদীর্ঘ। হযরত আদম আঃ-এর দুই সন্তানের কুরবানীর কথা বিবৃত হয়েছে সূরা মায়েদায়। এই কুরবানীর প্রেক্ষাপট বর্ণিত হয়েছে উত্তম সূত্রে বর্ণিত হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.-এর একটি রেওয়ায়েতে।

হযরত আদম আ.-এর দুজন ছেলে ছিল। হাবিল আর কাবিল। হযরত হাওয়া আ. প্রত্যেকবার এক জোড়া সন্তান প্রসব করতেন। একটি ছেলে অপরটি মেয়ে। এই জমজ ভাইবোনদের বিয়ে ছিল হারাম। তাই তখন এক গর্ভে জন্মলাভ করা ছেলের সাথে ভিন্ন গর্ভে জন্মলাভ করা মেয়ের বিয়ের নিয়মই প্রচলিত ছিল। কাবিলের জমজ বোনটি ছিল সুশ্রী। জমজ হওয়ার কারণে তাকে কাবিল বিয়ে করার নিয়ম না থাকলেও তার  হঠকারিতা ছিল যে, সে তাকে বিয়ে করবেই।

অন্যদিকে, হকদার হওয়ার দাবি ছিল হাবিলের। এই দ্বন্দের ফয়সালা হল এভাবে-প্রত্যেকে আল্লাহর সান্নিধ্যে কিছু কুরবানী করবে। যার কুরবানী কবুল হবে তার দাবিই গ্রহণযোগ্য হবে। হাবিল ও কাবিল উভয়েই কুরবানী পেশ করল। তখনকার দিনে কুরবানী কবুল হওয়ার আলামত ছিল, আকাশ থেকে আগুন নেমে কবুলকৃত কুরবানী খেয়ে ফেলত। যথারীতি আগুন এসে হাবিলের দুম্বাটি খেল, কাবিলের কুরবানী রয়ে গেল । কিন্তু তা মেনে নিতে পারেনি কাবিল। প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে সে হত্যা করে ফেলল তার ভাইকে।

(তাফসীরে ইবনে কাসীর ২/৪৮) সূরা মায়েদার ২৭ থেকে ৩১ আয়াত পর্যন্ত এই ঘটনাটি সংক্ষিপ্তভাবে বিবৃত হয়েছে। যার প্রথম আয়াতটি হল, (তরজমা) আর (হে নবী) আপনি তাদের সামনে আদম আ.-এর দুই ছেলের ঘটনা সঠিকভাবে পাঠ করে শুনিয়ে দিন। যখন উভয়েই এক একটি কুরবানী পেশ করেছিলেন। তাদের মধ্য থেকে একজনের কুরবানী কবুল হল আর অপরজনেরটি কবুল হল না। সেই (অপরজন) বলতে লাগল, আমি নিশ্চয়ই তোমাকে হত্যা করে ফেলব।

সেই (প্রথম জন) বলল, আল্লাহ তাআলা মুত্তাকীদের আমলই কবুল করেন। হযরত আদম আ.-এর পর প্রত্যেক উম্মত বা জাতির মধ্যেই এই মুবারক আমল বিদ্যমান ছিল। আল্লাহ তাআলা বলেন, (তরজমা) আর প্রত্যেক উম্মতের জন্য আমি কুরবানী নির্ধারণ করেছি। যেন তারা আল্লাহর দেওয়া চতুষ্পদ পশুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।

তোমাদের ইলাহ তো এক ইলাহ। অতএব তোমরা তারই অনুগত থাক এবং (হে নবী) আপনি সুসংবাদ দিন বিনীতদের।-সূরা হজ্ব : ৩৪ উল্লেখ্য যে, সকল উম্মতের কুরবানীর নিয়ম এক ছিল না। ইসলামী শরীয়তে যে পদ্ধতিতে কুরবানী করা হয় তাও আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে নির্দেশিত এবং তা মিল্লাতে ইবরাহীমির অংশ।

হযরত ইবরাহীম আ. আল্লাহ তাআলার আদেশে তাঁর প্রিয় পুত্র ইসমাঈলকে কুরবানী দিতে উদ্যত হওয়ার ঘটনা খুবই প্রসিদ্ধ। মূল ঘটনাটি কুরআনে আছে। তবে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেক কিচ্ছা-কাহিনী রচিত হয়েছে, যা ইসরাঈলী রেওয়ায়েতনির্ভর। কুরআনে আল্লাহ তাআলা এই ঘটনা যতটুকু বর্ণনা করেছেন তাই মুমিনের জন্য যথেষ্ট।’

আল্লামা ইবনে কাসীর রাহ. বলেন, অতঃপর এ ব্যাপারে যে সমস্ত আছার বর্ণিত তার অধিকাংশই হচ্ছে ইসরাঈলী। এই সুন্দর ঘটনা, মহান পরীক্ষা ও আল্লাহর পক্ষ হতে বিশাল দুম্বা প্রেরণ সম্পর্কিত ঘটনার জন্য কুরআন মজীদের বর্ণনাই যথেষ্ট। অতএব এই ব্যাপারে ইসরাঈলী রেওয়ায়েত বা অলীক কল্প-কাহিনীতে না গিয়ে কুরআনে বর্ণিত ঘটনার উপরই সন্তুষ্ট হওয়া উচিত।

লেখক: তরুণ আলেমেদ্বীন ও ইসলামী লেখক, ফরিদপুর।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম
Share on Facebook

সর্বশেষ - অপরাধ